Inqilab Logo

রোববার, ১২ মে ২০২৪, ২৯ বৈশাখ ১৪৩১, ০৩ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

বগুড়ায় ছাত্রলীগের কমিটি নিয়ে পদবঞ্চিতদের সংবাদ সম্মেলনে যা বললেন পদ বঞ্চিত নেতারা....

বগুড়া ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ১৯ নভেম্বর, ২০২২, ৪:২৫ পিএম

বগুড়া জেলা ছাত্রলীগের নব ঘোষিত আংশিক কমিটি মাদক ব্যবসায়ী, সমকামী, চাঁদাবাজ, ছিনতাইকারী ও অপহরনকারীদের নিয়ে করা হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন পদবঞ্চিত নেতাকর্মীরা। এমনকি ‘আর্থিক’ লেনদেন ও স্বজনপ্রীতির কারণে ‘অযোগ্যরা’ কমিটিতে স্থান পেয়েছে বলেও অভিযোগ করেছেন সংগঠনের একাংশের ছাত্রনেতারা।

শনিবার (১৯ নভেম্বর) দুপরে বগুড়া প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন বঞ্চিত নেতারা। এসময় তারা বলেন, বগুড়া জেলা ছাত্রলীগের ‘অযোগ্য’ কমিটি বাতিল করে সম্মেলনের মাধ্যমে ‘যোগ্যদের’ মূল্যায়ন করা না হলে কঠোর কর্মসূচি দেয়া হবে। শুধু তাই নয়, তাদের দাবি না মানলে বগুড়া জেলার প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তালা ঝুলিয় দেয়া হবে বলেও জানিয়েছেন বঞ্চিত নেতারা।
এদিন সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বগুড়া সদর ছাত্রলীগের সভাপতি ওবায়দুল্লাহ সরকার স্বপন। এসময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন বগুড়ার জেলার বিভিন্ন উপজেলা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ প্রায় ২০টি ইউনিটের নেতারা।
সংবাদ সম্মেলনে পদবঞ্চিত নেতারা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে যারা রাজপথে পরিশ্রম করেছেন তাদের অবমূল্যায়ন করে অযোগ্যদের নিয়ে বগুড়ায় পকেট কমিটি গঠন করা হয়েছে। শুধুমাত্র অর্থের দাপটে বাণিজ্যিক উপায়ে বগুড়া জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণা করা হয়। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের এমন কর্মকান্ডে রাজনৈতিক নেতাকর্মীসহ সব মহলের মানুষ হতাশ হয়েছেন।
প্রেস নোটের কমিটি বাতিল করে সম্মেলনের মাধ্যমে যোগ্যদের মূল্যায়নের দাবি জানিয়ে বলা হয়, ‘আমরা পুরো কমিটিকেই অযোগ্য ঘোষণা করছি। অযোগ্য দুই নেতাকে দিয়ে এভাবে কমিটি চালানো সম্ভব নয়। চাঁদাবাজ, মাদকসেবী, সমকামীরা এই কমিটিতে জায়গা পেয়েছেন। অযোগ্য এই কমিটিতে কিছু যোগ্য ছাত্রনেতাদের জায়গা দিয়ে সম্পূর্ণ করার ব্যর্থ চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু আমরা চাই, একটি সম্মেলনের মাধ্যমে যোগ্যদের মূল্যায়ন করে নতুন কমিটি ঘোষণা করা হোক। অন্যথায় আমরা কঠোর কর্মসূচী গ্রহণ করতে বাধ্য হব। শুধু তাই নয়, বগুড়া জেলা প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তালা ঝুলিয় দেয়া হবে বলেও জানিয়েছে বঞ্চিত নেতারা।’
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ‘হিসাব-নিকাশের’ একটি অডিও ক্লিপ ফাঁস হয়েছে। সেখানে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের পাঠাগার বিষয়ক সম্পাদক সৈয়দ ইমাম বাকের ও জনৈক ব্যক্তির কথোপকথন শোনা গেছে। বিষয়টি নিয়ে পদবঞ্চিতরা বলেছেন, ‘বগুড়ার দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা ইমাম বাকেরের কল রেকর্ডই প্রমাণ করেছে ছাত্রলীগের কমিটি অর্থের বিনিময়ে হয়েছে এবং ভবিষ্যতে আজিজুল হক কলেজের কমিটিও অর্থের বিনিময়েই হবে। তার ব্যক্তিগত হিসাব নিকাশের কথাতেই তা স্পষ্ট।’
পদবঞ্চিত ছাত্রলীগ নেতাদের সংবাদ সম্মেলনে হাজির হন নিহত সাবেক ছাত্রনেতা তাকবীরের বাবা জহুরুল ইসলাম। ছেলে হত্যার বিচার চেয়ে তিনি বলেন, ‘গত বছর এই সাতমাথায় আমার সন্তানকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। আমার ছেলেকে যারা হত্যা করলেন তারাই নতুন কমিটিতে জায়গা পেলেন। এতে মনে হচ্ছে, আমার ছেলেকে আবার হত্যা করা হলো। প্রকাশ্য দিবালোকে আমার সন্তান হত্যার খুনিরা এবং মদদপুষ্টরা ফুলেল শুভেচ্ছা পাচ্ছেন। আজ যারা কঠোর পরিশ্রম করে বঞ্চিত হয়েছেন আমার সন্তানও তাদেরই একজন ছিলেন। তাকবীর ছাত্র রাজনীতির ‘বলি’ হয়েছে। আমি ছেলে হত্যার বিচার চাই।’
প্রসঙ্গত, গেল ৭ নভেম্বর সন্ধ্যা সাড়ে ৮ টার দিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি প্রেস রিলিজের মাধ্যমে বগুড়া জেলা ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণা করা হয়। সেখানে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি ও সাধারন সম্পাদকের স্বাক্ষরিত একটি প্যাডে বগুড়া জেলা ছাত্রলীগের ৩০ জনের আশ্কি কমিটি ঘোষণা করা হয়। মূলত এরপর থেকেই ‘যোগ্যদের’ অবমূল্যায়নের অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন সংগঠনটির একাংশের নেতাকর্মীরা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ