Inqilab Logo

শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বার বার স্মৃতিসৌধের স্থান পরিবর্তন মাঝ পথে থেমে গেছে নির্মাণ কাজ

| প্রকাশের সময় : ১৭ ডিসেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

নজির হোসেন নজু, সৈয়দপুর (নীলফামারী) থেকে : সৈয়দপুরে মুক্তিযুদ্ধের ৪৫ বছরেও শহীদদের স্মরণে নির্মাণাধীন স্মৃতিসৌধের কাজ শেষ হয়নি। দফায় দফায় স্থান পরিবর্তন করার পর শহরের গোলাহাটে স্মৃতিস্তম্ভ ও ডাকবাংলোর বিপরীতে স্মৃতিসৌধ নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। কিন্তু কাজ আজও শেষ হয়নি। ডিসেম্বর মাস এলেই এগুলোর তৈরির কাজে তোড়জোড় শুরু হয়। তারপর ঝিমিয়ে পড়ে সকল কার্যক্রম। সারাদেশে ২৫ মার্চ কাল রাতে স্বাধীনতা লড়াই শুরু হলেও নীলফামারী জেলার অবাঙালি অধ্যুষিত সৈয়দপুরে দুইদিন আগে অর্থাৎ ২৩ মার্চ প্রত্যক্ষ মুক্তিযুদ্ধের লড়াই শুরু হয়। আর শেষও হয় দেশ শক্রমুক্ত হওয়ার দুইদিন পর ১৮ ডিসেম্বর। মুক্তিযুদ্ধ এদেশ ও জাতির অতুুলনীয় গৌরবের এক অবিস্মরণীয় অধ্যায়। ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী সশস্ত্র সংগ্রামের বিজয়ে সমুজ্বল এই মুক্তিযুদ্ধ স্মরণ করিয়ে দেয় বাঙালির অভূতপূর্ব দেশপ্রেম ও গৌরবময় বীরত্বের কথা। মহান মুক্তিযুদ্ধের ৪৫ বছর পর আজও সৈয়দপুরে নির্মিত হয়নি কোন স্মৃতিসৌধ। অবশেষে শহরের গোলাহাটে বধ্যভূমিতে দায়সারা গোছের স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে এই কাজে প্রায় ৯ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে। কিন্তু এখনও শেষ হয়নি। অপরদিকে বার বার স্থান পরিবর্তন করে ক্যান্টনমেন্ট সড়কে স্মৃতিস্তম্ভ¢ নির্মাণের কাজ শুরু হলেও কাজ শেষ হয়নি। এতেও প্রায় ১১ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে। ২৩ জুন সেনানিবাসে হানাদারবাহিনী ও তাদের দোসররা একই দিনে প্রায় ৩৫০ জনকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। এসব পরিবারকে একটি বিশেষ ট্রেনে নিয়ে গিয়ে গোলাহাটে সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার পেছনে নামিয়ে ব্রাশ ফায়ারে হত্যা করা হয়। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে সৈয়দপুরে এটি মূলত সবচেয়ে বৃহত্তম গণহত্যা। এ হত্যাকান্ডের আগে ২৪ মার্চ গ্রেফতার হন এমপি ডা. জিকরুল হকসহ ডা. বদিউজ্জামান, ডা. ইয়াকুব আলী, যমুনা প্রসাদ কেডিয়া, রামেশ্বরলাল আগরওয়ালা, নারায়র প্রসাদ, কমলা প্রসাদ প্রমুখ। এদের স্থানীয় সেনানিবাসে রেখে নির্মম নির্যাতন চালানো হয়। ১২ এপ্রিল তাঁদের চোখ-মুখ বেঁধে নিয়ে যাওয়া হয় রংপুর সেনানিবাসের পশ্চিম পাশে উপশহরে ঘাঘট নদীর তীরে সেখানে সারিবদ্ধভাবে দাঁড় করিয়ে হত্যা করা হয় গুলি করে। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ রেলওয়ে কারখানার অভ্যন্তরে শহীদ স্মৃতিসৌধ ও শিশুপার্কে শহীদ স্মৃতিফলক নির্মাণ করেছে। এই স্মৃতিসৌধে রেলের পশ্চিম জোনের সাতজন শহীদের নাম খোদাই করে রাখা হয়েছে। রেল কারখানার গেটে একটি ছোট স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করা হয় শ্রমিকদের চাঁদার টাকায়। মুক্তিযুদ্ধের পরবর্তী সময়ে জন্ম গ্রহনকারীদের সংগঠন প্রজন্ম ’৭১ নিজ উদ্যোগে শহরের জিআরপি মোড়ে শহীদদের স্মরণে নামফলক স্মৃতি অম্লান নির্মাণ করেছে মাত্র। স্বাধীনতা যুদ্ধের অমর শহীদদের স্মৃতি রক্ষার্থে সৈয়দপুর শহরে শহীদদের নামে কিছু সড়ক ও প্রতিষ্ঠান নামকরণ করা হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ