রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
অভয়নগরে নওয়াপাড়া বন্দরে সিন্ডিকেটের কবলে কয়লার দর। দফায় দফায় কয়লার মূল্য বাড়ায় লোকসানের আশংকায় ইটভাটার মালিকরা উৎপাদন বন্ধ রেখেছে।
জানা যায়, এ উপজেলার নওয়াপাড়া বন্দর থেকে প্রায় ২৭টি জেলার ইটভাটায় কয়লা যায়। তবে চলতি মৌসুমে প্রায় সকল ইটভাটা বন্ধ রয়েছে। গত বছর কয়লার বাজার দর ছিল প্রতি টন ১৫ হাজার টাকা। পরে বেড়ে ১৮ থেকে ১৯ হাজার টাকা টনে বিক্রি হয়। চলতি বছরের অক্টোবর মাস হতে এ দরকে ছাড়িয়ে বর্তমানে ইন্দোনেশিয়ার সুপার কয়লা ২২ হাজার থেকে ২৯ হাজার টাকা প্রতি টন বিক্রি হচ্ছে। আর ঘন ঘন দর বৃদ্ধির কারণে ইট উৎপাদনে যাচ্ছে না ইটভাটা মালিকরা। এতে কর্মহীন হয়েছে ভাটা শ্রমিকরা। তবে কয়লার মূল্য বৃদ্ধির প্রভাব পড়েছে ইটের ওপর। সব ধরনের ইটে প্রতি হাজারে ২ থেকে ৪ হাজার টাকা মূল্য বৃদ্ধি করা হয়েছে। ফলে স্থানীয় আবাসন খাতসহ উন্নয়ন প্রকল্প কাজের ঠিকাদাররাও বিপাকে পড়েছেন। ভাটা মালিকদের অভিযোগ, কয়লার বাজার সিন্ডিকেটের কবলে পড়ে দফায় দফায় দাম বাড়ানো হচ্ছে। ইন্দোনেশিয়া, ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে আমদানি করা কয়লার দাম সিন্ডিকেটের মাধ্যমে নির্ধারণ করা হচ্ছে। তাই বিনিয়োগ ঝুঁকির আশংকায় ইট উৎপাদনের যাচ্ছেন না তারা।
এদিকে, ইটভাটার সাথে জড়িত শ্রমিকরা কর্মহীন হয়ে কষ্টে দিনাতিপাত করছেন। গুটি কয়েকটি ভাটা চালু করলেও কোন সুফল পাচ্ছেন না শ্রমিকরা। তাদের বেতন তুলতে হিমসিম খাচ্ছেন। অনেকে অগ্রিম শ্রম বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করছেন। কবে কাজ শুরু হবে কেউ জানে না। একাধিক শ্রমিক জানায়, শীত মৌসুমের শুরুতেই ইট উৎপাদনে যায় ভাটা মালিকেরা। ইটভাটার পোড়াই মিস্ত্রি রবিউল ইসলাম জানান, কয়লার দাম অনেক। তাই মহাজন ইটভাটায় আগুন দেয়নি। আমরা বাড়িতে বসে আছি। কয়লার দাম কমলে আমাদের কাজে নেবে। প্রতি বছর সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে ইট তৈরির কাজ শুরু হয়। অক্টোবর থেকে ইট পোড়ানো শুরু হয়। তবে এ বছল এখনও শুরুই হয়নি। তবে দ্রুত কাজ শুরু হবে বলে ইটভাটা মালিকরা আশ্বাস্ত করেছেন।
ভাটা মালিক নূর ইসলাম বলেন, কয়লার বাজার সিন্ডিকেটের কবলে পড়ে দফায় দফায় দাম বাড়ানো হচ্ছে। কয়লার দাম গতবারের তুলনায় এবার দিগুন। কাঠ দিয়ে ইট পোড়াতে হবে। তা না হলে লোকসান কাটাতে পারবো না।
ইট প্রস্তুতকারক যশোর জেলা শাখার সহ-সভাপতি সিটি টু ব্রিকসের মালিক নাজির উদ্দিন বলেন, কয়লার মূল্য বৃদ্ধির কারণে এবার ভাটাতে ইট উৎপাদন করতে পারচ্ছি না। তবে বেচেঁ থাকার তাগিদে লোকসান হলেও অল্প কয়লা কিনে একটি ভাটায় আগুন দিয়েছি। এতে ইটভাটা মালিকসহ সকলেই আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন। তবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে কথা চলছে সবুজ সংকেত পেলেই উৎপাদনে যাবেন ভাটা মালিকরা।
এ বিষয়টি নিয়ে সরকার গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আবু সাইদ সরকার বলেন, যদি আমাদের কাছ থেকে কয়লা নেন। দাম পড়বে ২৯ হাজার টাকা। তাছাড়া আমাদের সব ডিও (কয়লা) ক্ষুদ্র পার্টির কাছে বিক্রয় করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে কম দরে কিনতে পারেন।
এ ব্যাপারে নওয়াপাড়া নদীবন্দরের সহকারী পরিচালক মো. মাসুদ পারভেজ বলেন, কত টন কয়লা এ বন্দরে আমদানী হয়েছে, আমার জানা নেই। তবে আমদানীকারকেরা বলতে পারবেন। নওয়াপাড়া সার, সিমেন্ট, খাদ্য শস্য ও কয়লা আমদানীকারক ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও বাংলাদেশ ফার্টিলাইজার অ্যাসোসিয়েশন এর সিনিয়র সহ সভাপতি শাহ জালাল হোসেন বলেন, সারাদেশে ৩০ লাখ টন কয়লা আমদানী করা হয়ে থাকে। এ নওয়াপাড়া বন্দরে ১৭ লাখ টন কয়লা আমদানী করে ২৭টি জেলায় বিক্রয় করা হয়। এবার এলসি তেমন না হওয়ায় বিপাকে আমদানীকারকেরা। বর্তমানে ৬ থেকে ৭ লাখ টন কয়লা আমদানী করেছে কয়েকটি প্রতিষ্ঠান। ইতোমধ্যে ২২ হাজার টাকার কয়লা ২৯ হাজার বিক্রয় করা হচ্ছে। যে কারণে ইট মালিকেরা বিপাকে আছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।