Inqilab Logo

শুক্রবার, ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১, ০১ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

ভবন সঙ্কটে পাঠদান ব্যাহত

লেমুয়া ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসা

মো. ওমর ফারুক, ফেনী থেকে | প্রকাশের সময় : ২১ নভেম্বর, ২০২২, ১২:০০ এএম

ফেনী সদর উপজেলার ৯নং লেমুয়া ইউনিয়নের দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান লেমুয়া ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসা অবস্থিত। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে ১৯৫২ সালে এ দ্বীনি প্রতিষ্ঠানটি স্থাপিত হয়। ৭০ বছর আগে স্থানীয় কয়েকজন শিক্ষানুরাগী ও বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের দান-অনুদানে এ প্রতিষ্ঠানে ছোট একটি টিনশেডের ঘর নির্মাণ করে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করা হয়। সেই থেকে এখনো পর্যন্ত অর্থের অভাবে অত্র মাদরাসায় বড় কোন বহুতল ভবন নির্মাণ করা যায়নি। দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে উন্নয়নের ছোঁয়া লাগলেও এ দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এখনো কোন উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি।
মাদরাসা সূত্রে জানা যায়, এ প্রতিষ্ঠানটি ১৯৫২ সালে ৬০ শতাংশ নিজস্ব ভূমির ওপর প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৮৫ সালে এমপিওভুক্ত হয়। এমপিওর পর এ মাদরাসাটি আধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থার প্রচার ও প্রসারে ব্যাপক সুনাম অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। মাদরাসা প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে এবতেদায়ীসহ দাখিল পর্যায়ে পরিচালিত হয়ে আসছে। নূরাণী বিভাগ চালুর বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। কিন্তু মাল্টিমেডিয়া ক্লাসরুম, আধুনিক বিজ্ঞানাগার, গ্রন্থাগার, বঙ্গবন্ধু মুক্তিযোদ্ধা কর্ণার, মেয়ে শিক্ষার্থীদের বিশ্রামাগার ও আধুনিক শৌচাগারসহ প্রতিষ্ঠানটির নানা সমস্যা রয়েছে। অত্র প্রতিষ্ঠানে ৭টি শূণ্য পদ রয়েছে। সহকারি শিক্ষক গণিত, সহকারী শিক্ষক আইসিটি, সহকারী শিক্ষক শরীরচর্চা, সহকারী মৌলভীর ২টি পদ, জুনিয়র মৌলভী ও ভৌত বিজ্ঞান। ছাত্র-ছাত্রীর তুনলায় শিক্ষক অপ্রতুল হওয়ায় নিয়মিত শ্রেণিশিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। অনেক সময় গেস্ট শিক্ষক রেখে পাঠদান চালিয়ে নিতে হয়। এ জন্য তাদের পেছনে অনেক অর্থ ব্যয় হচ্ছে। অত্র প্রতিষ্ঠানটিতে গরীব ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা অনেক বেশি। অনেক শিক্ষার্থীকে ফ্রি পড়াতে হয়। প্রতিষ্ঠানটির পর্যাপ্ত অর্থের সঙ্কটও রয়েছে। বর্তমানে অত্র প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ৪শ’ জন। প্রতিষ্ঠানে ১৬ জন শিক্ষক কর্মচারী রয়েছে। শিক্ষার্থীর তুলনায় মাদরাসায় ভবন সঙ্কটের কারণে শ্রেণি কার্যক্রম মারাত্মক ব্যাহত হচ্ছে।
মাদরাসা সুপার মোহাম্মদ ইয়াহইয়া বলেন, আমি ২০১৫ সালে অত্র মাদরাসায় যোগদান করি। শিক্ষার মান উন্নয়নে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও পরিচালনা কমিটির সদস্যদের আন্তরিকতার কারণে এ প্রতিষ্ঠানের পাবলিক পরীক্ষার ফলাফল অত্যন্ত সন্তোষজনক। কিন্তু মাদরাসার ভবন সঙ্কটের কারণে শ্রেণি কার্যক্রম চালাতে আমাদের খুব অসুবিধা হচ্ছে।
এমতাবস্থায় মাদরাসায় একটি ৪ তলা বিশিষ্ট একাডেমিক ভবন জরুরি প্রয়োজন। আমি এ বিষয়ে ফেনী-২ আসনের সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারীর আন্তরিক সহযোগিতা কামনা করছি এবং ইউপি চেয়ারম্যান মোশারফ উদ্দিন নাছিমসহ এলাকার গণ্যমান্য, সুশিল সমাজ ও শিক্ষানুরাগীসহ সকলের সুদৃষ্টি কামনা করছি। মাদরাসা কমিটির সভাপতি এড. করিমুল হক দুলাল বলেন, বর্তমানে মাদরাসায় অনেক শিক্ষার্থী আছে। কিন্তু ভবন সঙ্কটে পাঠদানে সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। অত্র প্রতিষ্ঠানে একটি ৪ তলা ভবন খুবই প্রয়োজন।
এ ব্যাপারে আমরা দুই মাস আগে স্থানীয় এমপির ডিও লেটারসহ একটি ফাইল জমা দিয়েছি। শিক্ষামন্ত্রী ড. দীপু মণির কাছে আমাদের প্রাণের দাবি অত্র দ্বীনি প্রতিষ্ঠানে একটি একাডেমিক ভবন করে দিলে শিক্ষার্থীদের পাঠদানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।
মাদরাসায় অধ্যায়নরত কয়েকজন ছাত্র-ছাত্রী বলেন, মাদরাসায় শ্রেণিকক্ষের অভাবে আমরা ঠিকমত ক্লাসে বসতে পারিনা। আমাদের মাদরাসায় একটি ভবন নির্মানের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি।
লেমুয়া ইউপি চেয়ারম্যান মোশারফ উদ্দিন নাছিম বলেন, মাদরাসার একাডেমিক ভবন সঙ্কট রয়েছে। সদর আসনের এমপি নিজাম উদ্দিন হাজারীর একটি ডিওলেটার নিয়ে মন্ত্রণালয়ে জমা দেয়ার ব্যবস্থা করেছি। খুব সহসাই এখানে একটি ভবনের অনুমোদন হবে আমরা আশা করছি।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, লেমুয়া ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসায় আমি কিছুদিন আগে পরিদর্শনে গিয়েছি। অনেক সমস্যা আছে তবে সেখানে একটি ভবন প্রয়োজন। এ ব্যাপারে আমার সহযোগিতা থাকবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ