বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
খাগড়াছড়ি জেলার মাটিরাঙ্গা উপজেলার সাপমারা গ্রামে অপূর্ব সুন্দর রিসাং ঝর্ণার অবস্থান।।মারমা শব্দ রিছাং-এর অর্থ কোন উঁচু স্থান হতে জলরাশি গড়িয়ে পড়া।ঝরনায় যাওয়ার পথটাও দারুণ রোমাঞ্চকর। দূরের উঁচু-নিচু সবুজ পাহাড়। জুমঘর, বুনো ঝোপসহ নাম না জানা অসংখ্য বুনো ফুল যেন অভ্যর্থনা জানাবে। পরিবেশটাই এমন যে মুগ্ধ না হয়ে উপায় নেই। যেদিকে চোখ যায় শুধু সবুজের সমাহার। পাহাড়ের বিভিন্ন পাখির কিচিরমিচির শব্দ। রিছাং ঝর্ণার অপর নাম তেরাং তৈকালাই। আলুটিলা পর্যটন কেন্দ্র হতে এই ঝর্ণার দূরত্ব মাত্র ৩ কিলোমিটার।
রিসাং ঝর্ণা থেকে মাত্র ২০০ গজ ভেতরে আরও একটি ঝর্ণা রয়েছে। যা রিছাং ঝর্ণা দুই বা ‘অপু ঝর্ণা’ নামে পরিচিতি লাভ করেছে। ভ্রমণকারীরা যেন সহজে ঝর্ণায় পৌঁছাতে পারেন সেজন্য এখানে পাকা সিঁড়িপথ তৈরি করা হয়েছে। প্রায় ৩০ মিটার উচ্চতার পাহাড় থেকে পানি আছড়ে পড়ার মনোরম দৃশ্য ঘন্টার পর ঘন্টা উপভোগ করার মত। আর চাইলে রিসাং ঝর্ণার জলে অনায়াসেই শরীর জুড়িয়ে নিতে পারবেন।
খাগড়াছড়ি (Khagrachhari) জেলা শহর থেকে রিচাং ঝর্ণার দূরত্ব প্রায় ১১ কিলোমিটার। খাগড়াছড়ি থেকে জীপ, প্রাইভেট কার বা মাইক্রোবাসে ঝর্ণার পাদদেশে এসে পাহাড়ি রাস্তায় কিছুটা পথ পায়ে হেঁটে এগিয়ে গেলে অপূর্ব এই ঝর্ণাটি দর্শন করতে পারবেন।
কিভাবে যাবেনখাগড়াছড়ি থেকে সরাসরি চান্দের গাড়ি বা সিএনজি ভাড়া নিয়ে রিসাং ঝর্ণা দেখতে যেতে পারবেন। তবে সেক্ষেত্রে ঝর্ণা থেকে প্রায় ৫০০ মিটার দূরে নেমে বাকি পথ হেটে যেতে হবে।
এছাড়া রিসাং ঝর্ণা দেখতে হলে প্রথমে খাগড়াছড়ি সদর থেকে লোকালে বাস বা চান্দের গাড়িতে চড়ে ঢাকার পথে ১০ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত আলুটিলা গুহার সামনে চলে আসুন। আলুটিলা থেকে পরের গন্তব্য প্রায় দুই কিলোমিটার দূরের হৃদয় মেম্বারের এলাকা। আলুটিলা থেকে হৃদয় মেম্বারের এলাকায় যেতে লোকাল বাসের ভাড়া জনপ্রতি ৫ টাকা। হৃদয় মেম্বারের এলাকা থেকে দুই কিলোমিটার পায়ে হেটে বা বাইকে চড়ে রিছাং ঝর্ণায় যেতে হয়। শুধুমাত্র যাওয়ার জন্য জনপ্রতি বাইকের ভাড়া ৫০ টাকা, আর ফিরে আসার ভাড়া জনপ্রতি ১০০ টাকা।
আলুটিলা গুহা, বৌদ্ধ মন্দির, দেবতা পুকুর, ঝুলন্ত ব্রিজ এবং রিসাং ঝর্ণা কাছাকাছি দূরত্বে অবস্থিত। তাই সবচেয়ে ভালো আপনি যদি এই সবগুলো জায়গা একসাথে ঘুরে দেখেন। এই জায়গা গুলো ঘুরে দেখতে ৪ থেকে ৫ ঘন্টা সময় লাগবে। গাড়ি ঠিক করার সময় কোথায় কোথায় ঘুরবেন তা বলে নিন। সবগুলো জায়গা ঘুরতে ১০-১৫ জনের চান্দের গাড়ি রিজার্ভ করতে ২০০০ থেকে ৩০০০ টাকা লাগবে এবং সিএনজি রিজার্ভ করতে লাগবে ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা। অবশ্যই ভাড়া দরদাম করে ঠিক করুন যদিও খাগড়াছড়ি জিপ পরিবহণ মালিক সমিতি কতৃক নির্ধারিত ভাড়া ৫০০০ টাকা।
ঢাকা থেকে খাগড়াছড়ি
ঢাকা হতে শান্তি, হানিফ, এস আলম, শ্যামলী, ইকোনো এবং ঈগল পরিবহনের এসি/নন-এসি বাসে চড়ে সরাসরি খাগড়াছড়ি যাওয়া যায়। বাস ভেদে জনপ্রতি ভাড়ার পরিমান নন এসি ৫২০ টাকা এবং এসি ৮৫০ থেকে ১২০০ টাকা।
চট্টগ্রাম থেকে খাগড়াছড়িচট্টগ্রামের অক্সিজেন মোড় থেকে বি আর টি সি ও শান্তি পরিবহণের বাস খাগড়াছড়ি ছেড়ে যায়। সকাল ৭টা থেকে শান্তি পরিবহনের বাস ১-২ ঘন্ট পর পর ছেড়ে যায়। এছাড়া বেশ কিছু লোকাল বাসও খাগড়াছড়ি যায়। নন এসি এইসব বাসের ভাড়া ২৮০ থেকে ৩৫০ টাকার মধ্যে। চট্টগ্রাম থেকে যেতে সময় লাগবে ৪-৫ ঘন্টা।
কোথায় থাকবেনখাগড়াছড়ি শহরে রাত্রি যাপনের জন্য বিভিন্ন মানের আবাসিক হোটেল রয়েছে। রুম দেখে দরদাম করে আপনার পছন্দমত হোটেলে রাত্রিযাপন করতে পারবেন। হোটেলে ভেদে এক রাত অবস্থানের জন্য আপনাকে ৪০০ টাকা থেকে ৩৫০০ টাকা প্রদান করতে হবে। খাগড়াছড়ি শহরে ভালো মানের আবাসিক হোটেলের মধ্যে রয়েছে –
পর্যটন মোটেল: শহরের চেঙ্গী নদী পাড়ে অবস্থিত এই মোটেলের দুই বেডের এসি রুম ভাড়া ২১০০ টাকা এবং নন এসি রুম ভাড়া ১৩০০ টাকা। যোগাযোগ: ০৩৭১-৬২০৮৪৮৫
হোটেল গাইরিং: খাগড়াছড়ি শহরে অবস্থিত এসি, নন এসি, ভিআইপি এসি ও গ্রুপ রুমের সুবিধা সহ শ্রেণী অনুযায়ী ভাড়া ১০০০ থেকে ৩০০০ টাকা। যোগাযোগ: ০৩৭১-৬১০৪১, ০১৮১৫-১৬৩১৭৩
অরণ্য বিলাস: শহরের নারিকেল বাগান অবস্থিত এই হোটেলে টুইন বেড এসি ২৫০০ টাকা, কাপল এসি ২০০০ টাকা, সিঙ্গেল বেড এসি ১৫০০ টাকা, টুইন নন এসি ২০০০ টাকা এবং কাপল নন এসি ১৫০০ টাকা ভাড়া । যোগাযোগ: ০১৮৩৮-৪৯৭২৫৭
গিরি থেবার: খাগড়াছড়ি ক্যন্টনমেন্টের ভিতরে অবস্থিত। ভিআইপি এসি রুম ভাড়া ৩০৫০ টাকা। এসি ডাবল রুম ভাড়া ২০৫০ টাকা। সিংগেল রুম যার ভাড়া ১২০০ টাকা। যোগাযোগ: ০১৮৫৯-০২৫৬৯৪
হোটেল ইকো ছড়ি ইন: যোগাযোগ: ০৩৭১-৬২৬২৫ , ৩৭৪৩২২৫
আর যদি খুবই কম খরচে থাকতে চান তাহলে শাপলা চত্বরের আশেপাশে কিছু বোর্ডিং ধরণের হোটেল আছে সে গুলোতে ৩০০-৪০০ টাকায় থাকতে পারবেন।
কোথায় খাবেনখাগড়াছড়ি শহরের শাপলা চত্বর এবং বাস স্ট্যান্ড এলাকায় বেশ কিছু রেস্টুরেন্ট রয়েছে। এছাড়া পানথাই পাড়ায় অবস্থিত ‘সিস্টেম রেস্তোরা’-তে কফি, হাসের কালাভূনা, বাশকুড়ুল এবং ঐতিহ্যবাহী পাহাড়ি খাবারের স্বাদ নিতে পারেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।