রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
মাদারীপুর জেলা সংবাদদাতা : অস্ত্রের মুখে দমে যায়নি, বরং বুকের তাজা রক্তে লিখেছে একটি নাম ‘বাংলাদেশ’। সেই রক্তের দাগ শুকিয়ে গেলেও আজ আর কেউ খোঁজ রাখে না সেসব শহীদ মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবারগুলোকে। মুক্তিযুদ্ধে মাদারীপুরে সম্মুখযুদ্ধে নিহত হয় ৪৩ জন। স্বাধীনতার এতো বছরেও মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ে তাদের নাম তালিকাভুক্ত হয়নি। বছরে দিবস পালনের নামে এক দু’বার সৌজন্য সাক্ষাৎ করে সরকারি কর্মকর্তারা। এতে ক্ষব্ধ শহীদ পরিবারের স্বজনরা। তারা চান, রাষ্ট্রীয় মর্যাদা। তাদের সাথে একমত মুক্তিযোদ্ধারাও। শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সাথে আলাপ করে জানা যায়, দেশ মাতৃকার টানে বসে থাকতে পারেনি মহসীন মাস্টার। ঝাঁপিয়ে পড়েছে শত্রুর প্রাণহরণের জন্যে। তবে বেশি দিন শক্রকে খতম করতে পারেনি। যুদ্ধের মাত্র আড়াই মাসের মাথায় ১৫ জুন গোপালগঞ্জের ‘দিগনগর’ এলাকায় সম্মুখ যুদ্ধে প্রাণ হারায় মহসীন মাস্টার। তিনিই মাদারীপুর জেলার প্রথম শহীদ মুক্তিযোদ্ধা। তবে এতো বছরেও রাষ্ট্রীয় স্বাকৃতি পায়নি মহসীন মাস্টারের পরিবার। এক সময়ে প্রতি মাসে দু’হাজার টাকা আর্থিক অনুদান দিলেও তিন যুগ আগে তা বন্ধ হয়ে যায়। এখন শুধু বছরে ‘স্বাধীনতা আর বিজয়’ দিবসে সৌজন্য সাক্ষাৎ করে জেলা প্রশাসন। এখন আর্থিক অভাব-অনাটনে চলে মহসীন মাস্টারের পরিবার। এই বীরের পরিবারের একটিই দাবি, তার পিতাকে রাস্ট্রীয়ভাবে তালিকাভুক্ত করা হোক। শহীদ মহসীন মাস্টারের ছেলে মজিবর রহমান জানান, ‘এক সময়ে আমরা দুই হাজার করে সরকারি অনুদান পেতাম। কিন্তু এখন প্রায় আড়াই যুগ ধরে আমরা কোন আর্থিক সহযোগিতা পাই না। মুক্তিযোদ্ধরা যদি সরকারি সহযোগিতা পেতে পারে, তাহলে আমরা কেন শহীদ পরিবার হিসেবে সরকারি সুযোগ-সুবিধা পাবো না। আমাদের সরকারের কাছে একটিই দাবি, অন্তত রাষ্ট্রীয়ভাবে আমাদের শহীদ পরিবার হিসেবে স্বাকৃতি দেয়া হোক।’ শুধু শহীদ মহসীন মাস্টারের পরিবারই নয়, মাদারীপুরে সম্মুখ যুদ্ধে আরো নিহত হয় ৪৩ জন মুক্তিযুদ্ধা। তাদেরও মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয় থেকে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দেয়া হয়নি। ফলে এসব পরিবার অনেকটা হতাশ। এসব পরিবারের দাবি, মুক্তিযোদ্ধাদের ন্যায় তাদেরও রাষ্ট্রীয় সকল সুযোগ-সুবিধা দেয়ার। মাদারীপুরের সমাদ্দারের সম্মুখ যুদ্ধে নিহত শহীদ সরোয়ার হোসেন বাচ্চুর ছোট চাচা মুক্তিযোদ্ধা হারুন অর রশিদ জানান, ‘আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছি নিজের দেশকে শক্রমুক্ত করার জন্যে। কোন আর্থিক অনুদান পাওয়ার জন্যে নয়। তবে রাষ্ট্র তা স্বীকার করলে আমাদের বুকটা ভরে যায়। আমরা দাবি করবো, আমাদের কবরগুলো সারাদেশে সরকারিভাবে একইভাবে একই ডিজাইনে করতে এবং শহীদ পরিবারগুলোকে রাষ্ট্রীয় স্বাকৃতি দেয়।’ শহীদ মুক্তিযুদ্ধাদের নামের তালিকা করে রাষ্ট্রীয় স্বাকৃতি দেয়ার সাথে একমত মাদারীপুর জেলা মুক্তিযোদ্ধা ইউনিট। এই সদর উপজেলা ইউনিট কমান্ডার আব্দুল খালেক দাবি করেন, সেনা সদস্যদের হাতে নিহত অন্য গণশহীদেরও তালিকা করার।’ আর জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার শাহাজান হাওলাদার জানান, জেলায় ৭৫ জন শহীদ মুক্তিযোদ্ধার নাম থাকলেও যাচাই-বাছাই করে ৪৩ জনের নাম মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। অচিরেই পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশ করা হবে। তখন আমরা শহীদ স্মৃতিস্তম্ভে তাদের নামের তালিকা প্রকাশ করতে পারবো।’ যাদের রক্তের বিনিময় এদেশ স্বাধীন হয়েছে তাদের সম্মানে এসব শহীদ পরিবারকে সহযোগিতার দাবি মাদারীপুরবাসীর।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।