বিশ্বজুড়ে যখন চরম জ্বালানি সংকট ঠিক তখন আশার আলো জ্বালিয়েছে সিলেট গ্যাস ফিল্ড। বিয়ানীবাজার গ্যাসক্ষেত্রের ১ নম্বর কূপ থেকে জাতীয় সঞ্চালন লাইনে গ্যাস সরবরাহ শুরু হচ্ছে। পরিত্যক্ত থাকার পর গ্যাস সংকটের এই সময়ে দেশীয় কূপ থেকে জাতীয় গ্রিডে গ্যাস আসার সুসংবাদ মিললো। গ্যাস ফিল্ডের পরিত্যক্ত ১ নম্বর কূপ থেকে ৮ থেকে ১০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস প্রতিদিন যোগ হবে জাতীয় গ্রিডে। এখনও পরীক্ষামূলক কার্যক্রম চলছে।
গতকাল সোমবার বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন (বাপেক্স) ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আলী এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, সবকিছু ঠিক আজ মঙ্গলবার থেকে জাতীয় সঞ্চালন লাইনে গ্যাস সরবরাহ করা হবে। তবে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের চূড়ান্ত অনুমোদন পাওয়া সাপেক্ষে জাতীয় গ্রিডে গ্যাস সরবরাহ শুরু হবে। এই কূপ থেকে দৈনিক ৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস জাতীয় সঞ্চালন লাইনে সরবরাহ করা যাবে।
সিলেট গ্যাস ফিল্ড লিমিটেড (এসজিএফএল) সূত্রে জানা গেছে, বিয়ানীবাজার গ্যাস ফিল্ডের ১ নম্বর কূপ থেকে ১৯৯১ সালে গ্যাস তোলা শুরু হয়। ২০১৪ সালে তা বন্ধ হয়ে যায়। ২০১৬ সালে আবার উত্তোলন শুরু হলেও ওই বছরের শেষ দিকে আবারও তা বন্ধ হয়ে যায়। ২০১৭ সালের শুরু থেকেই কূপটি পরিত্যক্ত অবস্থায় ছিল। এরপর বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন (বাপেক্স) ওই কূপে অনুসন্ধান কাজ চালিয়ে গ্যাসের মজুত পায়। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ১০ সেপ্টেম্বর ওই কূপে নতুন করে পুনঃখননকাজ (ওয়ার্ক ওভার) শুরু হয়। কূপে গ্যাস প্রাপ্তি নিশ্চিতের পর গত ১০ নভেম্বর থেকে গ্যাসের চাপ পরীক্ষা শেষে কূপ থেকে দ্রুত জাতীয় সঞ্চালন লাইনে গ্যাস দেয়ার জন্য প্রস্তুত করা হয়। পরিত্যক্ত অবস্থায় থাকা বিয়ানীবাজারের ১ নম্বর কূপ গত সেপ্টেম্বরে খননকাজ শুরু করে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন (বাপেক্স)।
সিলেট গ্যাস ফিল্ড লিমিটেডের (এসজিএফএল) মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) আব্দুল জলিল প্রামাণিক বলেন, গত রোববার ও সোমবার আমরা পরীক্ষামূলক সব কাজ সম্পন্ন করেছি। গ্যাসের চাপ পরীক্ষার (টেস্টিং) কাজ শেষে চূড়ান্ত পর্যায়ে জাতীয় গ্রিডে গ্যাস সরবরাহের জন্য কারিগরি সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। সবকিছু ঠিক থাকলে রবিবার দিবাগত রাত ১২টার পর থেকে জাতীয় সঞ্চালন লাইনে গ্যাস সরবরাহ করা হবে। তবে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের চূড়ান্ত অনুমোদন পাওয়া সাপেক্ষে সোমবার সকাল থেকে জাতীয় গ্রিডে গ্যাস সরবরাহ শুরু হবে। এই কূপ থেকে দৈনিক ৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস জাতীয় সঞ্চালন লাইনে সরবরাহ করা যাবে।
বিয়ানীবাজার গ্যাস ফিল্ডের ১ নম্বর কূপ থেকে ১৯৯১ সালে গ্যাস তোলা শুরু হয়। ২০১৪ সালে তা বন্ধ হয়ে যায়। ২০১৬ সালে আবার উত্তোলন শুরু হলেও ওই বছরের শেষ দিকে আবারও তা বন্ধ হয়ে যায়। ২০১৭ সালের শুরু থেকেই কূপটি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়েছিল। এরপর বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন (বাপেক্স) ওই কূপে অনুসন্ধান কাজ চালিয়ে গ্যাসের মজুত পায়।
এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ১০ সেপ্টেম্বর ওই কূপে নতুন করে পুনঃখনন কাজ (ওয়ার্ক ওভার) শুরু হয়। কূপে গ্যাস প্রাপ্তি নিশ্চিতের পর গত ১০ নভেম্বর থেকে গ্যাসের চাপ পরীক্ষা শেষে কূপ থেকে দ্রুত জাতীয় সঞ্চালন লাইনে গ্যাস দেওয়ার জন্য প্রস্তুত করা হয়। বর্তমানে কূপের তিন হাজার ২৫৪ মিটার গভীরে ৭০ বিলিয়ন ঘনফুটের বেশি গ্যাস মজুত আছে। গ্যাসের চাপ পরীক্ষার পর দেখা গেছে, কূপটি দৈনিক ১০ থেকে ১২ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করতে সক্ষম। তবে কারিগরি বিভিন্ন দিক বিবেচনা করে দৈনিক আট মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা হবে। এতে দৈনিক ১২৫ থেকে ১৩০ ব্যারেল কনডেনসেট গ্যাস পাওয়া যাবে।
বর্তমানে এসজিএফএলের আওতায় পাঁচটি গ্যাসক্ষেত্র আছে। এগুলো হলো হরিপুর গ্যাস ফিল্ড, রশিদপুর গ্যাস ফিল্ড, ছাতক গ্যাস ফিল্ড, কৈলাশটিলা গ্যাস ফিল্ড ও বিয়ানীবাজার গ্যাস ফিল্ড। এরমধ্যে ছাতক গ্যাস ফিল্ড পরিত্যক্ত অবস্থায় আছে। বাকিগুলোর ১২টি কূপ থেকে বর্তমানে প্রতিদিন ৯১ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন করা হয়।