Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জড়িতদের শাস্তি দাবিতে জেলায় জেলায় বিক্ষোভ মিছিল

বাঞ্ছারামপুরে ছাত্রদল নেতা নিহত

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২১ নভেম্বর, ২০২২, ১২:০০ এএম

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরে পুলিশের সংঘর্ষে ছাত্রদল নেতা নিহত হওয়ার প্রতিবাদ ও এ ঘটনায় জড়িত পুলিশ সদস্যদের শাস্তি দাবিতে ময়মনসিংহ, ফেনী, ও কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রদল বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে। এরমধ্যে ফেনী মিছিলে লাঠিচার্জ ও পাঁচজনকে আটক করেছে পুলিশ। এতে বেশ কয়েকজন ছাত্রদল নেতাকর্মী আহত হন। আমাদের সংবাদদাতাদের পাঠানো তথ্যে প্রতিবেদন।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সংবাদদাতা জানান, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরে পুলিশের সংঘর্ষে ছাত্রদল নেতা নিহত হওয়ার প্রতিবাদ ও ঘটনায় জড়িত পুলিশ সদস্যদের শাস্তি দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে জেলা ছাত্রদল। গতকাল রোববার সকালে জেলা ছাত্রদলের উদ্যোগে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের শিমরাইল কান্দি থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিলটি শহেরর টি. এ রোড প্রধান সড়কে আসলে পুলিশ তাতে বাধা দেয়। পরে নেতাকর্মীরা সড়কেই বিক্ষোভ সমাবেশ করে। এ সময় জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক ফুজায়েল চৌধুরীর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, জেলা বিএনপির সাবেক সভাপিত হাফিজুর রহমান মোল্লা কচি, সাবেক সাধারণ সম্পাদক জহিরুল হক খোকন, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম সিরাজ প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, সরকার হত্যা, গুম, খুন করে মানুষকে দাবিয়ে রাখার ব্যর্থ চেষ্টা করছে। এ সরকারকে টিকিয়ে রাখতে যারা অন্যায়ভাবে গুলি চালিয়ে মানুষ হত্যা করছে তাদের এই সরকার বিচার না করলে বিএনপি সরকার গঠন করলে তাদের বিচারের আওতায় আনা হবে। এছাড়াও বক্তারা বাঞ্ছারামপুরে শান্তিপূর্ণভাবে লিফলেট বিতরণকালে গুলি করে ছাত্রদলের সোনারামপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সহ-সভাপতি নয়নকে হত্যার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে অতি উৎসাহী পুলিশ কর্মকর্তাদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার ও বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান। বক্তারা আরো বলেন, মানুষ হত্যা করে আর গাড়ি বন্ধ রেখে বিএনপির কুমিল্লার বিভাগীয় সমাবেশ ঠেকানো যাবে না।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোল্লা মো. শাহীন বলেনৈ, বিনা অনুমতিতে লিফলেট বিতরণের সময় সৃষ্ট পরিস্থিতিতে নেতাকর্মীরা পুলিশের ওপর হামলা চালিয়ে অস্ত্র ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে। এ ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকে মামলা হয়েছে। নয়ন কিভাবে নিহত হয়েছে তার তদন্ত চলছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে তার মৃত্যুর রহস্য জানা যাবে।

এদিকে পুলিশের অস্ত্র ছিনিয়ে নেয়ার অভিযোগে বাঞ্ছারামপুর থানার উপপরিদর্শক আফজাল হোসেন খান বাদী হয়ে উপজেলা যুবদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মো. রফিকুল ইসলামসহ ১৭ জনকে এজহারনামীয় করে অজ্ঞাত এক থেকে ১৫০ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে। নবীনগর পুলিশের সার্কেল সিরাজুল ইসলাম বলেন, হামলায় পুলিশের ৬ সদস্য আহত হয়েছেন। এখন পর্যন্ত ২ জনকে আটক করা হয়েছে।

অপরদিকে নিহত ছাত্রদলের সহ-সভাপতি নয়নের বাড়িতে চলছে শোকে মাতম। ভোর থেকে নয়নের বাড়িতে এলাকাবাসী ও স্বজনসহ দলীয় নেতা-কর্মীরা ভিড় করছে। পরিবার ও দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ঢাকায় পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে নিহত নয়নের প্রথম নামাজে জানাযা অনুষ্ঠিত হবে। পরে তার গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্চারামপুর উপজেলার সোনরামপুর ইউনিয়নের শিবপুর গ্রামে ২য় জানাযা শেষে স্থানীয় করবস্থানে তাকে দাফন করার কথা রয়েছে।

ময়মনসিংহ ব্যুরো জানায়, ছাত্রদল নেতা নয়ন হত্যার প্রতিবাদে ময়মনসিংহে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে ছাত্রদল। গতকাল রোববার বিকেলে নগরীর সানকিপাড়া এলাকা থেকে এই বিক্ষোভ মিছিলটি বের হয়ে হরিকিশোর রায় রোডস্থ দলীয় কার্যালয়ে শেষ হয়। মিছিলের নেতৃত্ব দেন আনন্দমোহন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ ছাত্রদলের সাবেক সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক রাকিব হোসেন। এতে ছাত্রদলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী অংশগ্রহণ করে।

মিছিল শেষে এক সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে নেতৃবৃন্দ বলেন, বিএনপির আন্দোলনের তোপে দিশেহারা হয়ে পড়েছে সরকার। এখন তারা ক্ষমতা ধরে রাখতে নেতাকর্মীদের উপর দমন-নিপিড় চালিয়ে হত্যাযজ্ঞে মেতে উঠেছে। কিন্তু ছাত্রদল নেতাকর্মীরা মৃত্যুভয় উপেক্ষা করে আন্দোলনের মাঠে থাকতে অঙ্গিকারবদ্ধ।
ইবি সংবাদদাতা জানান, পুলিশের গুলিতে নিহত ব্রাহ্মনবাড়ীয়া জেলার সোনারামপুর ইউনিয়নের ছাত্রদল নেতা নয়ন মিয়াকে হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) শাখা ছাত্রদল। গতকাল রোববার বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন শেখ পাড়া বাজার থেকে মিছিলটি শুরু হয়। এসময় তারা বেগম খালেদা জিয়ার শর্তহীন মুক্তির দাবি করেন।

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সাহেদ আহম্মেদ ও সদস্য সচিব মাসুদ রুমী মিথুনের নেতৃত্বে উপস্থিত ছিলেন সাবেক যুগ্ম-সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম, যুগ্ম-আহ্বায়ক আনোয়ার পারভেজ, আহসান হাবীব, রোকনউদ্দীন, সোলায়মান চৌধুরী, উল্লাশ মাহমুদ, আহ্বায়ক কমিটির সদস্য রাফিজ আহমেদ, নুরউদ্দীন, তরিকুল ইসলাম সৌরভ প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।

এছাড়া ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরে বিএনপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে ছাত্রদল নেতা নিহত হওয়ার প্রতিবাদে ফেনীতে ছাত্রদলের মিছিলে লাঠিচার্জ করেছে পুলিশ। এতে বেশ কয়েকজন ছাত্রদল নেতাকর্মী আহত হন। গতকাল রোববার বিকেলে শহরের শহীদ শহীদুল্লা কায়সার সড়কের গ্রিন টাওয়ারের সামনে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় পাঁচজনকে আটক করা হয়েছে।

ফেনী জেলা ছাত্রদল সাধারণ সম্পাদক মোরশেদ আলম মিলন জানান, গ্রিন টাওয়ারের সামনে থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিলটি শান্তিপূর্ণভাবে শহীদ শহীদুল্লা কায়সার সড়ক প্রদক্ষিণ করে ইসলামপুর রোডে প্রবেশ করে। এ সময় পেছন থেকে পুলিশ লাঠিচার্জ করে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। একপর্যায়ে পুলিশ নেতাকর্মীদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। এ সময় দৌড়ে পালাতে গিয়ে ৫-৬ জন নেতাকর্মী আহত হন।

আহতদের মধ্যে ধর্মপুর ইউনিয়ন সহ-সভাপতি ওমর ফারুক, ফাজিলপুর ইউনিয়ন ছাত্রদল নেতা মো. হাসানের নাম জানা গেছে। এ সময় কয়েকজন নেতাকর্মীকে পুলিশ ধরে নিয়ে যায়। এ বিষয়ে ফেনী মডেল থানার ওসি মো. নিজাম উদ্দিনের মোবাইলে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ছাত্রদল


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ