Inqilab Logo

শনিবার, ২৯ জুন ২০২৪, ১৫ আষাঢ় ১৪৩১, ২২ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

আমিন’ ধ্বনিতে বিনম্র চিত্তের মোনাজাতে সমাপ্তি সিলেটে ২দিন ব্যাপী ইজতেমার

সিলেট ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ১৮ নভেম্বর, ২০২২, ২:১০ পিএম | আপডেট : ২:৩৫ পিএম, ১৮ নভেম্বর, ২০২২

‘আঞ্জুমানে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ’র ৭৭ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত দু’দিনব্যাপী ইজতেমা-২০২২ শেষ হলো আখেরি মুনাজাতের মাধ্যমে। আজ শুক্রবার (১৮ নভেম্বর) সকাল ১০টায় অনুষ্ঠিত বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ মুনাজাতে আত্মশুদ্ধি ও নিজ নিজ গুনাহ মাফের পাশাপাশি দুনিয়ার সব বালা-মুসিবত থেকে হেফাজত করার জন্য দুই হাত তুলে মহান আল্লাহর দরবারে মোনাজাত করেন মুসল্লিরা। মুনাজাত পরিচালনা করেন দেশের সর্বজন শ্রদ্ধেয় আলেম, আঞ্জুমানে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির মুফতি মাওলানা রশীদুর রহমান ফারুক বরুনী।


এ সময় ‘আমিন, আমিন’ ধ্বনিতে বিন¤্র চিত্তে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের প্রত্যাশায় আকুতি জানান উপস্থিত লক্ষাধিক মুসল্লি। আজ র ভোর থেকে দিক নির্দেশনামূলক বয়ানের মাধ্যমে শুরু হয় ইজতেমার কার্যক্রমের শেষ দিন। আখেরি মুনাজাতে ইতজেমাস্থলের আশপাশ এলাকাসহ অংশগ্রহণ করেন সিলেট মহানগরের হাজারো মানুষ।


সিলেট-ফেঞ্চুগঞ্জ সড়কের পারাইচকে কেন্দ্রীয় ট্রাক টার্মিনালে অনুষ্ঠিত এ ইজতেমায় সমাগম ঘটে অর্ধ লক্ষাধিক মুসল্লির। বৃহস্পতিবার (১৭ নভেম্বর) বাদ ফজর থেকে শুরু হয় এ ইজতেমা। দুদিন ব্যাপী এ ইজতেমায় ইসলামী জীবন যাপন অনুসরণ ও আত্মশুদ্ধি অর্জন বিষয়ে বয়ান পেশ করেন দেশের শীর্ষ স্থানীয় শতাধিক ওলামা-মাশায়েখ। গতকাল বৃহস্পতিবার বাদ ফজর আমিরে আঞ্জুমানের উদ্বোধনী বয়ানের মাধ্যমে ইজতেমার আনুষ্ঠানিক সূচনা হবার পর থেকে আজ শুক্রবার সকাল ১০ টায় আখেরি মুনাজাত পর্যন্ত মোট সাতটি অধিবেশনে দেশ-বিদেশের শীর্ষস্থানীয় শতাধিক ওলামা-মাশায়েখ বয়ান পেশ করেন। সাত অধিবেশনে ধাপে ধাপে সভাপতিত্ব করেন সিলেটের শীর্ষস্থানীয় ওলামা-মাশায়েখ।


ইজতেমা থেকে দেশ ও জাতির উদ্দেশে দেওয়া বক্তব্যে আঞ্জুমানে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ-এর আমির হযরত মুফতি মুহাম্মদ রশীদুর রহমান ফারুক বলেন, নিজের ও নিজের পরিবারের ঈমান-আমলের পরিশুদ্ধির জন্য ঘরে ঘরে আপনারা তালীম তথা দ্বীনি শিক্ষার চর্চা চালু কাংন। মসজিদে, কর্মক্ষেত্রে, আবাসস্থলে দ্বীনি তালীমের চর্চা জারি থাকলে মুসলমানদের ঈমান-আমল সংরক্ষিত থাকবে। কেউ বিভ্রান্ত করতে পারবে না তাঁদের।


আমিরে আঞ্জুমান বলেন, সাধারণ মানুষকে দ্বীন-ঈমানের তালীম দেওয়া এবং তাঁদের মধ্যে ইসলামী ভ্রাতৃত্বের বন্ধনকে দৃঢ় করে তোলাই এ সংগঠনের প্রধানতম কর্মসূচি।


ব্রিটিশ আমলে প্রতিষ্ঠিত ৭৭ বছরের পুরনো এ সংগঠনের সঙ্গে প্রচলিত রাজনৈতিক কর্মকান্ডের কোনো সম্পর্ক নেই উল্লেখ করে মুফতি মুহাম্মদ রশীদুর রহমান ফারুক বর্ণভী বলেন, এ সংগঠন দলমত নির্বিশেষে সকল মানুষকে এক আল্লাহর দাওয়াত প্রদান এবং তাঁর আদেশ-নিষেধ পালনে উদ্বুদ্ধ করার কাজেই একনিষ্ঠভাবে কাজ করে যাচ্ছে।

দেশের সর্বস্তরের মুসলিম জনতার প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, দেশের প্রতিটা জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে সংগঠনের শাখা কমিটি গঠনের কাজ চলমান। আল্লাহর ওলীদের বরকতমন্ডিত এ সংগঠনের বিস্তার প্রচারে আপনাদের সকলের সহযোগিতা আমাদের প্রয়োজন।

দুদিন ব্যাপী বিশাল এ ইজতেমায় উপস্থাপনা করেন আঞ্জুমানের যুগ্ম মহাসচিব হাফিয মাওলানা শেখ সা‘দ আহমদ আমীন বর্ণভী, সহসাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা জাবের আল হুদা চৌধুরী, প্রকাশনা সম্পাদক মাওলানা শাব্বীর আহমদ ফতেহপুরী। ইজতেমা বৃহস্পতিবার বাদ ফজর থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হলেও মঙ্গলবার (১৫ নভেম্বর) থেকেই ইজতেমাস্থলে মুসল্লিদের সমাগম ঘটতে থাকে। ফলে ১৫ ও ১৬ নভেম্বরও ধাপে ধাপে সিলেটের শীর্ষস্থানীয় ওলামা-মাশায়েখগণ তাঁদের উদ্দেশে ধর্মীয় দিকনির্দেশনামূলক বয়ান পেশ করেন।

বয়ান করেন ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের কিংবদন্তি সংগঠন জমিয়তে উলামায়ে হিন্দ (ভারত)-এর বর্তমান মহাসচিব আল্লামা সাইয়্যিদ মাহমুদ মাদানী, ভারতের ঐতিহ্যবাহী দ্বীনি বিদ্যাপীঠ শাহি মুরাদাবাদ মাদরাসার প্রিন্সিপাল আল্লামা সাইয়্যিদ আশহাদ রশিদী, মাওলানা আব্দুল আউয়াল নারায়ণগঞ্জ, মাওলানা আব্দুর রহমান হাফিজ্জী মোমেনশাহী, মাওলানা আব্দুল মালিক পীর সাহেব ভোলা, মাওলানা আকরাম আলী পীর সাহেব বাহাদুরপুর, মাওলানা আব্দুল হামিদ পীর সাহেব মধুপুর, জাতীয় মসজিদ বায়তুল মুকাররামের খতীব মুফতি রুহুল আমীন, ড. আ ফ ম খালিদ হোসাইন চট্টগ্রাম, ড. মুশতাক আহমদ ঢাকা, মাওলানা উবায়দুর রহমান বরিশাল, মাওলানা আবদুল মতীন বিন হুসাইন পীর সাহেব ঢালকানগর, মাওলানা উবায়দুর রহমান খান নদভী, মাওলানা ইসমাঈল নুরপুরী নরসিংদী, মাওলানা নূরুল ইসলাম খান সুনামগঞ্জী, মাওলানা হামিদ জহিরী ঢাকা, মাওলানা মুশতাক আহমদ খুলনা, মাওলানা মুশতাকুন নবী কাসিমী, মাওলানা নুরুল হুদা ফয়জী বরিশাল, চট্টগ্রাম পটিয়া মাদরাসার মহাপরিচালক মাওলানা ওবায়দুল্লাহ হামযাহ, হাটহাজারী মাদরাসার মুহাদ্দিস মাওলানা আশরাফ আলী নিজামপুরী, মাওলানা আলী আকবর কাসিমী ঢাকা, মাওলানা আবু সাবের আবদুল্লাহ ঢাকা, মাওলানা আহমদ মায়মূন ঢাকা, মাওলানা আহমদ আলী কাসিমী, ড. শহীদুল্লাহ উজানী, অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান পীর সাহেব দেওনা, মাওলানা শামসুদ্দীন কাসিমী জামালপুর, মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী ঢাকা, মাওলানা মুহাম্মদ আলী সিরাজগঞ্জ, মাওলানা ইমাম হুসাইন সিরাজগঞ্জ, মুফতি ফয়জুল্লাহ ঢাকা, মাওলানা আব্দুল বাসিত খান সিরাজগঞ্জ, মুফতি আবুল বাশার নুমানী ঢাকা, মুফতি জসিম উদ্দীন ঢাকা, মাওলানা জুবায়ের আহমদ ঢাকা।

আঞ্জুমানে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ-এর তরফে বয়ান পেশ করেন নায়বে আমীর মাওলানা সাঈদুর রহমান বর্ণভী, নায়বে আমীর মাওলানা ওলীউর রহমান বর্ণভী, নায়বে আমীর মাওলানা আবদাল হোসেন খান, নায়বে আমীর মাওলানা শেখ আহমদ আফজল বর্ণভী, মহাসচিব মাওলানা অধ্যাপক আব্দুস সবুরসহ কেন্দ্রীয় পর্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বশীলবৃন্দ। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন- সিলেট-৩ আসনের এমপি হাবিবুর রহমান, গোলাপগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আমিনুল ইসলাম রাবেল, সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শফিকুর রহমান চৌধুরী, সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সেক্রেটারি অধ্যাপক জাকির হোসেন সহ বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ