বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
বিএনপির রাজশাহী বিভাগীয় গণসমাবেশ ৩ ডিসেম্বর হলেও আজ ১ ডিসেম্বর থেকে অচল হচ্ছে রাজশাহী। আজ থেকে অনির্দিষ্টকালের পরিবহর ধর্মঘটের ডাক দেয়া হয়েছে। নগরীতে চলাচলের অন্যতম বাহন অটোরিক্সা আর ইজিবাইকও নাকি চলবেনা। হোটেল রেস্তরা এমনকি আবাসিক হোটেলও অঘোষিতভাবে বন্ধ থাকবে। কোন পক্ষ এমন বন্ধের কথা স্বীকার না করলেও মুখেমুখে চাউর হয়ে গেছে। এনিয়ে আলোচনা সমালোচনা কম নয়। বেশকটি খাবার হোটেলে কথা বলতে গেলে জানান মালিক সমিতি রয়েছে সেখান থেকে যে নির্দেশনা আসবে সেটা প্রকাশ্যে হোক অপ্রকাশ্যে হোক তা মানতে বাধ্য। আবাসিক হোটেল গুলোর এমন বক্তব্য। রাজশাহীর মেডিকেল পাড়া খ্যাত লক্ষীপুর এলাকার তিনটি হোটেলে যোগাযোগ করা হলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুকরা জানান আমাদের বলে দেয়া হয়েছে হোটেলে রোগী ও তার স্বজনদের কাছে যেন অন্য কেউ না থাকে। বিষয়টা সহজে অনুমেয়। সাধারনের গণপরিবহন বন্ধ থাকলে স্থানীয় হাট বাজারে স্বাভাবিকভাবে এর প্রভাব পড়বে। পণ্য সরবরাহ কমে গেলে দাম বাড়বে। চাপ পড়বে সাধারন ক্রেতাদের। এমনিতে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যেও চাপে চিড়ে চ্যাপটা অবস্থা। অটোচালক মোটর শ্রমিকদের কথা হলো একদিন গাড়ির চাকা না ঘুরলে আমাদেও পেটের চাকা ঘুরেনা। এ কথাটা যাদের বোঝার কথা তারা বোঝেনা। যত কষ্ট হয় আমাদের মত গরীব মানুষের।
এদিকে সমাবেশ ঘিরে বিএনপির প্রচার মিছিল পথসভা হচ্ছে। এসব সভায় বক্তব্য রাখছেন বিএনপির চেয়াারপার্সনের উপদেষ্টা সাবেক মেয়র মিজানুর রহমান মিনু, বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সাবেক মন্ত্রী এ্যাড: রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হারুনার রশিদ এমপি, বিভাগীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক শাহীন শওকত, সাবেক মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল, এ্যাড: শফিকুল হক মিলন, নগর বিএনপির আহবায়ক এ্যাড: এরশাদ আলী ঈশা, জেলা বিএনপির আহবায়ক আবু সাঈদ চাঁদ, নজরুল হুদাসহ নেতৃবৃন্দ। এসব সভায় বিএনপির নেতারা বলছেন যত রকম ষড়যন্ত্র করা হোক সকল বাধা ও চোখ রাঙ্গানিকে উপক্ষো করে সমাবেশ সফল করা হবে। প্রয়োজনে নেতারাই আগে জীবন দেবে।
রাজশাহীর গণসমাবেশ জনসমুদ্রে পরিনত হবে। দেশের বিভিন্ন বিভাগীয় সমাবেশে মানুষের জনশ্রোত দেখে আওয়ামীলীগ আতংকিত হয়ে নিজেদের ক্যাডার বাহিনী ছাড়াও পুলিশকে যথেচ্ছভাবে ব্যবহার করছে। রাজশাহী বিভাগে সরকার নতুন মাত্রায় অত্যাচার, নির্যাতন গায়েবি মামলা দিয়ে বাড়ি বাড়ি পুলিশী হয়রানী স্বীকার হচ্ছে। সকল বাধা পেরিয়ে পায়ে হেটে মানুষ আসবে।
বসেনেই ক্ষমতাসীন দল আওয়ামীলীগ। তারাও বিএনপির অব্যাহত দেশ বিরোধী ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে নগরীর বিভিন্ন থানা এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল সমাবেশ করছে। সমাবেশের প্রধান অতিথি থাকছেন আওয়ামীলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন। থাকছেন নগর সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী কামাল, সেক্রেটারী ডাবলু সরকার, বীর মুক্তিযোদ্ধা নওশের আলী, আহসানুল হক পিন্টু, মীর ইশতিয়াক লিমন, এ্যাড: আসলাম সরকারসহ দলের অঙ্গসংগঠনের নেতৃবন্দ। সেখান থেকে হুশিয়ারী উচ্চারন করে বলা হচ্ছে রাজশাহীতে সমাবেশের নামে বিএনপি কোন বিশৃঙ্খলা করলে তা বরদাস্ত করা হবেনা। যেখানে তারা অনুমতি পাবে সেখনে তারা সমাবেশ করুক। কিন্তু কোন অশালীন কথা, অরাজনৈতিক যেন কথা না বলে। কোন ভাংচুর, জানমালের কোন ক্ষয়ক্ষতি করার কোন বাজে চিন্তা না করে। যদি করে তবে ধরে নেয়া হবে বিএনপি পায়ে পাড়া দিয়ে ঝগড়া বাধাতে চায়। আমাদের নেতাকর্মীদের প্রস্তুত রেখেছি তারা সমুচিত জবাব দেবে।
এদিকে মাদ্রাসা মাঠে গণসমাবেশের অনুমতি জেলা প্রশাসক দিলেও শেষ পর্যন্ত ১২টি শর্তে মিলেছে পুলিশের অনুমতি। পুলিশ সূত্র জানায়, তাদের অনুমতি পেতে হলে ১২টি শর্ত মানতে হবে। যার মধ্যে রয়েছে যানমালের ক্ষতি না করা, বেলাদুটো থেকে পাঁচটার মধ্যে সমাবেশ শেষ করা, সমাবেশ স্থলের বাইরে মাইক না লাগানো, আজানের সময় বন্ধ। এমন সব শর্ত সব বিভাগীয় সমাবেশে দেয়া হয়েছে। এদিকে মাদ্রাসা ময়দান এলাকা ঘুরে দেখাযায় সমাবেশস্থল ঘিরে পুলিশ সিসি ক্যামেরা বসানোর কাজ শুরু করেছে। সমাবশ ঘিরে তাদের মত প্রস্তুতি নিচ্ছে তারা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।