রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
দেশের সর্ববৃহৎ সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার অভ্যন্তরে গড়ে উঠা ব্রিজ ওয়ার্কশপ তথা সেতু কারখানাটি দীর্ঘ আট বছর ধরে বন্ধ রয়েছে। ফলে শ্রমিক-কর্মচারীদের পদচারণা না থাকায় পুরো এলাকা আগাছায় ছেড়ে গেছে। এমতাবস্থায় খোলা আকাশের নিচে পড়ে থাকা হাজার কোটি টাকার মূল্যবান যন্ত্রপাতি গিলে খাচ্ছে মাটি ও আগাছা।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, আসাম-বেঙ্গল রেলওয়েকে ঘিরে ১৮৭০ সালে ১১০ একর জমিতে স্থাপন করা হয় ভারতীয় উপমহাদেশের অন্যতম বৃহৎ সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানা। এদিকে একই সময়ে কারখানাটির অভ্যন্তরে অর্থাৎ উত্তর-পশ্চিমাংশে প্রায় ১৮ একর জমির ওপর গড়ে তোলা হয় ব্রিজ ওয়ার্কশপ তথা সেতু কারখানাটি। মুলতঃ এখানে ব্রডগেজ, মিটারগেজ রেলপথের ব্রিজ এবং রেলপথের পয়েন্টস অ্যান্ড ক্রসিং ও গার্ডার ইয়ার্ড তৈরির জন্যই এই সেতু কারখানাটি গড়ে তোলা হয়েছিল। সম্পূর্ণভাবে আলাদা ব্যবস্থাপনায় একজন নির্বাহী প্রকৌশলীর তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হওয়া এই ব্রিজ কারখানাটি প্রতিষ্ঠার পর থেকে নব্বই দশক পর্যন্ত প্রায় এক হাজার শ্রমিক-কর্মচারী কর্মরত ছিল। কিন্তু ১৯৯১ সালে রেলওয়ের সংকোচন নীতি গ্রহণ করে তৎকালীন সরকার। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৯২ সালে ‘গোল্ডেন হ্যান্ডশেক’ ঘোষণা দিলে ওই সুবিধা নিয়ে অনেক শ্রমিক-কর্মচারী চাকরি ছেড়ে অবসরে যান। পরবর্তীতে মঞ্জুরিকৃত ১২৭টি পদের মধ্যে নিয়মিত অবসরে যেতে যেতে মাত্র ৬ জন শ্রমিক-কর্মচারীতে নেমে আসে। ফলে ২০১৪ সালে এটিকে বন্ধ ঘোষণা করা হয়। বর্তমানে একজন স্টোরকিপার, একজন অফিস সহকারী এবং একজন পরিচ্ছন্নতা কর্মী অর্থাৎ এই তিনজন মিলে সেতু কারখানাটি দেখভাল করছেন। আর দায়িত্বে থাকা সহকারী সেতু প্রকৌশলীর কোন কাজকর্ম না থাকায় তিনি নিয়মিত কর্মস্থলে আসেন না। অপরদিকে কাগজ-কলমে সেতু কারখানাটির নির্বাহী প্রধান হিসেবে প্রকৌশলী মো. আব্দুর রহিম থাকলেও তিনি রেলওয়ের পাকশী বিভাগে কর্মরত রয়েছেন।
সরেজমিনে গতকাল দেখা যায়, কারখানার প্লাটফর্ম শেড তথা নকশাঘরটি তালাবদ্ধ। ভেতরে আবর্জনার স্তুুপ। পাশে থাকা মেশিন শেডটির চিত্রও একই। অর্থাৎ পুরো এলাকায় তিন থেকে পাঁচ ফুট উঁচু আগাছার ঝোপঝাড়। আর খোলা আকাশে মাটির উপর পড়ে আছে অ্যাঙ্গেল, রড, স্কয়ার রড, কভার প্লেট, মিটার ও ব্রডগেজ লাইনের সেতুর স্পেয়ার গার্ডার, তিস্তা ও পাকশী হার্ডিঞ্জ ব্রিজের পরিত্যক্ত লোহা-লক্কড়, রেললাইনের পাত, একটি বিকল স্টিম ক্রেনসহ বিভিন্ন ধরনের লোহার সামগ্রী। এসব দীর্ঘদিন বিক্ষিপ্তভাবে খোলা আকাশের নিচে পড়ে থাকার কারণে মাটির আস্তরে এবং আগাছায় ঢেকে গেছে। এছাড়া অনেক মালামাল সামগ্রী নষ্ট হয়ে গেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কারখানা অবসরপ্রাপ্ত এক উপ-সহকারী প্রকৌশলী জানান, অযত্নে-অবহেলায় পড়ে থাকা এসব মালামালের বর্তমান মূল্য প্রায় হাজার কোটি টাকা। এছাড়া জরাজীর্ণ অফিসঘর এবং বিশাল উচ্চতার শেডের মেঝেতে সারিবদ্ধভাবে পাঁচটি বড় এয়ার কম্প্রেসার মেশিন, তিনটি ওয়েল্ডিং প্লান্ট, উইন্স ক্রাব, তিনটি ডাইস মেশিন, দুটি লেদ মেশিন, বিদ্যুৎচালিত বেল্ড ড্রাইভিং তিনটি, একটি প্লেট কাটিং তথা সেয়ারিং মেশিন, দুটি বড় হেমার মেশিন পরিত্যক্ত অবস্থায় থাকার কারণে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে সৈয়দপুর রেলওয়ে সেতু কারখানার সহকারী সেতু প্রকৌশলী জুয়েল মিঞা জানান, জনবল সঙ্কট ও কাঁচামালের অভাবে প্রায় আট বছর ধরে সেতু কারখানাটি বন্ধ রয়েছে। এছাড়া কারখানার অধিকাংশ মেশিনপত্র মেয়াদোত্তীর্ণ ও নষ্ট হয়ে গেছে। এটিকে নতুনভাবে চালু করতে কয়েক হাজার কোটি টাকা প্রয়োজন। এ ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার চিঠি দেয়া হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত কোন সারা মিলেনি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।