Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সিলেটে জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের মানববন্ধন

মাদরাসার স্বতন্ত্র শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তকসহ ১৩ দফা দাবি

সিলেট থেকে আবুল কালাম আজাদ | প্রকাশের সময় : ১৪ নভেম্বর, ২০২২, ৬:১৪ পিএম

মাদরাসার স্বতন্ত্র শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক প্রণয়নসহ ১৩ দফা দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীন সিলেট জেলা ও মহানগর শাখা। গতকাল সোমাবার বিকালে সিলেট সিটি পয়েন্টে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। মানববন্ধন শেষে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।

সিলেট মহানগর শাখার সভাপতি মাওলানা আবু সালেহ মো: কুতবুল আলম এর সভাপতিত্বে এবং সিলেট জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মাওলানা ছরওয়ারে জাহানের পরিচালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন অধ্যক্ষ মাওলানা মো: আতাউর রহমান, সভাপতি, কানাইঘাট উপজেলা, মাওলানা মো: ফরিদ উদ্দিন আতহার, অধ্যক্ষ, ফেঞ্চুগঞ্জ মোহাম্মদিয়া কামিল মাদরাসা, মাওলানা মো: আব্দুশ শাকুর, উপাধ্যক্ষ, ফতেহপুর কামিল মাদরাসা, মাওলান মো: ফয়জুল­াহ বাহার, উপাধ্যক্ষ শাহজালাল জামেয়া কামিল মাদরাসা, মাওলানা মো: শিহাব উদ্দিন আলীপুর, অধ্যক্ষ, রাখালগঞ্জ ফাযিল মাদরাসা, মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, কেন্দ্রীয় সদস্য, বাংলাদেশ আঞ্জুমানে আল ইসলাহ, মাওলানা মাসুক আহমদ, সহ-সভাপতি জকিগঞ্জ উপজেলা, মাওলানা এম এ সবুর, সভাপতি, গোলাপগঞ্জ উপজেলা, ড. মাওলানা সৈয়দ শহীদ আহমদ বোগদাদী, অধ্যক্ষ, মাদারবাজার আলিম মাদরাসা, মাওলানা মো: আব্দুল ওয়াদুদ চৌধুরী, সুপার, বোয়ালজুড় দাখিল মাদরাসা, মাওলানা মো: কামাল হোসেন, সহ-সভাপতি বিয়ানী বাজার উপজেলা, অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুল মুক্তাদির খান, সদস্য, সিলেট জেলা, মাওলানা সৈয়দ কুতবুল আলম, সুপার, মোহাম্মদিয়া দাখিল মাদরাসা।

সিলেট জেলার বিভিন্ন উপজেলার জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের দায়িত্বশীল নেতৃবৃন্দসহ মাদরাসা শিক্ষক কর্মচারীগণ স্বতস্ফূর্তভাবে এতে অংশগ্রহণ করেন। মানববন্ধনে নেতৃবৃন্দ মাদরাসার জন্য স্বতন্ত্র শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক প্রণয়নসহ ১৩ দফা দাবিতে বক্তব্য প্রদান করেন।

বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের নেতৃবৃন্দ তাদের বক্তব্যে বলেন, মাদরাসা শিক্ষার উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রীর অবদান এদেশের আলেম-ওলামা, পীর মাশায়েখ বিশেষ করে মাদ্রাসা শিক্ষকদের ঐতিহ্যবাহী সংগঠন বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীন কৃতজ্ঞতার সাথে আজীবন স্মরণে রাখবে। ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা, কওমি মাদরাসার দাওরায়ে হাদীসকে স্নাতকোত্তর (মাস্টার্স) সনদের মান প্রদান, মাদরাসা শিক্ষকদের জনবল কাঠামোর বিভিন্ন ক্ষেত্রে বৈষম্য দূরীকরণ, মাদরাসার ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন, মাদরাসা অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠা, ৫৬০ টি মডেল মসজিদ নির্মাণ, পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জাতীয় দিবস ঘোষনাসহ বহুমুখী পদক্ষেপ ইসলামি শিক্ষার ইতিহাসে স্বর্নাক্ষরে লেখা থাকবে। যুগের চাহিদা পূরণে রূপকল্প ৪১, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের প্রেক্ষাপটে শিক্ষা ব্যবস্থায় শিক্ষাক্রম, পাঠ্যপুস্তক পরিমার্জন, উন্নয়ন কিংবা যুগোপযোগী করা নিয়ে কারো দ্বিমত নেই। শতকরা ৯১% মুসলমান যে দেশে বসবাস করে সে দেশে কুরআন সুন্নাহ, মুসলিম ঐতিহ্য-কৃষ্টি এবং দীর্ঘদিনের লালিত সংস্কৃতির সাথে সাথে বর্তমান চাহিদাকে সমন্বয় করে দেশ বরেণ্য আলেম ওলামাদের অংশগ্রহণে একটি যুগোপযোগী শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক তৈরি হবে এটাই ছিল আমাদের প্রত্যাশা। বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের নেতৃবৃন্দের সাথে শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের বিশেষজ্ঞদের অনেক বৈঠকে ব্যাপক পর্যালোচনা হয়।

আলেম-ওলামাগণ বারবার একই দাবী করেন যে, মুসলিম জনগোষ্ঠির ইমান-আকিদা, শিক্ষা সংস্কৃতি সমুন্নত রেখে আধুনিক বিষয়সমূহ অন্তর্ভুক্তি ও মাদরাসা শিক্ষার বৈশিষ্ট্য উপযোগী করে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক সংস্কার করতে হবে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে ২০২২ইং সনের জন্য এনসিটিবি কর্তৃক ৬২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ৬ষ্ঠ শ্রেণির স্কুলের জন্য যে ১০টি বই এবং মাদরাসার জন্য ধর্মশিক্ষা বাদ দিয়ে বাকী ০৯টি বই (বাংলা, ইংরেজি, ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান, গণিত, শিল্প সংস্কৃতি, স্বাস্থ্য সুরক্ষা, জীবন জীবিকা, ডিজিটাল প্রযুক্তি, বিজ্ঞান) পাইলটিং/পরীক্ষামূলকভাবে পাঠদান করা হয়েছে এবং ২০২৩ইং সাল থেকে ৬ষ্ঠ, ৭ম শ্রেণির পাঠ্যপুস্তক হিসেবে ঐ সমস্ত বই স্কুল ও মাদরাসায় বাধ্যতামূলকভাবে পড়াতে হবে মর্মে ঘঈঞই ঘোষণা দিয়েছে, সেগুলোর বহু বিষয় ইসলামী আদর্শ ও সংস্কৃতির সাথে সাংঘর্ষিক ও আপত্তিকর। অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় বর্ণিত পাঠ্যপুস্তক (জাতীয় শিক্ষা নীতি ২০১০ এ বর্ণিত) মাদরাসা শিক্ষার উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য এবং স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য উপেক্ষা করে রচিত হয়েছে। পাঠ্যপুস্তকে সন্নিবিশিত অধিকাংশ ছবি, চিত্র, শব্দ, বাক্য, তথ্য ও উপাত্ত ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের মর্মাহত এবং তাঁদের সন্তাদের ভবিষ্যৎ শিক্ষা নিয়ে শঙ্কিত করে তুলবে। অধিদপ্তরসমূহ ইতোমধ্যে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ শুরু করে দিয়েছে। সেখানে ৬ষ্ঠ শ্রেণির ০৯টি বইয়ের মধ্যে কুরআন, সুন্নাহ’র কোনো বানী, কিংবা শিক্ষা, মুসলিম মনীষী, বিজ্ঞানী, কবি, সাহিত্যিকদের বাণী ও উদ্ধৃতি, মুসলিম জীবনাচার ইত্যাদি কোন বিষয় স্থান পায়নি। উপরন্তু আপত্তিজনক বিষয় উপস্থাপিত হয়েছে।



 

Show all comments
  • Syed Kutbul Alom ১৪ নভেম্বর, ২০২২, ৭:০৪ পিএম says : 0
    আপত্তিকর বিষয় গুলো আমি সংগ্রহ করে পড়েছি। অত্যন্ত দুঃখ জনক। আপত্তিকর বিষয় গুলো কোনো ভাবেই মাদ্রাসা বা স্কুলে পাঠ্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত করা যাবেনা
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ