Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

খুলনায় পশুর নদী গর্ভে বিলীন ২০০ মিটার বেড়িবাঁধ ও ১৫টি বাড়ি

খুলনা ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ২৩ নভেম্বর, ২০২২, ৭:০৩ পিএম

দাকোপে পশুর নদীর প্রবল ভাটার টানে আজ বুধবার ভোরে ওয়াপদা বেড়িবাঁধের ২০০ মিটার বাঁধসহ ১৫টি ঘর নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। বেঁড়িবাঁধ ভেঙ্গে লোকালয়ে পানি ঢুকে পড়ায় খলিশা ও পানখালী গ্রামের শতাধিক ঘরবাড়ির মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ভাঙ্গন সংলগ্ন এলাকা থেকে অনেকেই তাদের ঘরবাড়ি রক্ষার্থে ভেঙ্গে তা অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছেন। কৃষকের পাকা আমনের ক্ষেতে পানি ঢুকে পড়ায় তারা চিন্তিত হয়ে পড়েছেন। ভেসে গেছে দুইটি গ্রামের প্রায় অর্ধশত পুকুরের মাছ।

জানা গেছে, পানি উন্নয়ন বোর্ডের ৩১নং পোল্ডারের খুলনার দাকোপ উপজেলা সদর পানখালী ইউনিয়নের পানখালী গ্রামের বেঁড়িবাঁধে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ফাটল দেখা দেয়। তখন এলাকাবাসীর মধ্যে আতংক ছড়িয়ে পড়ে। আজ বুধবার ভোরে ওয়াপদা বেঁড়িবাঁধের প্রায় ২০০ মিটার পশুর নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যায়। এ সময় মানুষের কোন ক্ষয়ক্ষতি না হলেও বাঁধের পাশেই ১৫টি ঘরবাড়ি ও বিভিন্ন স্থাপনা নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্তরা হলেন, তাপস রায় (প্রতিবন্ধ), পরিমল রায়, অনুরূদ্ধ রায়, মহাদেব কুমার রায় ওরফে ছোট মহাদেব, কিংকর রায়, শংকর রায়, মহাদেব রায়, অমল কৃষ্ণ রায়, মলয় রায়, প্রণয় কুমার রায়, জ্যোতিশংকর রায়, প্রভাত রায়। ভাঙ্গন এলাকা থেকে অনেক পরিবার তাদের বসতঘর বাড়ি রক্ষার্থে তা ভেঙ্গে অন্যত্র সরিয়ে নিতে দেখা গেছে। পশুর নদীর পানি লোকালয়ে ঢুকে পড়ায় বড় খলিশা ও পানখালী গ্রামের প্রায় শতাধিক বসতঘর বাড়ি প্লাবিত হয়ে সহস্রাধিক মানুষ পানি বন্দি হয়ে পড়েছেন। এ দুইটি গ্রামে কৃষকের প্রায় হাজার বিঘা পাকা আমনের ক্ষেতে পানি ঢুকে পড়ায় এলাকার শতশত কৃষক হতাশ হয়ে পড়েছেন।

বুধবার দুপুরে এ ভয়াবহ নদী ভাঙ্গন এলাকা পরিদর্শন করেছেন জাতীয় সংসদের হুইপ পঞ্চানন বিশ্বাস এমপি। তিনি এ সময় পাউবোর কর্তৃপক্ষকে নদী ভাঙ্গন রোধ কল্পে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন এবং নদী ভাঙ্গনে ক্ষতিগ্রস্তদের সরকারের পক্ষ থেকে সহায়তা দেয়ার আশ্বাস প্রদান করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন দাকোপ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ানম্যান আলহাজ¦ শেখ আবুল হোসেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিন্টু বিশ্বাস, পানখালী ইউপি চেয়ারম্যান শেখ সাব্বির আহম্মেদ,সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান শেখ আব্দুল কাদের, ইউপি চেয়ারম্যান পঞ্চানন মন্ডল, ইউপি সদস্য শেখ শহিদুল ইসলাম,সাবেক ইউপি সদস্য জ্যোতিশংকর রায়,পাউবো’র প্রধান প্রকৌশলী মোঃ তাহমিদুল ইসলামের নেতৃত্বে পাউবোর তত্ববধায়ক প্রকৌশলী মোঃ শফি উদ্দিন, নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আশরাফুল আলম, উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী সুজয় কর্মকার, সহকারী প্রকৌশলী গোপাল চন্দ্র দত্তভ।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ মেহেদী হাসান জানান, আর মাত্র ৮ থেকে ১০ দিন পর আমন ধান কাটা শুরু হবে। কৃষকের পাকা আমন ধানের ক্ষেতের ভিতরে পানি ঢুকে পড়ায় তারা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন বলে আশংকা করা হচ্ছে। কারণ পানি নেমে যাওয়ার সময় ওই ধান গাছ গুলি নুয়ে পড়ার আশংকা বেশি। সেক্ষেত্রে ধান নষ্ট হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিন্টু বিশ্বাস বলেন,খলিশা গ্রামে নদী ভয়াবহ নদী ভাঙ্গন সম্পর্কিত বিষয়ে তাৎক্ষণিক ভাবে জেলা প্রশাসককে অবগতি করেছি। এ ছাড়া নদী ভাঙ্গন স্থানে দ্রুত যুগোপযোগী টেকসই বাঁধ নির্মাণের জন্য পাউবো’র উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বলা হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ