পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : খসড়া শিক্ষা আইনে ‘কোচিং বাণিজ্য ও গাইড বইকে’ বৈধতা দেওয়া নিয়ে সমালোচনার মুখে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ জানিয়েছেন, কোচিং বাণিজ্য ও গাইড বই থাকবে না। এটা শিক্ষা আইনেও অন্তর্ভুক্ত হবে। রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে শনিবার ‘ইন্টারঅ্যাকটিভ ডিজিটাল মাদরাসা টেক্সটবুক’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এ কথা জানান।
শিক্ষাকে আরও সহজ ও আনন্দময় করতে ভিডিও-অডিওসহ বিভিন্ন সুবিধাযুক্ত করে ষষ্ঠ শ্রেণির মাদরাসা শিক্ষার্থীদের জন্য চারটি ডিজিটাল পাঠ্য-পুস্তক তৈরি করেছে সরকার। এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পাঠ্যপুস্তকগুলো শিক্ষার্থীদের জন্য উন্মুক্ত হয়েছে। শিক্ষার্থীরা মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের ওয়েবসাইট থেকে বইগুলো বিনামূল্যে ডাউনলোড করে পড়তে পারবে।
মন্ত্রী বলেন, শিক্ষা আইন করতে বারবার বিভিন্নভাবে মতামত নেওয়া হয়েছে। বারবার এতে মত দেন আমাদের শিক্ষক, শিক্ষানুরাগী, জনগণ। আমরা তা গ্রহণ করি। এগুলো নিয়ে আমরা আলোচনা করি কথাবার্তা বলি, আবার নতুন সমস্যা আসে। এমন করতে করতে এটা চূড়ান্ত পর্যায়ে চলে আসছে। আমরা এটা খুব শিঘ্রই ক্যাবিনেটে উত্থাপন করব। এরমধ্যে (আইনের খসড়া) নানা কথা আসছে। আপনারাই কথা দিয়েছেন, না হয় আমরা পাইলাম কই।
সংবাদিকদের উদ্দেশ্যে নাহিদ বলেন, যে কোন একটা কথা যেট্ াদিয়ে স্টোরি তৈরি করা যাবে ওইটারেই পিক আউট করলেন। এমন একটা অবস্থা যেন আমরা মহাভারত অশুদ্ধ করে ফেলেছি। তিনি বলেন, ‘এই দেশে এই গভর্নমেন্ট আসার আগে, আমার আগে কে বলেছে শিক্ষা আইন করতে হবে? আমরাইতো উদ্যোগী, আমি তো ২০১১ সালেই আইন করে ফেলতাম, আমরা তো করিনি। আপনাদের মত নেওয়ার জন্য। এটা নিয়ে এত আলোচনা!’
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমি পরিষ্কার বলে দিচ্ছি- এই দেশে কোচিং বাণিজ্য চলবে না। এই দেশে গাইড বই, নোট বই চলবে না। এই দেশে আমাদের ছেলে-মেয়েদের প্রতারণা করে অর্থ লাভ করার জন্য কেউ কোনো ধরনের পদ্ধতি অনুসরণ করে এগিয়ে যেতে পারবে না। এইটাই আইনে আসবে। নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, ‘এটাও মনে রাখতে হবে, ক্লাসের মধ্যে সব ছাত্র সমানভাবে বুঝে উঠতে পারে না। যারা পিছিয়ে পড়ে তাদের কি করার, তাদেরকেও শিখাইতে হবে। আগে স্যারেরা বেশি কমিটেড ছিলেন, ক্লাসের পর আরও আধঘণ্টা বসিয়ে বুঝিয়েছেন। এখন আমাদের কোটি কোটি ছাত্র। এ বিষয়ে আমরা বলেছি কি করে তাকে সাহায্য দেওয়া যায়? ‘এটাকে কোন ধরনের কোচিং বাণিজ্য হিসেবে বিবেচনা নয়। ওই প্রতিষ্ঠানের প্রধান সংশ্লিষ্ট টিচার এবং অভিভাবকরা বসে ঠিক করবে কীভাবে কিছু শিক্ষার্থীকে অতিরিক্ত ক্লাস করানো যায়। আমার সেটা নিয়ে একটা পথ বের করার চিন্তা করছি। মন্ত্রী বলেন, এটা কি অন্যায় করছি? এখন, এটা ধরে নানা রূপ দিয়ে মনে হচ্ছে কত বড় অপরাপধ করে বসে আছি।
শিক্ষা আইন প্রণয়নে সরকার সংশ্লিষ্টদের মতের বাইরে যাবে না জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ভুল আমরা করব, যখন ধরাইয়া দিবেন ভুল আমরা শোধরাইয়া নেব। কিন্তু আমরা এখনও তো ক্যাবিনেটে উত্থাপনই (শিক্ষা আইনের খসড়া) করলাম না। আমাদের গলায় একটা মার্কা লাগাইয়া দিলেন, আমরা কোচিং বাণিজ্য বৈধ করে দিচ্ছি।
অনুষ্ঠানে মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর একেএম ছায়েফ উল্যা বলেন, প্রচলিত পাঠ্যপুস্তকের বিষয়ব¯ুÍর ডিজিটাল ভার্সন যা অনলাইন বা অফলাইন সুবিধা নিয়ে কম্পিউটার ট্যাব ও অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ফোনে পড়া যায়। এটি একটি ই-লার্নিং ম্যাটেরিয়াল যা শিক্ষার্থীর শ্রেণি, বয়স, চাহিদা ও প্রবণতা বিবেচনা করে প্রণয়ন করা হয়েছে।
বইতে প্রয়োজনীয় শব্দের অর্থ, বাস্তব উদাহরণ, কোন ঘটনার বিবরণ, বাস্তব দৃশ্য, ছবি বা ভিডিও সংযোজন করা হয়েছে জানিয়ে ছায়েফ উল্যা বলেন, ‘সুললিত কণ্ঠে কুরআন মজিদের সূরা ও তেলওয়াত এবং গুরুত্বপূর্ণ আরবি অংশের অডিও সংযুক্ত করা হয়েছে এতে। লিঙ্ক ও হাইপার লিঙ্ক দেওয়ার কারণে মৃত বইকে জীবন্ত করে তোলা হয়েছে। দেশের ৬৪ জেলার ৬৪টি মাদরাসার শিক্ষকদের এ বই নিয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে জানিয়ে মাদরাসা বোর্ডের চেয়ারম্যান বলেন, তারা ফলপ্রসূভাবে শিক্ষার্থীদের এটা শেখাতে পারবেন। সহায়তা পেলে সপ্তম, অষ্টম ও নবম শ্রেণির বই আইডিএমটিতে রূপান্তর করা হবে বলেও জানান প্রফেসর ছায়েফ উল্যা।
ষষ্ঠ শ্রেণির পাঠ্যপুস্তকগুলো হচ্ছে- কুরআন মাজিদ ও তাজবিদ, আল আকাঈদ ওয়াল ফিকহ, আললুগাতুল আরাবিয়্যাতুল ইত্তিসালিয়্যাহ (আরবি প্রথমপত্র) এবং কাওয়াইদুল লুগাতিল আরাবিয়্যাহ (আরবি দ্বিতীয়পত্র)।
বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর এ কে এম ছায়েফ উল্যার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. সোহরাব হোসাইন, বুয়েট কম্পিউটার সাইন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. এম কায়কোবাদ, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক প্রফেসর ড. এস এম ওয়াহিদুজ্জামান, কারিগরি ও মাদরাসা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব এ কে এম জাকির হোসেন ভূঁইয়া, মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. বিল্লাল হোসেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।