Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আজ ১৮ ডিসেম্বর রাজবাড়ী শত্রুমুক্ত দিবস

| প্রকাশের সময় : ১৮ ডিসেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

নজরুল ইসলাম, রাজবাড়ী থেকে : রাজবাড়ী মূলত রেলওয়ের শহর হিসেবে পরিচিত। রেলের শহরের সুবাদে এখানে ১৫ থেকে ২০ হাজার অবাঙালী বিহারীদের বসবাস ছিল। শহরের নিউ কলোনি, আঠাশ কলোনি, স্টেশন কলোনি ও লোকোশেড কলোনি এলাকায় ছিল তাদের বসবাস। পাকিস্থান আমলে এদের প্রচ- প্রভাব ছিল এই এলাকাতে। পুরো রেলটাই ছিল তখন তাদের দখলে। পাক বাহিনী রাজবাড়ীতে প্রবেশের পর বিহারীরা তাদের সাথে যোগসাজশে নির্বিচারে চালাতে থাকে জ্বালাও-পোড়াও এবং গণহত্যা।
রাজবাড়ীতে বিভিন্ন স্থানে আটটি গ্রুপ মুক্তিযুদ্ধ করতে থাকে। পরে পাংশা ও যশোর থেকে আরও কয়েকটি গ্রুপ এসে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে। এখানে মুক্তিবাহিনী, বিহারী, পাকবাহিনী ও রাজাকারদের সাথে তুমল যুদ্ধ সংঘঠিত হয়। এজন্যই সারাদেশ যখন ১৬ই ডিসেম্বর স্বাধীন হয় অথচ রাজবাড়ী স্বাধীন হয় তারও ২ দিন পর ১৮ ডিসেম্বর।
১৬ ডিসেম্বর পাকবাহিনীরা আত্মসমর্পণ করলেও রাজবাড়ী শহর তখনো বিহারীদের কবল থেকে মুক্ত হয়নি। তারপর একে একে জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে মুক্তিবাহিনী এসে জেলা শহরে সংগঠিত হয়। মো: শহিদ্দুন্নবী আলম, মো: ইলিয়াস মিয়া, মো: সিরাজ আহম্মেদ, মো: আবুল হাসেম বাকাউল, কামরুল হাসান লালী, ফকীর আব্দুর জব্বার, রকিবুল ইসলাম তাদের কমান্ডে মুক্তিযোদ্ধারা তাদের ঘিরে রাখে। এ খবরে বিহারীরা রেল লাইনের পাশে অবস্থান নেয় এবং লোকোশেড থেকে ড্রাই-আইস পর্যন্ত মালগাড়ী দিয়ে ব্যূহ তৈরি করে। মুক্তিযোদ্ধারা বিহারীদের লক্ষ্য করে গুলি বর্ষন করতে থাকলে মালগাড়ির কারণে কোনো ফল হয় না। বিকল্প হিসেবে যশোর থেকে আনা মর্টারের গুলি বর্ষন শুরু করলে বিহারীদের সাথে তুমুল যুদ্ধ হয়। এক পর্যায় বিহারীরা পিছু হঠতে থাকে এবং শহর ছেড়ে পালানোর চেষ্টা করলে হাজার হাজার জনতা ও মুক্তিযোদ্ধাদের  হাতে তারা মারা যায়। অবশেষে ১৮ ডিসেম্বর বিকেলে রাজবাড়ী  শত্রুমুক্ত হয়। উত্তোলিত হয় স্বাধীন বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা। রাজবাড়ী জেলায় ৩৭৯ জন মুক্তিযোদ্ধা বীরত্বের সাথে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন এবং রাজবাড়ীতে বর্তমানে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা রয়েছে ৩৫ জন। রাজবাড়ীর মুক্তিযোদ্ধাদের দাবিÑ অবিলম্বে দেশের সব যুদ্ধাপরাধীকে যেন আইনের আওতায় এনে বিচার করা হয় এবং সর্Ÿোচ্চ শাস্তি ফাঁসির দ-ে দ-িত করা হয়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ