Inqilab Logo

শুক্রবার ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

পিরোজপুরে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে অবৈধ ইজিবাইক

এস. এম. সোহেল বিল্লাহ, পিরোজপুর থেকে | প্রকাশের সময় : ১৫ নভেম্বর, ২০২২, ১২:০০ এএম

পিরোজপুর শহরে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ব্যাটারি চালিত অবৈধ ইজিবাইক। এতে প্রায়ই ঘটে দুর্ঘটনা। অবৈধ ব্যাটারি চালিত ইজিবাইকের সংখ্যা প্রতিনিয়তই বেড়েই চলেছে। এসব অটো চালকদের জানা নেই ট্রাফিক নিয়ম কানুন, নেই ড্রাইভিং লাইসেন্সও। যত্রতত্র তারা করছেন পার্কিং। এসব অবৈধ ব্যাটারি চালিত ইজিবাইকের কারণে বেড়েছে লোডশেডিং।
সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পিরোজপুর সদরে ইজিবাইক চার্জিং স্টেশন আছে ২০টি। এসব স্টেশনে প্রতিদিন গড়ে ১৬০০ থেকে ১৮০০ ইউনিট পর্যন্ত বিদ্যুৎ খরচ হয়। সবমিলিয়ে মাস শেষে প্রায় ৫০০০০ থেকে ৫৫০০০ ইউনিট পর্যন্ত বিদ্যুৎ খরচ হয়।
বিদ্যুৎ অফিসের সহকারি প্রকৌশলী রায়হান জানান, অবৈধ ব্যাটারি চালিত ইজিবাইক চার্জিং স্টেশনগুলো বন্ধে আমাদের একটি টিম কাজ করছে। ইতোমধ্যে আমরা অনেকগুলো অবৈধ ব্যাটারি চালিত ইজিবাইক চার্জিং স্টেশন বন্ধ করেছি এবং আমাদের এই কাজ অব্যাহত থাকবে।
জানা গেছে, শহরের আয়তনের তুলনায় ব্যাটারি চালিত ইজিবাইক চলাচল বেশি হওয়ায় সৃষ্টি হয় যানজট। এসব অটো চলাচল করে বেপরোয়া গতিতে। ইজিবাইকের এমন দৌরাত্ম্যে সাধারণ মানুষকে চলাচলের সময় পড়তে হয় দুর্ঘটনার কবলে। অনেক সময় দেখা মেলে, ১০/১২ বছরের কিশোরেরাও এসব অটো চালাচ্ছে। তাদের নেই কোনো প্রশিক্ষণ ও ড্রাইভিং লাইসেন্স। বোঝে না ট্রাফিক নিয়ম-কানুন। নেই গাড়ি চালানোর নূন্যতম দক্ষতা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ৮ম বাংলাদেশ চীন মৈত্রী সেতু উদ্বোধনের পর থেকে কাউখালী ও রাজাপুর থেকে ব্যাটারি চালিত ইজিবাইক জেলা শহরে প্রবেশ করে যানজট পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ করে তোলে। সদর হাসপাতাল রোড, কলেজ রোড ও শহরের মধ্যে অবাধ বিচরণ এসব যানবাহনের। স্কুলগামী শিক্ষার্থীসহ অসুস্থ রোগী চলাচলেও বেশ বেগ পেতে হয়।
স্থানীয়রা জানান, যত্রতত্র গাড়ি থামিয়ে যাত্রী ওঠানামার কারণে দুর্ভোগ বাড়ছে কয়েকগুণ। এতে ঘটে দুর্ঘটনা, ব্যাহত হয় অন্য যানবাহন চলাচল। ইজিবাইকের জন্য শহরে নির্ধারিত কোনো স্ট্যান্ড না থাকায় যেখানে-সেখানে গাড়ি পার্কিং করে রাখা হয়। ইজিবাইকের এমন বেপরোয়া চলাচল আর দৌরাত্ম্য থেকে বাঁচতে চান তাঁরা।
পথচারী শামসুর রহমান বলেন, ব্যাটারি চালিত ইজিবাইক বেপরোয়া চলাচলের কারণে শহরের রাস্তায় ভোগান্তি হয়। ঠিকমতো চলাফেরাও করা যায় না।
ইজিবাইক যাত্রী ইলিয়াস হোসেন জানান, যারা ইজিবাইক চালান, তারা অধিকাংশ ট্রাফিক আইন ও ট্রাফিক সাইন বোঝেন না, আবার যেখানে-সেখানে যাত্রী দেখলেই দাঁড়িয়ে পড়েন। এ সময় পেছনে থাকা যানবাহন ধাক্কা দেয়। এতে মাঝে মাঝে চরম দুর্ঘটনার শিকার হয় সাধারণ মানুষ।
ইজিবাইক মালিক সমিতির সভাপতি মজনু তালুকদার জানান, আমাদের পৌরসভার রেজিস্ট্রেশনকৃত ৭০০ ইজিবাইক/অটোরিকশা আছে। কিন্তু শহরে অনেক বেশি চলাচল করে। পৌরসভা থেকে ইজিবাইকের নিবন্ধন প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। অটোরিকশাগুলো একটা নিয়ম-নীতির মধ্যে আসলে শহরের যানজট কমবে। সেই সঙ্গে এটি চমৎকার শহরে রূপান্তরিত হবে।
এ প্রসঙ্গে পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তা বনি আমিন জানান, আমরা পৌর পরিষদের মিটিংয়ে এই বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছি। যারা ইজিবাইক মালিক ছিল তাদের বলেছি আপনাদের যাদের অটোর লাইসেন্স নাই তারা দ্রুত লাইসেন্স নিশ্চিত করবেন। আর ৮ম বাংলাদেশ চীন-মৈত্রী সেতুু খুলে দেয়ার পর থেকে কাউখালী ও রাজাপুর থেকে ব্যাটারি চালিত ইজিবাইক এসে পৌরসভার ভেতর যানজট সৃষ্টি করছে। আমরা তাদের টোল ঘরের কাছে আটকে দেয়ার ব্যবস্থা করব। বর্তমানে পৌরসভার রেজিস্ট্রেশনকৃত ৩০০ অটো রিকশা, ২০০ ইজিবাইক ও ১০০ মিশুক আছে। তিনি আরো বলেন, আমাদের জনবল সঙ্কটে এই কাজগুলোতে সময় লাগছে। তবে দ্রুত পিরোজপুর শহরের ভেতর যতগুলো ইজিবাইক/অটোরিকশা আছে সবগুলো আমরা লাইসেন্স এর আওতায় নিয়ে আসব।
এ বিষয়ে সদর থানার ওসি আ. জা. মো. মাসুদুজ্জামান মিলু জানান, ৮ম বাংলাদেশ চীন-মৈত্রী সেতু উদ্বোধনের পরে কাউখালী, রাজাপুর ও বিভিন্ন এলাকা থেকে অটোরিকশায় মানুষ আসা যাওয়া করে। যে কারণে বিশাল যানজটের সৃষ্টি হয়। আমরা ট্রাফিক পুলিশের সহায়তায় এবং আমাদের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাঈদুর রহমানের নির্দেশনার আলোকে যানজট সহনীয় পর্যায়ে রাখার ব্যাপারে আমরা সকলে আন্তরিকভাবে কাজ করছি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ