রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
যমুনার করাল গ্রাসে ভিটে বাড়ি হারিয়ে দেওয়ানগঞ্জ উপজেলায় প্রায় দুই হাজারের বেশি পরিবার সর্বহারা। তাদের বসবাস এখন দেওয়ানগঞ্জ-বাহাদুরাবাদ ঘাটের পরিত্যক্ত রেল লাইনের ধারে। বর্তমানে প্রতিটি মানুষ রয়েছে শতভাগ স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে।
ভাঙনে যমুনা নদীর গতিপথ পরিবর্তন হওয়াই ফেরি চলাচল সুবিধার্থে বাহাদুরাবাদঘাট ও রেললাইন চার জায়গায় প্রতিস্থাপিত হয়। ২০০৪ সালে ফেরি পারাপার ও ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়। ২০০৫ সাল থেকে চলতি বছর পর্যন্ত নদী ভাঙনে নিঃশ^ হয়ে প্রায় ২ হাজারের বেশি পরিবার মাথাগুজার ঠাঁই পেয়েছে পরিত্যক্ত রেললাইনগুলোতে। জনবসতিপূর্ণ রেললাইনগুলো পরিচিতি লাভ করেছে বালুগ্রাম লাইন, তালতলা লাইন, গুজিমারি লাইন, ভেলামারি লাইন নামে। নিঃশ^ মানুষগুলো বেচেঁ থাকার জন্য অস্বা¯্য’্যকর পরিবেশে প্রতিদিন সংগ্রাম করছে নানা প্রতিকুলতার সাথে। এখানে বসবাসের ঘরগুলো একচালা ছাপড়া বিশিষ্ট। যার চারপাশ স্যাঁতস্যাঁতে পরিবেশ। ঝুপড়ি জঙ্গল। যা এডিস মশাসহ বিভিন্ন বিষাক্ত পোকামাকরের আবাসস্থল।
খাবার (নলকূপ) পানিতে অতিরিক্ত মাত্রায় আয়রণ। এই পানি ব্যাবহারে চোখ জ¦লা পড়া করে। অনেকের দাঁতের রং হলদে হয়ে দন্ত সমস্যা দেখা দিচ্ছে। রান্নায় ভাত-তরকারি রং কালো হয়। যা দেখতে কুরুচিপূর্ণ হয়। একই পুকুর, বিল, ডোবায় মানুষ এবং গবাদি পশু গরু, ছাগল, মহিষ গোসল করে থাকে। পানি দূষিত হয়ে মানুষ্য ব্যাবহারের অনুপোযোগী হয়েছে। গোসলের সময় বয়স্ক মানুষেরা সাবধানতা অবলম্বন করলেও শিশু কিশোরেরা ভুলবশত দূষিত পানি পান করে থাকে। এতে পেটের অসুখসহ বিভিন্ন পানিবাহিত রোগে ভোগে তারা। এখানকার ছোট-বড় প্রায় বেশির ভাগ মানুষ খোস-পাঁচড়া ও চর্মরোগে আক্রান্ত।
সরেজমিনে দেখা যায়, রেললাইনে বাসকারী হাজরা (৭০) একটি ঘরে চারটি ছাগল ও একটি বিড়াল নিয়ে থাকে। এভাবে অনেকেই থাকার ঘরে গবাদি পশু রাখে। ফলে যেখানে সেখানে ছড়িয়ে আছে গবাদি পশুর বিষ্টা আবর্জনা। দুর্গন্ধ যেনো পুরো এলাকা জুড়ে। আবার খোলা ল্যাট্রিন ব্যাবহারের কারণে এখান থেকেও দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। সর্বহারা মোস্তফা (২৫) জানায়, আমাদের ভিটা-বাড়ি, ফসলি জমি সব যমুনা নদীতে। শত সমস্যা নিয়ে লাইনে থাকি। টাকা হলে ভিটে কিনে আবার বাড়ি করবো। রেললাইনে বসবাসকারীরা উপজেলার চিকাজানি ও চুকাইবাড়ি ইউনিয়নের বাসিন্দা।
চিকাজানি ইউপি চেয়ারম্যান আশরাফুল ইসলাম আক্কাস ও চুকাইবাড়ি ইউপি চেয়ারম্যান রাশেদুজ্জামান সেলিম খান জানান, ‘নদী ভাঙনের শিকার মানুষগুলোকে সবসময় সহায়তা করে থাকি। সরকারি গুচ্ছগ্রামে তাদের পুনবাসন করার চেষ্টা চলছে’। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ ও মানবতার জীবন যাপন থেকে মুক্তির স্বপ্নে দিনের পর দিন হাড় ভাঙা পরিশ্রম করে যাচ্ছে সর্বহারা মানুষগুলো।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।