Inqilab Logo

সোমবার, ০৮ জুলাই ২০২৪, ২৪ আষাঢ় ১৪৩১, ০১ মুহাররম ১৪৪৬ হিজরী

ঘর পেয়ে খুশি আব্দুল কাদের

মো: মহসিন আলী মনজু, ফুলবাড়ী (কুড়িগ্রাম) থেকে | প্রকাশের সময় : ২০ নভেম্বর, ২০২২, ১২:০০ এএম

রোদ-বৃষ্টি আর হিমেল হাওয়ার সঙ্গী হয়ে টিনের ছায়লায় বসবাস করতেন স্ত্রী, সন্তান ও অন্ধ মাকে নিয়ে। বর্ষাকালে ভাঙ্গা বেড়া ও টিনের ছায়লার ফুটা দিয়ে বৃষ্টির ছিটা আসত।
শীতের দিনে ঠান্ডায় জমে যেত বিছানাপত্র।অচল দুটি পা ও শ্বাস কষ্ট নিয়ে ভিক্ষা করে যা আয় হত তা দিয়ে ৬ সদস্যের সংসারের ভরণ-পোষণের পর ঘর মেরামত করা হত না ঠিক মতো। ভাঙা জীর্ণ ঘরে বসবাস এবং দুঃখ আর হা হা কার যার নিত্য দিনের সঙ্গী তিনি আশ্রয়ণ প্রকল্প আশ্রয়ণের অধিকার শেখ হাসিনার উপহার মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহারের ঘর পেয়ে পাকা ঘরে থাকতে পেরে খুবই খুশী।
ফুলবাড়ী উপজেলার বড়ভিটা ইউনিয়নের উত্তর বড়ভিটা গ্রামের মো: আব্দুল কাদের। জন্ম কুড়িগ্রামের যাএাপুর ইউনিয়নে। ছোট বেলায় টাইফয়েড ও বাশলি (প্যারালাইজ্ড) হয়ে দুই পা অবস হওয়ায় হাঁটাচলা করতে পারতেন না।
আব্দুল কাদেরের ভিটা-মাটি না থাকায় ছোটবেলা থেকেই হুইল চেয়ারে বসে নিজের হাতের শক্তিতে চালিয়ে ভিক্ষা করে জীবিকা নির্বাহ করতেন।
নানা বাড়ির মায়ের নামে থাকা ৫ শতক জমি পেয়ে সেখানে বাড়ি করেন। ৮৮ সালের বন্যা ও ভাঙ্গনে সে বাড়ি-ভিটা ধরলা নদীতে বিলীন হলে দূর সম্পর্কের এক ভাই তাকে নিয়ে যান দিনাজপুরের বিরল উপজেলায়। সেখানে ষ্টেশনের পাশের বস্তিতে ঝুপড়ি ঘরে বসবাস শুরু করেন।
এখানেও ভিক্ষা করে কাটিয়ে দেন জীবনের ২৫টি বৎসর। বস্তিঘরের পাশের রাস্তা সম্প্রসারণের জন্য বস্তি ভেঙ্গে দেয়া হলে মাথা গোজার ঠাঁই টুকুও হারিয়ে যায়। দিশাহারা আব্দুল কাদের জীবনের শেষপ্রান্ত ফিরে আসেন নিজ গ্রামে। যাত্রাপুর ইউনিয়ন চরাঞ্চল হওয়ায় হুইল গাড়ি নিয়ে ভিক্ষা করতে অসুবিধা হত। ভিক্ষা কম পাওয়ায় খেয়ে না খেয়ে থাকতে হত।
যাত্রাপুরের বাড়িভিটার ৫শতক জমি বিক্রি করে সেই টাকায় ফুলবাড়ী উপজেলার বড়ভিটা ইউনিয়নে খেজুরের তল নামক স্থানে সড়কের পাশে ২ শতক জমি কিনে নতুন বাড়ি করেন। এখানেও ভিক্ষা করে ৫ সদস্েযর সংসার চালাতে হত।
বতর্মানে তার হুইল চেয়ারটি ভেঙ্গে যাওয়ায় ও স্বাসকষ্ট বেড়ে যাওয়ার কারণে ভিক্ষায় যেতে পারেন না। তাই তার স্ত্রী বাধ্য হয়ে ভিক্ষা করে অতিকষ্টে সংসার চালাচ্ছেন।
এমনি সময় উপহারের ঘর পেয়ে খুশি আব্দুল কাদের। তিনি বলেন, কষ্টের জীবনের এই সময় প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর পেয়ে আমি খুব খুশি। প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ পাকা ঘর উপহার দেওয়ার জন্য।
আব্দুল কাদেরের স্ত্রী মজিদা বেগম বলেন, বড় ছেলে বিয়ে করে শহরে রিক্সা চালায়। আমাদের খোঁজখবর নেওয়ার মত সাধ্য তার নেই।
ছোট ছেলে মাদ্রাসায় থেকে হাফেজি পড়ে। একা ভিক্ষা করে সবার জন্য ঠিকমত খাবার জোটা কঠিন। এমন অবস্থায় তার স্বামীর নামে প্রতিবন্ধী ভাতা ও হুইল চেয়ারের ব্যবস্বা করলে একটু ভালো থাকতে পারবো।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ