Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আইন মন্ত্রণালয় ও সুপ্রিম কোর্টের চিঠি চালাচালি

প্রসঙ্গ : ট্রাইব্যুনাল স্থানান্তর

| প্রকাশের সময় : ১৭ ডিসেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে সরিয়ে নিতে ফের চিঠি সুপ্রিম কোর্টের
মালেক মল্লিক : আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে পুরনো হাইকোর্ট ভবন থেকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল সরিয়ে নিতে আইন মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন। গত ৪ ডিসেম্বর সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের রেজিস্ট্রার আবু সৈয়দ দিলজার হোসেন স্বাক্ষরিত এ চিঠি পাঠানো হয়। এর আগে গত ১৮ আগস্ট ৩১ অক্টোবরের মধ্যে পুরোনো হাইকোর্ট ভবন থেকে ট্রাইব্যুনাল সরিয়ে নিতে মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠায় সুপ্রিম কোর্ট। এরপর দীর্ঘ  আড়াই মাস পর ৩০ অক্টোবর সরানোর বিষয়টি পুনর্বিবেচেনা করতে সুপ্রিমকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল বরাবর মন্ত্রণালয় চিঠি প্রেরণ করে। এ প্রসঙ্গে আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল বলেছেন, আমি ট্রাইব্যুনাল সরানোর সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার জন্য আবারো সুপ্রিম কোর্টে চিঠি পাঠাবো। তার কারণ হচ্ছে জনগণের ইচ্ছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ওই খানেই থাক এবং এই ট্রাইব্যুনাল শেষ হওয়ার পর এটা একটা যাদুঘর হোক। জনগণের এই ইচ্ছাকে কি করে বাস্তব রূপ দেয়া যায় সে চেষ্টাই আমি করবো। গত ১২ ডিসেম্বর এক অনুষ্ঠানে আইনমন্ত্রী এসব কথা বলেছিলেন। এর আগে অ্যার্টনী জেনারেল মাহবুবে আলম বলেছিলেন, ট্রাইব্যুনাল সরানো নিয়ে কোন চিন্তার কারণ নেই। বিচার প্রক্রিয়ার এর কোন প্রভাব পড়বে না। প্রধান বিচারপতি যদি মনে করেন যেখানে বিচার হচ্ছে এই ভবনের প্রয়োজন তখন রাষ্ট্র এটা নিয়ে ভাবতে পারে।
গত ৪ ডিসেম্বর আইন মন্ত্রণালয় বরাবর সুপ্রিম কোর্টের চিঠিতে বলা হয়, বিভিন্ন আদালতে বর্তমানে অনেক স্পর্শকাতর ও গুরুত্বপূর্ণ মামলা বিচারাধীন রয়েছে। আর যথাযথ নিরাপদ পরিবেশেই সেসব মামলার বিচারকাজ পরিচালিত হচ্ছে। তাছাড়া বঙ্গবন্ধু হত্যামামলা, পিলখানা হত্যামামলা, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার মতো অতি স্পর্শকাতর মামলাসমূহ অধস্তন আদালতে বিচার নিষ্পত্তিতে কোনোরূপ সমস্যা সৃষ্টি হয়নি। ফলে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল অন্যত্র সরিয়ে না নেয়ার বিষয়ে সরকার যে যুক্তি উপস্থাপন করেছে তা কোনোক্রমেই গ্রহণযোগ্য নয়। তাছাড়া যুদ্ধাপরাধীদের বিচারসংক্রান্ত ট্রাইব্যুনাল প্রতিষ্ঠার পর এরইমধ্যে সাত বছর অতিক্রান্ত হয়েছে। সরকার সদিচ্ছা পোষণ করলে এই ট্রাইব্যুনালের জন্য অন্যত্র সুবিধাজনক ও আরও নিরাপদ স্থানের ব্যবস্থা করতে পারত।
আরও বলা হয়েছে, চলতি বছরের শুরুতে প্রধান বিচারপতির সঙ্গে আইনমন্ত্রীর আলোচনা হয়। সুপ্রিমকোর্টের স্থান সংকুলান না হওয়ার কারণে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এ বছরের ৩০ জুনের পূর্বে অন্যত্র সরিয়ে নিতে মন্ত্রী প্রধান বিচারপতিকে আলোচনার সময় আশ্বস্ত করেন। আর ৩০ জুনের পূর্বে সরকারকে কোনো চিঠি না দিতে প্রধান বিচারপতিকে অনুরোধ করেন। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল সরিয়ে নিতে এখনো পর্যন্ত সরকার কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করেনি।
নিরাপত্তার কথা উল্লেখ করে চিঠিতে বলা হয়, সুপ্রিমকোর্টের নিরাপত্তার জন্য পুলিশ বাহিনীর পর্যাপ্ত সদস্য মোতায়েন ও তাদের ব্যবহারের জন্য পুলিশ ব্যারাক নির্মাণে বার বার বলা হলেও স্থান বরাদ্দ দেয়া সম্ভব হয়নি। ফলে কোর্টের সার্বিক নিরাপত্তা বিঘিœত হওয়াসহ ছুটির দিনগুলোয় কোনো নিরাপত্তাই নিশ্চিত করা সম্ভব হয় না। চিঠিতে বলা হয়, স্থানসঙ্কুলান না হওয়ার কারণে উচ্চ আদালতের ২৫০০ কর্মচারীর জন্য প্রয়োজনীয় অফিস কক্ষের ব্যবস্থা করা যাচ্ছে না। অনেক ক্ষেত্রে টেবিলে দুই বা ততোধিক কর্মচারীকে বসে কাজ করতে হচ্ছে। ফলে কোর্টের প্রশাসনিক কাজে বিঘœ সৃষ্টি হচ্ছে। স্থানের অপ্রতুলতার কারণে বিচারপতিদের জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক চেম্বার/ কোর্ট রুমের ব্যবস্থা করা যাচ্ছে না। ভবিষ্যতে এ সঙ্কট আরও প্রকট হবে সেটা অনুমান করা যাচ্ছে। এসব বিষয় বিবেচনায় সুপ্রিম কোর্টের সকল এলাকা সমন্বিত করে উন্নয়নের জন্য একটি মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। আর তাই ট্রাইব্যুনাল সরিয়ে পুরনো হাইকোর্ট ভবনের দখল সুপ্রিম কোর্টকে হস্তান্তর করতে বলা হয় চিঠিতে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সুপ্রিম কোর্ট


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ