Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আন্দোলনে বেসরকারি পাট ও বন্ত্রকল শ্রমিক কর্মচারীরা, ১৮ নভেম্বর শ্রম প্রতিমন্ত্রীর বাসভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি

খুলনা ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ১৩ নভেম্বর, ২০২২, ৪:৫৮ পিএম

খুলনার শিরোমণি ও মীরেরডাঙ্গা শিল্পাঞ্চলের বন্ধকৃত ব্যক্তিমালিকানাধীন সকল জুট মিল চালু ও শ্রমিক কর্মচারীদের চুড়ান্ত পাওনা পরিশোধসহ ৬ দফা দাবীতে খুলনার রাজপথে ভূখা মিছিল ও জেলা প্রশাসনের কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন এবং অবস্থান কর্মসুচি পালিত হয়েছে। বেসরকারি পাট, সুতা, বন্ত্রকল শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশনের উদ্যোগে পূর্বঘোষিত কর্মসুচির অংশ হিসাবে আজ রোববার তারা এ কর্মসুচি পালন করে। শিল্পঞ্চলের বিভিন্ন জুট মিলের শ্রমিক-কর্মচারীরা খন্ডখন্ড মিছিল করে ডাকবাংলা চত্বরে এসে জড়ো হয়। পরে তারা একত্রিত হয়ে সকাল ৯টার পর ভূখা মিছিল বের করে। মিছিলটি শহরের গুরুত্বপুর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেয়। সকাল ১০টায় তারা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়ে অনশন কর্মসুচি শুরু করে এবং দুপুর ১টায় বন্ধ জুট মিলের শ্রমিক বীর মু্িক্তযোদ্ধা আসাবউদ্দিনকে জুস পান করিয়ে অনশন ভঙ্গ করান ফেডারেশনের নেতৃবৃন্দ। কর্মসুচি থেকে আগামী ১৮ নভেম্বর শুক্রবার বিকাল ৩টায় শ্রম প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান এমপির রেলিগেটস্থ বাসভবনের সামনে অবস্থান কর্মসুচি পালনের ঘোষণা দেন।

অনশন কর্মসুচি চলাকালে বেসরকারি পাট,সুতা বন্ত্রকল শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশনের সভাপতি শ্রমিক নেতা শেখ আমজাদ হোসেনের সভাপতিত্বে বক্তৃতা করেন ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক গোলাম রসুল খান, ফেডারেশনের সহ-সভাপতি সেকেন্দার আলী, বীর মু্িক্তযোদ্ধা ইঞ্জিল কাজী, লিয়াকত আলী মুন্সি, আজাহার আলী, মোস্তাফিজুর রহমান, কাজী আমির হোসেন, নিজাম উদ্দিন, ইয়াছিন আলী, সাইফুল্লাহ তারেক, রেহেনা বেগম, আবুল হোসেন, মো. জয়, মো. জিন্নাহ, মো. কাজল, মো. তরু, পিয়া বেগম, আকলিমা বেগম, জহুরা বেগম, বিলাল হোসেন, শাহজাহানপ্রমুখ নেতৃবৃন্দ।
অনশনে চলাকালে ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক শেখ আমজাদ হোসেন বলেন, রাষ্ট্রয়াত্ব জুট মিল গুলোর শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধ হয় কিন্তু বেসরকারি জুট মিল গুলোর শ্রমিকরা বছরের পর বছর আন্দোলন সংগ্রাম করেও না খেয়ে বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুবরণ করলেও তাদের পাওনা পরিশোধ করা হয় না। তিনি বলেন শ্রমিকদের দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে দ্রুত সময়ে দাবী মানা না হলে শ্রমিকরা যে কোন মুল্যে জুটমিল গুলোর জায়গা দখল করে প্রত্যেকে দুই কাটা করে জমি দখলে যাবে।
ফেডারেশনের সভাপতি গোলাম রসুল খান বলেন, শ্রম আইন সম্পুর্ন লঙ্ঘন করে গত ২০১৩ সাল থেকে শিল্পাঞ্চলের বেসরকারি জুট মিল গুলো একের পর এক বন্ধ হওয়া শুরু হয়। মিলগুলোর না খাওয়া নির্যাতিত নিপীড়িত অসহায় শ্রমিকরা তাদের পাওনার দাবীতে দীর্ঘ ৮ বছর যাবত রাজপথে আন্দোলন সংগ্রাম করে আসছে। মিল গুলোর মালিকদের কাছে শ্রমিকদের লক্ষ লক্ষ টাকা পাওনা থাকা সত্ত্বেও শ্রমিকরা না খেয়ে অনাহারে-অর্ধাহারে বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুবরণ করছে। তিনি বলেন প্রায় ৮শ শ্রমিক অনাহারে রয়েছে। বিনা চিকিৎসায় মারা গেছে অনেকেই। এখনও অনেকে অর্থাভাবে বিনা চিকিৎসায় ধুঁকেধুঁকে মৃত্যুর দিকে ধাবিত হচ্ছে। অনেক শ্রমিক তার বিবাহযোগ্য কন্যাকে অর্থাভাবে বিবাহ দিতে পারছেন না। বহু শ্রমিক পরিবারের সন্তানদের লেখাপড়া বন্ধ হয়েগেছে। শ্রমিকরা এখন আর কোন আশার বাণী শুনতে চায় না। তারা এখন যে কোন মুল্যে তাদের ন্যায্য পাওনা টাকা চায়। তিনি বলেন আগামী ১৮ নভেম্বর শুক্রবার বিকাল ৩টায় শ্রম প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান এমপির বাস ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসুচি পালনের মধ্যে দিয়ে সমস্যার সমাধান না হলে তাৎক্ষনিক ভাবে আমরণ গণঅনশন, রাজপথ-রেলপথ অবরোধসহ কঠোর কর্মসুচি নিয়ে মাঠ নামা হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ