শনিবার কক্সবাজার সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও জাতীয় সংসদের হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন বলেন, বাংলাদেশ বিরোধী ষড়যন্ত্রের কারনে দুর্নীতি প্রচেষ্টার কল্পনাপ্রসূত অভিযোগের ভিত্তিতে বিশ্বব্যাংক বাঙালির প্রাণের পদ্মা সেতুর অর্থায়ন থেকে সরে গিয়েছিল। প্রাজ্ঞ, দৃঢ়চেতা, অকূতোভয় রাষ্ট্রনেতা শেখ হাসিনা তাঁর মহৎ কর্ম, অভূতপূর্ব উন্নয়ন, মানবকল্যাণ, দূর্নীতির বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। তিনি সঠিক পথে দেশকে এগিয়ে নিচ্ছেন। এ কারনেই ২০১৬ সালে বৈরী বিশ্ব ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট জিম ইয়াং কিম স্বয়ং ঢাকায় এসে দারিদ্র্য বিমোচনে বাংলাদেশ মডেল অনুসরণের জন্য বিশ্বকে আহ্বান জানিয়েছিলেন।

তিনি বলেন, সম্প্রতি বিশ্ব ব্যাংকের দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলের ভাইস প্রেসিডেন্ট মার্টিন রাইজার ঢাকায় এসে বলেছেন, উন্নয়নের মাধ্যমে বিশ্বকে চমকে দিয়েছে বাংলাদেশ। আইএমএফ মিশন এসে স্টাডি করে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ভিত্তির প্রশংসা করেছেন। পৃথিবীর বিভিন্ন খ্যাতনামা সংস্থা ও স্টাডি গ্রুপ বাংলাদেশের সাম্প্রতিক উন্নয়ন ও অর্জনের প্রশংসা করে চলেছেন।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার দায়িত্ব গ্রহণকালে বাংলাদেশ ছিল বিশ্বের ৬০ তম অর্থনীতির দেশ, আজ ৪১ তম, আমাদের জিডিপি ছিল ৯১ বিলিয়ন ডলার আজ ৪৬৫ বিলিয়ন ডলার, মাথাপিছু আয় ছিল ৬৮৬ ডলার, আজ ২,৮২৪ ডলার, রপ্তানী ছিল ১৪.১ বিলিয়ন ডলার, আজ ৫০ বিলিয়ন ডলার। বাৎসরিক রেমিটেন্স ছিল ৭.৯ বিলিয়ন, আজ ২৪.৮ বিলিয়ন, জাতীয় বাজেট ছিল ৭৯,৬১৪ কোটি টাকা, আজ ৬ লক্ষ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকা।

আগে একটা ছোট্ট সেতু করতে দাতাদের পেছনে বছরের পর বছর ঘুরতে হত, আজ প্রিয়তমা বাংলাদেশ নিজের টাকায় প্রমত্তা পদ্মার ওপর সেতু নির্মাণের সক্ষমতা অর্জন করেছে। এই সকল মহৎ অর্জন সাধিত হয়েছে বিশ্বসেরা রাজনীতিবিদ, বাঙালির আপন প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার দেশনায়ককোচিত দক্ষ নেতৃত্ব এবং সকল জনগণের অন্তর্ভূক্তিমূলক অবদানের কারণে। তিনি বলেন, অভিবাদন শেখ হাসিনা, এ'বিশ্ব বিস্ময়ে তাকিয়ে রয়, কৃতজ্ঞতা বাংলাদেশের সকল দেশপ্রেমিক নাগরিকের প্রতি।

উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক মাহমুদুল করিম মাদুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সম্মেলনের উদ্বোধন করেন জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এডভোকেট ফরিদুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক এডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আলহাজ্ব আব্দুস সবুর, উপ প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম। প্রধান বক্তা ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধার সম্পাদক মেয়র মুজিবুর রহমান। অন্যান্যের মাঝে বক্তব্য রাখেন সাইমুম সারোয়ার কমল এমপি, কানিজ ফাতেমা আহমেদ এমপি, সালাউদ্দিন আহমেদ সিআইপি, মোস্তাক আহমেদ, জসিম উদ্দিন, এডভোকেট সৈয়দ রেজাউর রহমান রেজা প্রমুখ।

সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশনে আলোচনার মাধ্যমে সর্বসম্মতিক্রমে বিদায়ী আহ্বায়ক, সাবেক ছাত্রনেতা মাহমুদুল করিম মাদু সভাপতি এবং বিদায়ী যুগ্ম আহ্বায়ক এডভোকেট সৈয়দ রেজাউর রহমান রেজা সাধারন সম্পাদক নির্বাচিত হন।

এদিকে মাহমুদুল করিম মাদুকে সভাপতি ও এড. রেজাউল করিম রেজাকে সাধারণ সম্পাদক করে সিলেক্টেড কমিটি ঘোষণা করা হয় বলে অভিযোগ এনে অপর সাধারণ সম্পাদক পদের দাবীদার সাবেক চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিনের সমর্থকরা জসিম উদ্দিনকে সাধারণ সম্পাদক ঘোষণার দাবীতে দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত অফিস অবরোধ করে রাখে। তারা সিলেকশন কমিটি মানিনা বলে শ্লোগান দিয়ে সরাসরি কাউন্সিলের মাধ্যমে কমিটি ঘোষণার দাবী জানান।

এসময় প্রচুর আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রয়ণ করতে দেখা যায়। কয়েকঘণ্টা অবরোধ শেষে কেন্দ্রীয় এবং স্থানীয় নেতৃবৃন্দের হস্তক্ষেপে বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা অবরোধ প্রত্যাহার করে।