Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কুড়িগ্রাম জেলা পরিষদ নির্বাচনে স্থানীয় সংসদ সদস্যের আচরণবিধি লংঘনের অভিযোগ আ’লীগের

সাড়ে ৪ কোটি টাকার টিআর কাবিটা প্রকল্পর

| প্রকাশের সময় : ১৮ ডিসেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

শফিকুল ইসলাম বেবু, কুড়িগ্রাম থেকে : কুড়িগ্রাম জেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রায় সাড়ে চার কোটি টাকার টিআর ও কাবিটার বরাদ্দ দিয়ে এবং নগদ টাকার লোভ দেখিয়ে ভোটারদের প্রভাবিত করার সুনির্দিষ্ট অভিযোগ উঠেছে কুড়িগ্রাম-১ (নাগেশ^রী ও ভুরুঙ্গামারী) আসনের সংসদ সদস্য এ,কে,এম মোস্তাফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে। এ সংক্রান্ত দু’টি অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করে সহকারি রিটার্নিং অফিসার ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেন বলেন, বিষয়টি তদন্তাধীন আছে। কুড়িগ্রাম জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ২ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। একজন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক এমপি মোঃ জাফর আলী (আনারস মার্কা)। অপরজন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী পনির উদ্দিন আহমেদ (কাপ-পিরিচ মার্কা)। তিনি জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ছিলেন। দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে প্রার্থী হওয়ায় স্থানীয় আওয়ামী লীগ সম্প্রতি তাকে বহিষ্কারের সুপারিশ করে কেন্দ্রে পাঠিয়েছে। এই বিদ্রোহী প্রার্থী আগে জাতীয় পার্টি করায় স্থানীয় সাংসদ তাঁর পক্ষে প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন।  
অনুসন্ধানে জানা যায় সরকারের একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের এ ব্যাপারে  অবহিত করেছেন। তাদের তথ্য মতে কুড়িগ্রাম-১ (নাগেশ^রী ও ভুরুঙ্গামারী) আসনের সংসদ সদস্য এ,কে,এম মোস্তাফিজুর রহমান-এর আগে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন, পৌর নির্বাচন এবং ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে এলাকায় উপস্থিত থেকে আচরণবিধি লংঘন করে নিজের পছন্দের প্রার্থীকে বিজয়ী করতে ভোটারদের প্রভাবিত করার চেষ্টা করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে এ বিষয়ে উপর থেকে চাপ প্রয়োগ করলে তিনি কুড়িগ্রাম শহরস্থ বাসভবনে বসে ভোটারদের ডেকে নির্বাচনী প্রচারণা চালান। জেলা পরিষদ নির্বাচনেও তিনি একইভাবে কর্মকা- পরিচালনা করছেন। বাসায় বসে চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের ডেকে এনে পনির উদ্দিন আহমেদকে ভোট দেয়ার শর্তে নগদ টাকা দিচ্ছেন। দিচ্ছেন টি আর (টেস্ট রিলিফ) ও কাবিটা (কাজের বিনিময়ে টাকা) প্রকল্পের বরাদ্দ দেয়ার প্রতিশ্রুতি।
নাগেশ^রী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) জহুরুল ইসলাম আজাদ ও সাধারণ সম্পাদক কাজী নাজমুল  হুদা লাল স্বাক্ষরিত অভিযোগে বলা হয়, ‘নির্বাচন আচরণবিধি ধারা ২/১৪,৪,২২/২ মোতাবেক জাতীয় সংসদ সদস্য কোনো ভোটারের কাছে ভোট চাওয়া অথবা কোনো ধরনের সুবিধা দেয়ার ক্ষেত্রে বাধ্যবাধকতা থাকা সত্ত্বেও কুড়িগ্রাম-১ (নাগেশ^রী ও ভুরুঙ্গামারী) আসনের সংসদ সদস্য এ,কে,এম মোস্তাফিজুর রহমান ইউপি চেয়ারম্যান-মেম্বারদের টিআর ও কাবিটা বরাদ্দ দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান প্রার্থী পনির উদ্দিন আহমেদের পক্ষে ভোট প্রার্থনা করছেন। তিনি গত ১০দিন থেকে এলাকায় নানা অনুষ্ঠানের নামে জনপ্রতিনিধিদের সাথে গণসংযোগ করছেন। অনুরুপ রিটানিং অফিসার বরাবর আর একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মিনহাজুল ইসলাম আইয়ুব।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন বিভাগের কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম জানান, কুড়িগ্রাম-১(নাগেশ^রী ও ভুরুঙ্গামারী উপজেলায়) আসনে সংসদ সদস্য এ,কে,এম মোস্তাফিজুর রহমানের নামে এক কোটি ১১লাখ টাকার টিআর (টেস্ট রিলিফ) ও কাবিটা (কাজের বিনিময়ে টাকা) প্রকল্পে এক কোটি ১১লাখ টাকা বরাদ্দ আসে। এসব প্রকল্প বাস্তবায়নের সময়সীমা ৩১জানুয়ারী। এখন পর্যন্ত জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে কোন প্রকল্প জমা হয়নি। একই ভাবে ঐ নির্বাচনি এলাকায় উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে আরো প্রায় ২ কোটি টাকা’র প্রকল্প বাস্তবায়িত হবে।
এ ব্যাপারে কুড়িগ্রাম-১ (নাগেশ^রী ও ভুরুঙ্গামারী) আসনের সংসদ সদস্য এ,কে,এম মোস্তাফিজুর রহমান এর ব্যবহৃত ০১৭২০৪৩৭১৯১ নম্বরে শনিবার সকাল থেকে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সময়ে অনেকবার ফোন দিয়েও তাঁকে পাওয়া যায়নি। পরে মোবাইলে ক্ষুদে বার্তা পাঠিয়েও সাড়া মেলেনি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ