Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪, ৩১ বৈশাখ ১৪৩১, ০৫ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

জাইকার অর্থায়নে শাহজালাল বিমানবন্দরে তৃতীয় টার্মিনাল শাহআমানতে স্থাপিত হচ্ছে নতুন রাডার

১৪ হাজার কোটি টাকার টার্মিনাল চালু হলে ২৪ মিলিয়ন যাত্রী আসা যাওয়া করতে পারবে

| প্রকাশের সময় : ১৮ ডিসেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ১৪ হাজার কোটি টাকা। জাপানের উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা জাইকার অর্থায়নে এ প্রকল্পের কাজ শুরু হতে যাচ্ছে। সময়ের পরিবর্তিত চাহিদা পূরণে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের এই থার্ড টার্মিনাল ভবন নির্মাণসহ অন্যান্য অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য জাইকার এ প্রকল্পটির কাজ করতে যাচ্ছে। ২০১৯ সালে থার্ড টার্মিনাল নির্মাণ শেষ হলে বছরে এ বন্দর দিয়ে ২৪ মিলিয়ন যাত্রী আসা-যাওয়া করতে পারবেন। এমনটি জানিয়েছে বিমান মন্ত্রণালয়। অন্যদিকে  জাইকার অর্থায়নে শাহ আমানত বিমানবন্দরের থ্রি-ডি রাডার স্থাপন প্রকল্পটিও  প্রায় শেষ পর্যায়ে। আগামী বছরের ফেব্রুয়ারী মাসে ওই রাডারটি চালু করা কথা রয়েছে। প্রায় ১৮০ কোটি টাকা ব্যয়ে স্থাপিত এ রাডারটির মাধ্যমে শাহ আমানত বিমানবন্দর থেকে নতুন সমুদ্রসীমাসহ আকাশসীমার ২০০ নটিক্যাল মাইল পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব হবে। এ রাডার স্থাপনের ফলে নিরাপদ হবে দেশের আকাশসীমা ও বিমান চলাচল ব্যবস্থা। নতুন সমুদ্রসীমা, কক্সবাজার বিমাবন্দর ও সমুদ্র এলাকার আকাশ সীমা ওই রাডারের মাধ্যমে পর্যবক্ষণ করা সম্ভব হবে বলে জানিয়েছে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় ও সিভিল এভিয়েশন।
বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন ইনকিলাবকে বলেন, শাহজালাল বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণ, অত্যাধুনিক রাডার স্থাপন এখন সময়ে দাবী। সরকারের উন্নয়নের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে আমরা কাজ করছি। থার্ড টার্মিনাল হলে  বছরে প্রায় ২৪ মিলিয়ন যাত্রী এ টার্মিনাল দিয়ে যাতায়াত করতে পারবে।
মন্ত্রী বলেন, আমাদের নতুন সমুদ্রসীমাসহ  শাহআমানত ও কক্সবাজার বিমানবন্দর পর্যবেক্ষণের জন্য জাইকার অর্থায়নে স্থাপন করা হয়েছে একটি অত্যাধুনিক রার্ডার। নতুন বছরের শুরুতেই এটি চালু করা হচ্ছে।
মন্ত্রী বলেন, প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের সেতুবন্ধন রচনা ও আগামী দিনের চাহিদা বিবেচনায় সরকার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর নির্মাণের কাজ শুরু করেছে। ১৩ হাজার ৬৭৫ কোটি টাকার এ প্রকল্পটির সমীক্ষার জন্য জাপানের নিপ্পন কোয়েই কোম্পানীকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।  
 বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশকে একটি অন্যতম এভিয়েশন হাব এবং আকর্ষণীয় পর্যটন গন্তব্য হিসাবে উন্নীত করতে আমরা কাজ করছি। বেসামরিক বিমান পরিবহনে নিরাপদ, দক্ষ ও নির্ভরযোগ্য এভিয়েশন সুবিধাদি প্রদান এবং দেশের পর্যটন আকর্ষণসমূহ বহুমাত্রিকীকরণ ও উন্নত সেবা প্রদানের মাধ্যমে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের আকৃষ্ট করে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন, দারিদ্র্য দূরীকরণ ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিই আমাদের লক্ষ্য।
সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষ জানায়, শাহ আমানত বিমানবন্দরে সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষের কোন রাডার ছিল না। যেটি আছে সেটি এয়ার ফোর্সের। এমনিতে শাহজালাল বিমানবন্দরে স্থাপিত রাডার দিয়ে দেশের আকাশসীমায় উড়োজাহাজ চলাচল পর্যবেক্ষণ করা হয়ে থাকে। বর্তমানে শাহজালাল বিমানবন্দরে যে রাডার আছে তা দিয়ে দেশের আকাশসীমার ৮০ নটিক্যাল মাইল দূরের এবং আকাশে দশ হাজার ফুট ওপরে কোন বস্ত বা এয়ারক্রাফট দৃশ্যমান হয় না। থ্রি-ডি রাডার স্থাপনের ফলে ২০০ নটিক্যাল মাইল দূরের বস্তুও এ রাডারে ধরা পড়বে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, আকাশপথে উড়োজাহাজ চলাচল নির্বিঘœ করতে শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বসানো হচ্ছে অত্যাধুনিক থ্রি-ডি রাডার। আনসার ক্যা¤েপর পাশে বসানো হচ্ছে এই রাডার। ২০১৭ সালের মধ্যে রাডার স্থাপন কাজ শেষ হবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
সিভিল এভিয়েশন উচ্চ পদস্থ এক কর্মকর্তা জানান, শাহ আমানত বিমানবন্দরে আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ বিমান চলাচল আগের চেয়ে বেড়েছে। তাই ঢাকার মতো চট্টগ্রাম বিমান বন্দরকেও আধুনিক রাডার ব্যবস্থাপনায় আনা হচ্ছে।
চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর আধুনিকায়নের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে ১০ বছর মেয়াদি বিভিন্ন পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে; যার আওতায় ২০২৫ সালের মধ্যে বেশকিছু প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে। এর মধ্যে রয়েছে বিমানবন্দরে রানওয়ে সম্প্রসারণ, প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল ভবন ও কার্গো ভবন সম্প্রসারণ এবং বিমানবন্দরে প্যারালাল ট্যাক্সিওয়ে নির্মাণ।
বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) সূত্রে জানা গেছে, শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের রানওয়ে সম্প্রসারণ প্রকল্পের সম্ভাব্য বাস্তবায়নকাল ধরা হয়েছে ২০১৯ সালের জুলাই থেকে ২০২১ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। একইভাবে বিমানবন্দরের প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল ভবন ও কার্গো ভবন সম্প্রসারণ প্রকল্পের সম্ভাব্য বাস্তবায়নকাল ধরা হয়েছে ২০২০ সালের জুলাই থেকে ২০২২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত।
এ প্রসঙ্গে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি মুহাম্মদ ফারুক খান বলেন, শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের রানওয়ে সম্প্রসারণসহ সার্বিক উন্নয়ন পরিকল্পনা এবং এ কার্যক্রমের সর্বশেষ অগ্রগতি বিষয়ে কমিটি অবগত আছে। কমিটির পক্ষ থেকে যত দ্রুত সম্ভব কাজ এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রাডার

৩ ডিসেম্বর, ২০২০

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ