রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
অব্যাহত দখল ও দূষণ, অপরিকল্পিত নদী ড্রেজিং, বিআইডব্লিউটিএ এর উদাসীনতা, অপরিকল্পিত ব্রিজ নির্মাণ ও ঘাট মালিকদের স্বেচ্ছাচারিতায় যশোরের শিল্প-বাণিজ্য ও বন্দরনগর নওয়াপাড়ার স্পন্দন ভৈরব নদের প্রাণ যায় যায় অবস্থা। নদীর তলদেশ পলিজমে ভরাট হয়ে আসছে। নদীর দু’তীরেই চর জাগতে শুরু করেছে। থমকে যাচ্ছে নদের স্বাভাবিক স্রোতধারা। অবস্থা দৃষ্টে মনে হচ্ছে অচিরেই পায়ে হেটে পার হওয়া যাবে নওয়াপাড়ার ভৈরব নদী। আর পরিস্থিতি এমন হলে মুখ থুবড়ে পড়বে নওয়াপাড়া নদীবন্দর। ধ্বংসের আশংকা রয়েছে হাজার হাজার কোটি টাকার ব্যবসায়ী মোকাম নওয়াপাড়া। বেকার হয়ে পড়বে ১৫ হাজার হ্যান্ডলিং শ্রমিক। পথে বসবে শত শত ব্যাবসায়ী। কেবল হ্যান্ডলিং শ্রমিক ও ব্যবসায়ী নয় পরোক্ষভাবে নদী বন্দরের সাথে যুক্ত মোটরশ্রমিক ও ব্রোকার ইউনিয়নের শ্রমিকরাও চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হবে। ভেঙে পড়বে এ অঞ্চলের অর্থনীতি। দেখা দেবে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতর চরম অবনতি।
ফলে নদী দখলদারদের পাশাপাশি স্বেচ্ছাচারী ঘাট মালিকদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থাগ্রহণের পাশাপাশি বিআইডব্লিউটিএকে নদী বাঁচাতে অচিরেই কার্যকর ভূমিকা গ্রহনের দাবি তুলেছেন সচেতন মহল। তারা সঠিকভাবে নদী খনন ও গাইডওয়াল নির্মাণের দাবি তুলেছেন। সম্প্রতি এ দাবিতে নওয়াপাড়ায় ভৈরব নদে মানববন্দনও করেছে বেশি কিছু স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, নওয়াপাড়া নদী বন্দরের ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় অর্ধ কিলোমিটার জুড়ে নদীর দুই তৃতীয়াংশ পলি জমে চর জেগেছে। এছাড়া নদী বন্দরের নওয়াপাড়া জুট মিল সংলগ্ন এলাকা, বেঙ্গল খেয়াঘাট থেকে নওয়াপাড়া মাছ বাজার পর্যন্ত, নওয়াপাড়া গ্লোবঘাট, তালতলা ঘাট সংলগ্ন এলাকায় অধিক পলি জমে ভরাট হয়ে গেছে। ফলে নদীতে খেয়াপারাপারেও চরম বিড়ম্বনা দেখা দিয়েছে। বিআইডব্লিটিএ সূত্র জানায়, গত ২০২১ সালের ২৪ জুলাই থেকে বিআইডব্লিউটিএ এর প্রকৌশল (সংস্কার) বিভাগের আওতায় ভৈরব নদ সংস্কার তথা ড্রেজিং শুরু হয়। বিআইডব্লিউটিএ এর দুইটি ড্রেজার মেশিন ভৈরব নদে এ খনন কাজ শুরু করে। অভিযোগ রয়েছে, শুরু থেকেই লোকদেখানো ড্রেজিং কার্যক্রম চালায় বিআইডব্লিউটিএ। এবং একটি ড্রেজার বছর ব্যাপিই বন্ধ থাকতে দেখা যায়। অপর মেশিনটি দিয়ে দায়সারা ড্রেজিং কার্যক্রম চালানো হয় যা নদী বন্দরের কোন কাজেই আসেনি।
স্থানীয়দেও অভিযোগ, বিআইডব্লিউটিএ এর প্রকৌশল (সংস্কার) বিভাগের আওতায় ভৈরব নদ সংস্কারের নামে চলা ড্রেজিং কার্যক্রমে দু’চারজন বালু ব্যবসায়ীর স্বার্থরক্ষা ছাড়া বন্দরের কোন কাজে আসেনি। বর্তমানে বিআইডব্লিউটিএর উক্ত মেশিনটিও খুলনা অংশে কাজ করছে। ফলে ভৈরব নদের নওয়াপাড়া অংশের বেহাল দশা আরও শোচনীয় হয়ে দেখা দিচ্ছে।
এ ব্যাপারে নওয়াপাড়া হ্যান্ডলিং শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ফাল্গুন মন্ডল বলেন, ভৈরব নদকে ঘিরে হ্যান্ডলিং শ্রমিক ইউনিয়ন, মোটরশ্রমিক ইউনিয়ন ও ব্রোকার ইউনিয়নের ৫০ হাজারের অধিক শ্রমিক ও তাদের পরিবার প্রত্যক্ষভাবে জীবিকা নির্বাহ করছে। রয়েছে নদী নির্ভর শতশত ব্যবসায়ী ও তাদের পরিবার। তিনি দাবি করেন, এ নদীকে ঘিরে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ১০ লক্ষাধিক মানুষ টিকে আছে। কিন্তু বিআইডব্লিউটিএ এ বন্দরের ক্ষেত্রে বরাবরই চরম উদাসীনতার পরিচয় দিচ্ছে। ফলে নদীটি ধ্বংসের দ্বার প্রান্তে পৌছে গেছে। আমরা একের পর এক আন্দোলন সংগ্রাম করে আসলেও বন্দর কর্তৃপক্ষের কোন ভ্রুক্ষেপ নেই। তিনি অচিরেই নদী খননসহ গাইডওয়াল নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন।
এ ব্যাপারে নওয়াপাড়া নদী বন্দরের সহকারি পরিচালক মাসুদ পারভেজ নদী দখল, দূষণ ও নদী ভরাট হওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, নওয়াপাড়া নদী বন্দর রক্ষায় ভৈরব নদ খনন ও গাইডওয়াল নির্মানের পাশাপাশি বন্দর ব্যাবহারকারীদের নানামুখি সুযোগ সৃষ্টিতে বৃহৎ পরিকল্পনা নিয়ে ইতিমধ্যে বিআডব্লিউটিএ পরিকল্পনা গ্রহন করেছে। এ পরিকল্পনা গৃহিত হলে নওয়াপাড়া নদী বন্দর তার হারানো যৌবন ফিরে পাবে। তিনি দাবি করেন, নওয়াপাড়া নদী বন্দর রক্ষায় সম্প্রতি অবৈধ দখল উচ্ছেদ অভিযান পরিচালিত হয়েছে যা চলমান থাকবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।