Inqilab Logo

সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

২০ হাজার মানুষের ভরসা একটি নৌকা

মো. মেরাজ উদ্দিন, শেরপুর থেকে | প্রকাশের সময় : ৩০ নভেম্বর, ২০২২, ১২:০০ এএম

শেরপুর সদর উপজেলার কামারচরের ৬নং চর নামক স্থানে দশআনি নদী পারাপারে একমাত্র মাধ্যম একটি নৌকা। পাশের জেলার জামালপুরের ৪নং চর, ডিগ্রিরচর, আখ্রাবাদসহ মোট ২০ হাজার মানুষের প্রতিনিয়ত ঝুঁকি নিয়ে ওই একটি নৌকা দিয়েই পার হতে হচ্ছে নদী।
জানা যায়, শেরপুর সদর উপজেলার থেকে প্রায় দশ কিলোমিটার পশ্চিম-দক্ষিণে কামারেরচর ইউনিয়ন ও জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলার সীমান্ত ঘেঁষে বুক চিড়ে বয়ে গেছে দশআনী নদী। বিগত ২০ বছর আগে একটি কাঠের সেতু থাকলেও বন্যায় সেটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। প্রায় ২০ বছর থেকে চার গ্রামের ২০ হাজার মানুষের নদী পারাপারে একমাত্র মাধ্যম মাত্র একটি নৌকা। দীর্ঘদিনে একটি সেতু নির্মাণের দাবি থাকলেও সম্ভব হয়নি নানা জটিলতায়।
এদিকে চরাঞ্চলের মাটি উর্বর হওয়া এসব গ্রামে সবজি আবাদে বাম্পার ফলন হয়। কিন্তু নৌকা দিয়ে পণ্যসামগ্রী সহজভাবে বাজারজাত করতে না পারায় ন্যায্য মূল্য প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হয় কৃষকরা। মোটা অঙ্কের লোকসান গুণতে হয় তাদের। এছাড়াও দশআনি নদীর ওপার প্রত্যন্ত হওয়ায়, সেসব গ্রামে গড়ে ওঠেনি ভালো কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ফলে সেসব গ্রামের হাজারো ছেলে-মেয়েরা বাধ্য হয়ে আসতে হয় নদীর এপারে কামারচরে। যেখানে রয়েছে একটি উচ্চ বিদ্যালয়, একটি ডিগ্রি কলেজ ও একটি আলিয়া মাদরাসা। এদিকে নৌকা দিয়ে স্কুল-কলেজে আসতে প্রতিদিন ভোগান্তি পোহাতে হয় শিক্ষার্থীসহ অভিবাবকদের।
কামারেরচর উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আকাশ বলেন, আমরা এই সেতু দিয়ে প্রত্যেক দিন স্কুলে যাই। এ সময় আমাদের বিভিন্ন ধরনের অসুবিধা হয়। অনেক সময় নদীতে বই খাতা পরে ভিজে যায়। স্কুল ৯টায় শুরু হয়। ভয়ে একা নৌকা দিয়ে পার হতে পারি না। স্কুলে পৌঁছাতে দেরি হয়ে যায়।
কৃষক রশিদ মিয়া বলেন, নদীর এপারে অনেক কৃষি পণ্যের আবাদ হয়। হাজার হাজার মণ বেগুন, পাট, গম, ধান নষ্ট হয়। কারণ যোগাযোগ ভালো না থাকায় পণ্য বাজারে তুলতে পারি না। তাই লাভবান হতে পারি না।
৪নং চর হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রধান শিক্ষক শাহ জালাল উদ্দিন জানান, আমি দীর্ঘ ৩৫ বছর ধরে এই স্কুলে শিক্ষাকতা করি। নদী পারাপারের জন্য আমাদের নানা ধরনের অসুবিধা হচ্ছে। দেখা যায় আমরা সময়মত স্কুলে যেতে পারি না। নদী পার হওয়ার জন্য বসে থাকতে হয়। এই ৬নং চরের দশআনি নদীর ওপর একটি ব্রিজ নির্মাণ করা হলে এই এলাকার যোগাযোগ, ব্যবসা ও শিক্ষাব্যবস্থার অনেক পরিবর্তন হবে।
এ বিষয়ে কামারেরচর ইউপি চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান হাবীব জানান, দশআনি নদীতে একটি সেতু নির্মাণ মানুষের প্রাণের দাবি। ইতোমধ্যে সরকার দলীয় হুইপ এবং শেরপুর ১নং আসনের এমপি আতিউর রহমান আতিক বিষয়টি সংসদে উত্থাপন করেছেন। আশা করি দ্রুতই দশআনি নদীতে সেতু নির্মাণ হবে।
এ প্রসঙ্গে শেরপুরের এলজিইডি নির্বাহী প্রকৌশলি মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, দশআনি নদীতে সেতু তৈরির যাবতীয় কাগজপত্র ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন ও অর্থ বরাদ্ধ পেলে সেতুর নির্মাণ শুরু হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ