Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাপা চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের দায়িত্ব পালনে বাধা নেই : হাইকোর্ট

রওশন-কাদের একান্ত বৈঠক

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৩০ নভেম্বর, ২০২২, ১২:০০ এএম

জাতীয় পার্টির প্রধান পৃষ্ঠপোষক রওশন এরশাদ ও চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের মধ্যে বিরোধের মেঘ কাটতে শুরু করেছে। বিদেশ থেকে দেশে ফেরা ভাবি রওশন এরশাদের সঙ্গে দেবর জিএম কাদেরের একান্ত বৈঠক হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার গুলশানের ওয়েন্টিন হোটেলে আধা ঘণ্টাব্যাপী এ বৈঠক হয়। ব্যাংকক থেকে চিকিৎসা শেষে দেশে ফেরা রওশন এরশাদ ওই হোটেলেই অবস্থান করছেন।

এদিকে গতকাল জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হিসেবে জিএম কাদেরের দায়িত্ব পালনের ওপর দেয়া নিষেধাজ্ঞা স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট। সেইসঙ্গে নিম্ন আদালতের দেয়া নিষেধাজ্ঞা কেন বাতিল করা হবে না- এই মর্মে রুল জারি করা হয়েছে।

ওয়েস্টিন হোটেলে বৈঠকে রওশন এরশাদ দেবর জিএম কাদেরকে বলেন, ভালোভাবে দল চালাও, পাশে আছি। সব ঠিক হয়ে যাবে। এ সময় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির কো চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা এমপি, পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য শফিকুল ইসলাম সেন্টু।

পরে এমপি আবু হোসেন বাবলা বলেন, এটা দেবর-ভাবির বৈঠক। অত্যন্ত আন্তরিক ও সৌজন্যমূলক কথাবার্তা হয়েছে। রওশন এরশাদের শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নিয়েছেন জিএম কাদের। রওশন এরশাদ জিএম কাদেরকে বলেছেন, ‘ভালোভাবে দল চালাও। তোমার প্রতি আমার দোয়া ও বিশ্বাস আছে। আমি পাশে আছি। সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে’।

রওশন এরশাদের ডাকা কাউন্সিলও আর হবে না বলে জানান বাবলা। তিনি বলেন, বরফ গলে গেছে। দেবর-ভাবির বিভেদ মিটে গেছে। আর বহিষ্কৃতদেরকেও আমরা দলে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করব। রওশন এরশাদের সঙ্গে তার ছেলে সাদ এরশাদ এমপি উপস্থিত ছিলেন।

নিষেধাজ্ঞা হাইকোর্টে স্থগিত : জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হিসেবে গোলাম মোহাম্মদ কাদেরের (জিএম কাদের) দায়িত্ব পালনের ওপর দেয়া নিষেধাজ্ঞা স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট। সেইসঙ্গে নিম্ন আদালতের দেয়া নিষেধাজ্ঞা কেন বাতিল করা হবে না-এই মর্মে রুল জারি করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার বিচারপতি শেখ আবদুল আউয়ালের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। জিএম কাদেরের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট শেখ মুহাম্মদ সিরাজুল হক। আদেশের বিষয়ে তিনি বলেন, গঠনতন্ত্র অনুযায়ী জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হিসেবে জি এম কাদেরের দায়িত্ব পালনে আর কোনো বাধা রইলো না। এ সংক্রান্ত যে নিষেধাজ্ঞা ছিলো সেটি স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে নিষেধাজ্ঞা বাতিলে রুলও জারি করা হয়েছে। তিনি বলেন, রাজনীতি করা মানুষের সাংবিধানিক ও গণতান্ত্রিক অধিকার। কোনো আদালত সেই অধিকার কেড়ে নিতে পারে না।

এর আগে গত ৪ অক্টোবর জাতীয় পার্টির বহিষ্কৃত নেতা এবং দলটির সাবেক এমপি জিয়াউল হক মৃধা চেয়ারম্যান হিসেবে গোলাম মোহাম্মদ কাদেরের দায়িত্ব পালনে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে মামলা করেন। বাদীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ৩১ অক্টোবর ঢাকার প্রথম যুগ্ম জেলা জজ আদালত জি এম কাদেরের দলীয় যাবতীয় কার্যক্রমের ওপর অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আদেশ দেন। পরে জিএম কাদের দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার চেয়ে ২৪ নভেম্বর জেলা জজ আদালতে মিস আপিল করেন। সেটি নামঞ্জুর করেন জেলা জজ আদালত। পরে ওই আদেশের বিরুদ্ধে রিভিশন আবেদন করেন জিএম কাদের। শুনানি শেষে উপরোক্ত আদেশ দেন হাইকোর্ট।

জিয়াউল হক মৃধা মামলার আর্জিতে বলেন, জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা সাবেক প্রেসিডেন্ট হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ২০১৯ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর ইন্তেকাল করেন। পরে বিবাদী জি এম কাদের হাইকোর্ট বিভাগের একটি রিট বিচারাধীন থাকার পরও জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে ওই বছর ২৮ ডিসেম্বর কাউন্সিল করে নিজেকে চেয়ারম্যান ঘোষণা করেন।

গত ৫ মার্চ গাজীপুর মহানগর কমিটির উপদেষ্টা আতাউর রহমান সরকার, সাংগঠনিক সম্পাদক সবুর শিকদার, মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ডা: মো: আজিজকে বহিষ্কার করেন। গত ১৪ সেপ্টেম্বর বাদী মশিউর রহমান রাঙ্গাকে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়। গত ১৭ সেপ্টেম্বর অ্যাডভোকেট জিয়াউল হক মৃধাকেও জাতীয় পার্টি থেকে বহিষ্কার করা হয়, যা অবৈধ। ২০১৯ সালের ২৮ ডিসেম্বরের কাউন্সিলসহ চলতি বছর ১৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বহিষ্কার আদেশ অবৈধ ঘোষণা করতে এবং হাইকোটে বিচারাধীন রিট ১৫০৫১/২০১৯ নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত জাতীয় পার্টির পরবর্তী কাউন্সিল স্থগিত রাখতে মামলায় আদেশ চান জিয়াউল হক মৃধা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: হাইকোর্ট


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ