Inqilab Logo

বুধবার, ২৬ জুন ২০২৪, ১২ আষাঢ় ১৪৩১, ১৯ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

‘বাংলাদেশের স্বাধীনতার মূলমন্ত্রে গণতন্ত্র নিহিত, অন্য কোনো পথ নয়’: জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ভিসি

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২০ নভেম্বর, ২০২২, ৮:২৭ পিএম

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. মো. মশিউর রহমান বলেছেন, ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতার মূলমন্ত্রে নিহিত ছিল গণতন্ত্র, সামরিক বা অন্য কোনো পথ নয়। এদেশের মানুষের হাজার বছরের গ্লানি, বঞ্চনা, নিগ্রহ থেকে মুক্তি দিতে স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন মহানায়ক জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি ‘শোষিতের গণতন্ত্র’ প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করেছেন। এজন্য তিনি দ্বিতীয় বিপ্লব কর্মসূচি ঘোষণা করেছিলেন। এই দ্বিতীয় বিপ্লব ছিল ইম্পেরিয়াল শক্তির বিরুদ্ধে, কলোনিয়াল রুলের বিরুদ্ধে, অসৎ, দুর্নীতিবাজ, মুনাফাখোরদের বিরুদ্ধে আমূল পরিবর্তন। এই কর্মসূচির মধ্যে ছিল সাম্প্রদায়িক শক্তির বিনাশের আহŸান।’ রোববার (২০ নভেম্বর) রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ স্টাডিজ (আইবিএস) আয়োজিত ‘বঙ্গবন্ধুর দ্বিতীয় বিপ্লব, ৭৫ এর হত্যাকান্ড এবং তৎপরবর্তী বাংলাদেশ’ শীর্ষক বিশেষ সেমিনারে স্মারক বক্তার বক্তব্যে এসব কথা বলেন ভিসি।

দেশের প্রথিতযশা এই সমাজবিজ্ঞানী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু এক কঠিন শপথ নিয়ে সমাজ বিপ্লবের দিকে এগুলেন। তিনি এর ‘ফুল এজেন্ডা’ নিয়ে কাজ শুরুর সময় ঠিক করলেন আগস্ট ১৯৭৫। আর সেই সময়ে তাঁকে সপরিবারে নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করা হলো। এ ছিল পরিকল্পিত, সুনির্দিষ্ট উদ্দেশ্য সাধনে হত্যাকান্ড। দেশি-বিদেশি চিহ্নিত শক্ররা শেখ মুজিবের বিপ্লব ভাবনাকে হত্যার চেষ্টা করলো। কিন্তু তারা জানলো না আসলে মুজিবের এই আদর্শ বা ভাবনা বিনাশ হবার নয়। বঙ্গবন্ধু তাঁর দর্শন প্রভাবে চিরভাস্বর। তাঁর আদর্শিক-বৈপ্লবিক ভাবনা বিশ্ব পরিসরে আজ স্বীকৃত। বিশ্ব অর্থনীতি যখনই যত বেশি পুঁজিবাদী গ্রাসে, সংকটে নিপতিত হয়, বঙ্গবন্ধুর সমাজ দর্শন, ভাবনা ও বিপ্লবী মুক্তি-নির্দেশনা ততবেশি প্রাসঙ্গিক হয়ে ওঠে।’

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ভিসি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর ‘শোষিতের গণতন্ত্র’ মূলত. একটি সামাজিক ও রাজনৈতিক ব্যবস্থা। এর অন্তর্নিহিত দর্শন ছিল গভীর দেশপ্রেম এবং বাংলাদেশের ১৯৭২ সালের সংবিধানে গৃহীত মূলনীতি। বঙ্গবন্ধু আমূল পরিবর্তন আনতে চেয়েছিলেন। রাষ্ট্র-সৃষ্টি তাঁর প্রথম বিপ্লব। কিন্তু সমাজ পরিবর্তনের যে দ্বিতীয় বিপ্লবে বঙ্গবন্ধু হাত দিয়েছিলেন, তা সম্পন্ন করা সম্ভব হলে বাংলাদেশ নির্দ্বিধায় স্বল্প সময়ে এক নতুন উচ্চতায় আসীন হতো। বঙ্গবন্ধুর ধারণা ছিল খুবই স্পষ্ট। কোনো রকম দ্বিধা নিয়ে তিনি ‘দ্বিতীয় বিপ্লব’ বা শোষিতের গণতন্ত্র’ প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে নামেননি। বুঝে-শুনে নিজে সম্পূর্ণ বিশ্বাস স্থাপন করেই তিনি এমন এক মহৎ কর্মযজ্ঞে হাত দিয়েছিলেন।’

তরুণ প্রজন্মের উদ্দেশে ভিসি ড. মশিউর রহমান বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর দ্বিতীয় বিপ্লব কর্মসূচির আদর্শকে ধারণ করে সদাজাগ্রত রেখে আমাদের তরুণ প্রজন্ম সামনে এগিয়ে যাবে। এর মধ্য দিয়ে নতুন সমাজ তৈরি হবে। অনেকে মনে করেন- সমাজতান্ত্রিক সমাজের অবসান ঘটেছে তাই দ্বিতীয় বিপ্লবের প্রাসঙ্গিকতা হারিয়েছে। এটি ঠিক নয়, কারণ এগুলো যারা বলেন তারা সমাজকে সংক্ষিপ্ত পরিসরে দেখেন। ক্যারিশমেটিক লিডারের অনন্য ক্ষেত্র হচ্ছে তার সমস্ত কিছু রুটিনাইজেশন হয়। একটা সোসাইটি যতো বেশি যৌক্তিক হয়, সেই যৌক্তিক সমাজ বার বার তার ক্যারিশমেটিক লিডারের কাছে ফিরে যায়। সেটিকেই বলা হয় রুটিনাইজেশন অব ক্যারিশমা। সুতরাং বঙ্গবন্ধুর দ্বিতীয় বিপ্লবের কর্মসূচি টিকবে। আজকে যারা এখানে গবেষক আছেন, আগামী দিনে আপনাদের হাত ধরে র‌্যাশনাল সোসাইটি তৈরি হবে। সেই যুক্তির সমাজে বঙ্গবন্ধুর দ্বিতীয় বিপ্লব অনেক বেশি প্রাসঙ্গিক ও গবেষণার বিষয় হবে। এভাবেই সমাজ কাঠামোর নতুন উপাদান ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে প্রসারিত হবে।’ ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ স্টাডিজের (আইবিএস) পরিচালক প্রফেসর মোহাম্মদ নাজিমুল হকের সভাপতিত্বে বিশেষ সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর গোলাম সাব্বির সাত্তার। এছাড়া ইনস্টিটিউটের বঙ্গবন্ধু অধ্যাপক সনৎকুমার সাহাসহ আইবিএসের শতাধিক গবেষক সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ