Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আল্লামা ফজলুল্লাহ (রাহ.) ছিলেন একজন ক্ষণজন্মা মহাপুরুষ

চুনতী মাদ্রাসায় কওমি ও আলিয়া আলেমদের মিলন মেলায় ড. আবু রেজা নদভী, এমপি

লোহাগড়া থেকে ফিরে মোঃ সাদাত উল্লাহ | প্রকাশের সময় : ১৯ নভেম্বর, ২০২২, ৭:৫৪ পিএম

চট্টগ্রাম-১৫ (সাতকানিয়া-লোহাগাড়া) আসনের মাননীয় জাতীয় সংসদ সদস্য, আইআইউসি বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান শায়খুল হাদীস প্রফেসর ড. আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভী বলেন, ভারত উপমহাদেশের শীর্ষস্থানীয় আলেমদের মধ্যে অন্যতম আল্লামা আবুল বারাকাত মুহাম্মদ ফজলুল্লাহ (রাহ.) ছিলেন বহুমাত্রিকতার সংমিশ্রণে একজন ক্ষণজন্মা মহাপুরুষ। তিনি একাধারে মুহাদ্দিস, মুফাসসির, মুফতি, ইসলামী চিন্তাবিদ, উর্দু, আরবী, ফার্সি ও বাংলা ভাষার শায়ের (কবি), সাহিত্যিক, লেখক ও অনুবাদক। তিনি কিংবদন্তি মুসলিম মনীষী হযরত আল্লামা খলিল আহমদ সাহরনপুরি (রাহ.) এর ছাত্র এবং হাকিমুল উম্মত হযরত আল্লামা আশরাফ আলী থানভী (রাহ.) এর 'মুরিদে খাছ' ছিলেন। অত্যন্ত ব্যক্তিত্বসম্পন্ন ও যুগশ্রেষ্ঠ এই আলেমেদ্বীন ছিলেন ঐক্যের প্রতীক এবং নেতৃত্ব ও সেবার প্রেরণা। এ মনীষীর সান্নিধ্যে এসে যে কেহই মুগ্ধ না হয়ে পারতেন না। তিনি তাঁর সময়ের চেয়ে অনেক বেশি আধুনিক ছিলেন। প্রচলিত ধ্যান-ধারণা ও জরাজীর্ণ ইতিহাস বদলে দিয়ে নিজেই রচনা করে গেছেন নতুন ইতিহাস। তিনি জ্ঞানের প্রতিটি শাখা-প্রশাখায় বিচরণ করেছেন অবাধে এবং সৃষ্টি করেছেন অনেক মূল্যবান গ্রন্থ। এছাড়াও বিভিন্ন বিষয়ে তিনি আরও ১৯টি গ্রন্থ রচনা করেছেন। এই মনীষীর স্বহস্তে লিখিত পান্ডুলিপি দেখে সুধী মহল বিস্ময়ে অবাক হয়ে পড়েন। তাঁর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় চুনতির শাহ সাহেব হযরত মাওলানা হাফেজ আহমদ (রাহ.) প্রবর্তিত মাহফিলে সীরতুন্নবী (সাঃ) হয়ে ওঠে দলমত নির্বিশেষে ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের মিলনস্থল। আলীয়া এবং কওমী ঘরানার বিদগ্ধ আলেম-ওলামাদের বিচরণ।

প্রফেসর ড. আবু রেজা মুহাম্মদ নেজাম উদ্দীন নদভী এমপি ১৯ নভেম্বর ২০২২খ্রি. শনিবার সকাল ১১টায় চট্টগ্রাম জেলার লোহাগাড়ার ঐতিহ্যবাহী দ্বীনি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চুনতী হাকিমিয়া কামিল (অনার্স-মাস্টার্স) মাদ্রাসায় আল্লামা ফজলুল্লাহ ফাউন্ডেশন ও আনজুমনে তোলাবায়ে সাবেকীন (প্রাক্তন ছাত্র পরিষদ) এর সহযোগিতায় সম্প্রসারিত মসজিদে আসমাউল হুসনা'র উদ্বোধন, বুখারী ও মুসলিম শরীফের সবকদান, আল্লামা ফজলুল্লাহ (রাহ.)'র জীবনীগ্রন্থসহ কয়েকটি গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন ও মাদ্রাসার প্রাক্তন ছাত্রদের মধ্যে ৩৫ জন পিএইচডি ডিগ্রি অর্জনকারী, কামিল সম্মিলিত মেধা তালিকায় দ্বিতীয় স্থান অধিকারী ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে অধ্যক্ষ হিসেবে কর্মরতদের সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ কওমী মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড (বেফাক) এর মহাপরিচালক ও দৈনিক ইনকিলাবের সহকারী সম্পাদক মাওলানা ওবায়দুর রহমান খান নদভী, বলেছেন, ভারতীয় উপমহাদেশে ১৭৮০ সালে আলীয়া মাদ্রাসা ও ১৮৬৬ সালে কওমি মাদ্রাসা প্রতিষ্টা হয়। ছোটখাট বিষয় নিয়ে কিছু এখতেলাফ থাকলেও ইসলামের মৌলিক বিষয় নিয়ে কওমি ও আলিয়া ঘরনার আলেমদের চিন্তা চেতনা এক।

মাদ্রাসা গভর্ণিং বডির সভাপতি ও আল্লামা ফজলুল্লাহ (রাহ.) ফাউন্ডেশন এর চেয়ারম্যান মাওলানা অধ্যাপক ড. আবুল আ'লা মুহাম্মদ হোছামুদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি ছিলেন জামেয়া দারুল মা’আরিফ আল-ইসলামিয়া, চট্টগ্রাম এর প্রতিষ্ঠাতা মহাপরিচালক আল্লামা সুলতান যাওক নদভী। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ কওমী মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড (বেফাক) এর মহাপরিচালক মাওলানা ওবায়দুর রহমান খান নদভী, রাহবারে বায়তুশ শরফ মাওলানা মুহাম্মদ আব্দুল হাই নদভী, আইআইইউসি ট্রাস্টের ভাইস চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. কাজী দীন মোহাম্মদ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের প্রফেসর ড. আ.ক.ম আব্দুল কাদের, চট্টগ্রাম সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মোজাহেদুল ইসলাম চৌধুরী, চুনতী হাকিমিয়া কামিল (অনার্স-মাস্টার্স) মাদ্রাসার সাবেক অধ্যক্ষ মাওলানা মাহমুদুল হক, সাবেক উপাধ্যক্ষ মাওলানা মুহাম্মদ আজিজুল হক, ড. মাওলানা মুহাম্মদ ঈসা শাহেদী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের প্রফেসর ড. এনামুল হক। বিদেশে অবস্থানরত আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রাম এর সাবেক প্রো-ভিসি প্রফেসর ড. আবু বকর রফীক আহমদের লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন অধ্যাপক ড. আবুল আলা মুহাম্মদ হোছামুদ্দিন। সম্মানিত অতিথি ছিলেন জামেয়া দারুল মা’আরিফের সহকারী মহাপরিচালক মাওলানা ফোরকান উল্লাহ খলিল, লোহাগাড়া উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইব্রাহিম কবির, চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের সদস্য এরফানুল করিম চৌধুরী, চুনতি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীন জনু, আধুনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব নাজিম উদ্দীন, মাদার্শা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আ.ন.ম সেলিম, চরম্বা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোঃ সাদাত উল্লাহ, অধ্যাপক মাওলানা সিরাজুল আরেফীন ছিদ্দিকী, কাজী মাওলানা নাসির উদ্দিন, শিল্পপতি আলহাজ্ব আবদুশ শুকুর, আলহাজ্ব মোসলেম উদ্দিন, টেরিবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব আহমদ হোছাইন, সাতকানিয়া সমিতির প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব জসিম উদ্দিন প্রমুখ।

দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বিভিন্ন পেশায় জড়িত প্রাক্তন ছাত্রদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের ফলে পুরো অনুষ্ঠানমালা অভূতপূর্ব এক মিলনমেলায় পরিণত হয়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ