বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনার তলবে ঢাকায় গেছেন সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের চার শীর্ষ নেতা। সোমবার রাতে ঢাকায় পৌঁছান তারা। আজ মঙ্গলবার গণভবনে তাদের সাথে কথা বলবেন শেখ হাসিনা। ঢাকায় গেছেন সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শফিকুর রহমান চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন খান, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদ ও সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন।
জানা গেছে, সম্প্রতি গোয়েন্দা প্রতিবেদনে সিলেট আওয়ামী লীগের অনৈক্য, সাংগঠনিক দুর্বলতা ও ওঠে আসে কোন্দলের নানা তথ্য। এ ছাড়া সিলেট আওয়ামী লীগের কোন্দলও প্রকাশ্য হচ্ছে। গত ১০ অক্টোবর রাতে সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের ১৮নং ওয়ার্ডের সম্মেলন ছিল। সেখানে ভোট ছাড়াই নিজের পছন্দের প্রার্থীকে ওয়ার্ড সেক্রেটারি করতে গিয়ে তোপের মুখে পড়েন মহানগর আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন। এক পর্যায়ে নেতা-কর্মীরা উত্তেজিত হয়ে সম্মেলনস্থলে ভাঙচুর শুরু করেন। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে দ্রুত সটকে যান জাকির। পরে নগর আ’লীগের সভাপতি মাসুক উদ্দিন আহমদ ওই ওয়ার্ডে কমিটি স্থগিত রাখার ঘোষণা দেন। গত ২২ অক্টোবর সিলেট নগর আওয়ামী লীগের ৬নং ওয়ার্ডের সর্বশেষ কমিটির সহসভাপতি সৈয়দ আতিকুর রব চৌধুরী জুয়েল সংবাদ সম্মেলন করেন। তিনি নগর আ’লীগের সম্পাদক জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে তুলেন নানা অভিযোগ। ‘নিজের স্বার্থ হাসিলের উদ্দেশ্যে’ জাকির ‘পকেট কমিটি’ গঠন করছেন বলে অভিযোগ করেন জুয়েল। ওয়ার্ড কমিটি নিয়ে জাকিরের ওপর আরো অনেকের ক্ষোভ আছে বলে জানা গেছে। এছাড়া
জেলা আওয়ামী লীগেও চরছে ব্যক্তিকেন্দ্রিক ক্ষমতা কুক্ষিগতের লড়াই। সিলেট সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটি গঠনতন্ত্র না মেনে করা হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠেছে। গত ২৫ অক্টোবর সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মী সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন। সদর আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আমির উদ্দিন বলেন, ‘বিতর্কিত ব্যক্তিকে দিয়ে রাতের আঁধারে কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। যাকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে, সেই হিরণ মিয়া করতেন বিএনপির রাজনীতি। তিনি যুক্তরাজ্যে বিএনপির পদবিদারী নেতা ছিলেন।’ ঘোষিত কমিটি বাতিলের দাবি জানান তারা। সদরে কমিটি নিয়ে গত ২৯ অক্টোবর দেখা দেয় উত্তেজনা। কমিটির পক্ষে-বিপক্ষে মিছিল বের করা হয় একই সময়ে। পরে তেমুখী পয়েন্ট এলাকায় উভয়পক্ষ মুখোমুখি হয়। পুলিশ মধ্যখানে ব্যারিকেড দিয়ে সরিয়ে দেয় উভয়পক্ষকে। এদিকে, গত ২ নভেম্বর সিলেটের বিশ্বনাথ পৌরসভার প্রথম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সিলেট আওয়ামী লীগের দুই হেভিওয়েট নেতা শফিকুর রহমান চৌধুরী ও আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর এলাকা হওয়া সত্ত্বেও সেখানে ভরাডুবি ঘটেনৌকা প্রতীকের প্রার্থীর।
আওয়ামী লীগ সূত্র বলছে, সিলেটে দলের সাংগঠনিক অবস্থায় নিয়ে ক্ষুব্ধ কেন্দ্র। এরই প্রেক্ষিতে জেলা ও মহানগরের চার নেতাকে ঢাকায় তলব করা হয়েছে। এদিকে, আগামী বছরের জুনের পর সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচন হওয়ার কথা। গত দুই মেয়াদে এখানে বিএনপির প্রার্থীর কাছে ধরাশায়ী হয়েছে আওয়ামী লীগ। এবার যাতে আ’লীগের মেয়র প্রার্থী বিজয়ী হতে পারেন, সেদিকে দলটি জোর দিচ্ছে। এ বিষয়টি নিয়েও সিলেটের নেতাদের সাথে কথা বলবেন দলের সভানেত্রী শেখ হাসিনা। এ বিষয়ে সিলেট বিভাগে আওয়ামী লীগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন বলেন, সাংগঠনিক বিষয়ে আলোচনার জন্য তাদের ডাকা হয়েছে। দলের ঐক্য প্রয়োজন। সামনে জাতীয় সম্মেলন রয়েছে। সে বিষয়ে আলোচনা হতে পারে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।