Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সরকারের অপশাসনে ব্যবসায়ীরা খারাপ সময় পার করছে

আলোচনা সভায় মির্জা ফখরুল

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২২ নভেম্বর, ২০২২, ১২:০০ এএম

সরকারের অপশাসনে ব্যবসায়ীরা খুব খারাপ সময় পার করছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, প্রত্যেক বড় বড় ব্যবসায়ী একটা কথা বলছেন, আমরা খুব খারাপ সময়ে মধ্যে আছি। আমাদের ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, কারখানা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। আমাদের এখন এমন অবস্থা হয়েছে যে, আমরা আমাদের শ্রমিকদের যে মজুরি দেবো সেই মজুরির টাকা পর্যন্ত আমাদের কাছে থাকছে না।
গতকাল সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ ছাত্র ফোরাম ও উত্তরবঙ্গ ছাত্র ফোরামের যৌথ উদ্যোগে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৫৮তম জন্মদিন উপলক্ষ্যে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধের কারণে নাকি এটা হচ্ছে। হয়তবা কিছুটা আছে। কিন্তু শুরুটা করেছো তুমি অনেক আগের থেকে। দেশের সমস্ত সম্পদ লুট করছো, ১০ বছরের ৮৬ লাখ কোটি টাকা পাচার করেছ। গত এক বছরেই ৭৮ হাজার কোটি টাকা পাচার করেছ। যে দেশের অর্থনীতিতে সরকারের লোকেরা পুরো সম্পদ লুট করে পাচার করে নিয়ে যায় সেই দেশের অর্থনীতি কি থাকতে পারে।
তিনি বলেন, যখন সঙ্কট আছে সেই সঙ্কটকে মোকাবিলা করার জন্য তখন তার যে অর্থনীতি, যে রিজার্ভ থাকে সেটা দিয়ে কাটিয়ে উঠার চেষ্টা করে। ব্যবসায়ীরা বলছেন এই সময়ে যদি আমরা প্রণোদনা পেতাম, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সুবিধা পেতাম তাহলে হয়ত আমরা দাঁড়িয়ে থাকতে পারতাম।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ব্যাংকগুলোতে এলসি খোলা যায় না। কারণ তাদের ডলার নেই, ডলার দিতে পারছে না। রিজার্ভের টাকা তো লোপাট করে ফেলেছে আগে থেকেই এবং এতো বেশি লোপাট করেছেন যে, নিজেই ডিফেন্সিভ হয়ে বলছেন, না আমরা রিজার্ভ চিবিয়ে খাইনি। আপনারা চিপিয়ে খাননি আমরা জানি, আপনারা গিলে ফেলেছেন এবং সেগুলো আবার পাচার করে দিয়েছেন, এখানে নেই তো। প্রমাণিত সত্য। এতো কথা বলার আমার দরকার নেই। আপনি সাধারণ মানুষের কাছে যান, রিকশা শ্রমিকের কাছে যান, হকারের কাছে যান সেই বলবে যে, এই সরকার চোর।
এ অবস্থা থেকে উত্তরণে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, মানুষ জেগে উঠেছে। মানুষ কিন্তু পিছিয়ে নেই। প্রত্যেকটা সমাবেশে আমাকে অনুপ্রাণিত করেছে যে, এখন আরেকটা মুক্তিযুদ্ধ সেই যুদ্ধের মধ্য দিয়ে আমাদেরকে এদের পরাজিত করতে হবে।
বিচারকদের ন্যায় বিচার করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, মুন্সীগঞ্জে আমদের নেতা শহীদুল ইসলাম শাওনকে মেরে ফেলেছিল। উল্টো আমাদের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়েছে, আমাদের কেন্দ্রীয় নেতা কামরুজ্জামান রতনকে একটা মিথ্যা মামলায় তিনদিনের রিমান্ড নিয়েছে। এদের কী বিবেকও কাজ করে না। আমি বিচার বিভাগকে বলতে চাই, বিচারকদের প্রতি সম্মান রেখে বলতে চাই, দয়া করে ন্যায় বিচার করুন। কারণ এদেশে বহু প্রমাণ আছে, বিচারপতি তোমার বিচার করবে যারা আজ জেগেছে সেই জনতা। সুতরাং কোনোটাই পার পাবেন না।
সরকারের উদ্দেশ্যে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমি আগেই বলেছি, এখনো সময় আছে, এখনো বলছি যে, সরে দাঁড়ান, নিরাপদে সরে দাঁড়ান। তা না হলে জনগণের মধ্যে যে উত্তাল তরঙ্গ সৃষ্টি হয়েছে সুনামির মতো তাদেরকে ভাসিয়ে নিয়ে যাবে এবং এর নেতৃত্বে আছেন আমাদের তারেক রহমান তারুণ্যের প্রতীক।
উত্তরবঙ্গ ছাত্র ফোরামের উপদেষ্টা আমিরুল ইসলাম খান আলিমের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের সদস্য সচিব কাদের গনি চৌধুরী, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক নাজমুল হাসান, ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ফজলুর রহমান থোকন, ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু আফসার মোহাম্মদ ইয়াহিয়া প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

জঙ্গি পালিয়ে যাওয়ার ঘটনা কাদেরের খেলার অংশ কি-না প্রশ্ন রিজভীর
ঢাকার নিম্ন আদালত থেকে মৃত্যুদণ্ড পাওয়া আসামি জেএমবির দুই সদস্য পালিয়ে যাওয়ার ঘটনা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের খেলার অংশ কিনা এমন প্রশ্ন রেখেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, রোববারের ঘটনা নাটক কি-না আমরা জানি না। তবে তাদের (আওয়ামী লীগ) লোকের মুখে নাটকের কথা শুনেছি। ওইদিন আদালতপাড়ায় যে ঘটনা ঘটেছে, এটা নাটক কি-না তা জনগণের মনে প্রশ্ন জেগেছে। একজন জঙ্গি যার হাতে হাত করা, পায়ে বেরিপড়া সে মোটরসাইকেলে চড়ে পালিয়ে গেল এগুলো মানুষ বিভিন্নভাবে দেখছে। এটাও তো ওবায়দুল কাদেরের খেলার অংশ হতে পারে। ১০ ডিসেম্বর বিএনপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে বিএনপি›র নেতাকর্মীদের বাড়িতে অভিযান হবে কিনা? নির্যাতন হবে কিনা? এই ঘটনা নাটক বা তামাসা কিনা এটা কিন্তু তাদের ঊর্ধ্বতন নেতাকর্মীদের বক্তব্যে প্রমাণিত হচ্ছে।
গতকাল সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৫৮তম জন্মদিন উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ ছাত্র ফোরাম ও উত্তরবঙ্গ ছাত্র ফোরাম এর উদ্যোগে আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, একটি লাশের কাফন পড়াতে না পড়াতেই আরেকটি লাশ হচ্ছে। একটি কবর খনন সম্পূর্ণ হতে না হতেই আরেকটি কবর খনন করতে হচ্ছে। এরকম একটি দুঃসময়ে তারেক রহমানের ৫৮ তম জন্মদিন। এই দিনটি জাঁকজমকপূর্ণভাবে পালন করা যাবে না এই নির্দেশনা তিনি (তারেক রহমান) লন্ডন থেকে জানিয়েছে। এটাই তো একজন দেশ নেতার দৃষ্টিসীমা।
বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, এক ভয়ঙ্কর দুঃসময়ের মধ্যে আছে বাংলাদেশের মানুষ। যারা জননন্দিত দেশের মানুষের জন্য কাজ করেন, কথা বলেন তারা কারাগারে। আর গুন্ডা-পান্ডারা বাহিরে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। তাদের কারণে গোটা রাষ্ট্রের মানুষ ভয়ে আছে।
রিজভী বলেন, গণতন্ত্রের ন্যূনতম জায়গা এখন নেই, সেখানে কর্তৃত্ববাদ আসন পেতে বসেছে। গণতন্ত্রের মা বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি হচ্ছে না এতে প্রমাণিত তিনি গণতন্ত্রের পক্ষে আছেন। দেশনায়ক তারেক রহমান দেশে আসতে পারছেন না, বিদেশে থাকা অবস্থায় তার নামে মিথ্যা মামলা ও গ্রেফতারি পরানো জারি করছে এই কর্তৃত্ববাদী সরকার, তাদের ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার জন্য এগুলো করছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মির্জা ফখরুল

২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ