Inqilab Logo

রোববার ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭ আশ্বিন ১৪৩১, ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

তানোরে জমাটবাঁধা ও গুণগত মান কমে যাওয়া ইউরিয়া সার বিক্রির অভিযোগ

| প্রকাশের সময় : ১৭ ডিসেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

তানোর (রাজশাহী) উপজেলা সংবাদদাতা : রাজশাহীর তানোরে বিসিআইসির অনুমোদিত সার ডিলারদের বিরুদ্ধে জমাটবাঁধা ও গুণগত মান কমে যাওয়া ইউরিয়া সার বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। কৃষকরা অভিযোগ করে বলেন, এসব সার কিনে তারা প্রতারিত হচ্ছেন। তারা জানান, বাঘাবাড়ী নৌবন্দর ও রাজশাহী বাফার গুদামে দীর্ঘদিন  খোলা আকাশের নীচে পড়ে থাকায় এসব ইউরিয়া সার জমাট বেঁেধ যাওয়ায় সারের গুণাগুণের স্থায়িত্ব কমে গেছে। তবে কৃষি কর্মকর্তার যোগসাজশে অধিক মুনাফার আশায় তানোরের বিসিআইসির একশ্রেণির ডিলার এসব সার কমদামে কিনে এনে বেশি দামে কৃষকদের কাছে বিক্রি করছে। তারা বিভিন্ন কৌশলে কৃষকদের এসব সার কিনতে বাধ্য করছে। আনুঃপাতিক হারে এসব ইউরিয়া সার না কিনলে অন্যান্য সার কৃষকদের কাছে বিক্রি করা হচ্ছে না বলেও কৃষকরা অভিযোগ করেছেন। ফলে এসব ইউরিয়া সার গুণগত মানসম্পন্ন নয় জেনেও কৃষকরা বাধ্য হয়ে কিনছেন। চলতি বোরো মৌসুমে ডিলারদের কাছ থেকে এসব জমাটবাঁধা ইউরিয়া সার কিনে জমিতে প্রয়োগ করার পর কোন কাজেই লাগছে না। তানোরের ধানতৈড় ও তালন্দ উপরপাড়া গ্রামের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কৃষক অভিযোগ করে বলেন, তারা তানোর পৌর সদরের মেসার্স প্রাইম ট্রেডার্স থেকে ডিএপি ও পটাশ সার কিনতে গেলে এসব সারের সঙ্গে তাকে আনুপাতিক হারে জমাটবাঁধা এসব ইউরিয়া সার কিনতে বাধ্য করা হয়েছে। অথচ এসব ইউরিয়া সার ফসলের জমিতে প্রয়োগ করে কোনো উপকারে আসেনি। তানোরের পাঁচন্দর এলাকার কৃষক জাইদুর রহমান (৪৫) অভিযোগ করে বলেন, মুন্ডুমালা পৌর সদরের মেসার্স নাইস ট্রেডার্স থেকে তিনি ইউরিয়া (জমাটবাঁধা) কিনে ফসলের জমিতে প্রয়োগ করে  আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন। সূত্র জানায়, সিরাজগঞ্জের বাঘাবাড়ী নৌবন্দর ও রাজশাহী বাফার গুদামের বাইরে দীর্ঘদিন খোলা আকাশের নীচে পড়ে থাকায় এসব সার জমাট বেঁধে যাওয়ায় এসব সারের গুণাগুণের স্থায়িত্ব কমে গেছে। যে কারণে এসব সার কৃষকের কোন উপকারেই আসছে না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিআইসির এক ডিলার বলেন, বাফার এসব জমাট বাধা ইউরিয়া সার উত্তোলন করে আমরা নিজেরাও গ্রাহকদের কাছে লজ্জিত। নিম্নমানের ও গুণগতমান কমে যাওয়ায় এসব সার কৃষকরা সহজে নিতে চাচ্ছে না। আবার নিলেও পরক্ষণেই এসে নানা প্রশ্নবানে জর্জরিত করছে। তিনি বলেন, বাফার লেবার, গুদাম ও বিসিআইসির একশ্রেণির কর্মকর্তা-কর্মচারির সমন্বয়ে গঠিত সক্রিয় একটি সিন্ডিকেট চক্র বস্তাপ্রতি আনুপাতিক হারে উৎকোচ না পেলে বিভিন্ন কৌশলে তারা ডিলারদের জমাটবাঁধা সার নিতে বাধ্য করছে। এ ব্যাপারে তানোর বিসিআইসির সার ডিলার সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ আলী বাবু বলেন, জমাটবাঁধা সারগুলোর সত্যই গুণগত মান কম, অনেকদিন খোলা আকাশের নিচে পড়ে থাকায় এসব সারের গুণাগুণ কমে গেছে। তিনি বলেন, আমরা নিজেরাও এসব জমাট বাধা সার তুলতে চাই না। কিন্তু লাইসেন্স টিকিয়ে রাখতে বাধ্য হয়েই আমাদের এসব সার উত্তোলন করতে হচ্ছে। এ ব্যাপারে তানোর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম বলেন, সারের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়া গেলে বিষয়টি গুরুত্বসহকারে খতিয়ে দেখা হবে। তিনি বলেন, সারের বিষয়ে কৃষকের কাছে থেকে তিনি এখানো কোনো অভিযোগ পাননি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ