Inqilab Logo

শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

‘এ মুহূর্তে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর প্রয়োজন নেই’

বাংলাদেশ ব্যাংকের নেট রিজার্ভ ২৬ বিলিয়ন ডলার : গভর্নর

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১০ নভেম্বর, ২০২২, ১২:০০ এএম

 বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার বলেছেন, আজ বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার গ্রস রিজার্ভ ৩৪ দশমিক ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এর থেকে ৮ বিলিয়ন ডলার বাদ দিলে যা থাকে সেটিই হচ্ছে নেট রিজার্ভের পরিমাণ। ফলে বর্তমানে নেট রিজার্ভের পরিমাণ ২৬ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার। গতকাল বুধবার আইএমএফ প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক শেষে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে কেন্দ্রীয় ব্যাংক গভর্নর এসব কথা বলেন। এ সময় অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, অর্থ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন উপস্থিত ছিলেন।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর বলেন, আইএমএফ বাংলাদেশের রিজার্ভের পরিমাণ গ্রসে নয়, নেটে দেখাতে বলেছে। এতে আমাদের কোনো আপত্তি নাই। যদিও আমরা বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ গ্রসে দেখাই। আইএমএফ আমাদের নেট রিজার্ভ দেখাতে বলছে। জবাবে আমরা বলেছি, আমাদের হিসাবের মধ্যেই গ্রস ও নেট রিজার্ভ রয়েছে। চাইলে আমরা আলাদা করে দেখাতে পারি। এ নিয়ে আমাদের কোনো সমস্যা নেই। আমরা সবসময় এ বিষয়ে সচ্ছতা রেখেই লেনদেন করি।
তিনি বলেন, আজ বাংলাদেশ ব্যাংকেরর গ্রস রিজার্ভ ৩৪ দশমিক ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। আমাদের কয়েকটি ফান্ডে প্রায় ৮ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ আছে। সেখানে থেকে ৮ বিলিয়ন ডলার বাদ দিলে নেট রিজার্ভ চলে আসবে ২৬ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার। আমাদের যখন রিজার্ভ ৪৮ বিলিয়ন ছিল তখনও আমরা এভাবেই হিসাব করেছি। তিনি বলেন, আমাদের ইভিএফ যেটা, সেটা ১২০ দিনের জন্য ঋণ দিই। আমরা চাইলে সেটা তুলে নিয়ে আসতে পারি। শ্রীলঙ্কাকে দেওয়া ২০ কোটি ডলার আমরা আনার জন্য কাজ করছি। শ্রীলঙ্কার গর্ভনরের সঙ্গে আমি বৈঠক করছি। তিনি বলেছেন, তারা আমাদের লোনটা পরিশোধ করবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গর্ভনর আব্দুর রউফ তালুকদার বলেন, সারের ক্ষেত্রে ভর্তুকির ব্যাপারে আইএমএফ’র সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। আমরা বলেছি, কৃষিখাত হলো আমাদের প্রধান খাত। এই খাত আমাদের বাঁচিয়ে রেখেছে। সুতরাং এই খাতে আমরা ভর্তুকি দিয়ে যাব। পরবর্তী সময়ে এ ব্যাপারে তারা আর কোনো কথা বলেনি।
জ্বালানি খাত নিয়ে আইএমএফ’র বক্তব্যে প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের গর্ভনর বলেন, জ্বালানি খাতে ইতোমধ্যে আমরা দাম বাড়িয়ে আন্তর্জাতিক মূল্যের সঙ্গে সমন্বয় করেছি। তারা বলেছে, এটা যেন আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সবসময় সমন্বয় রাখা হয়। অর্থাৎ আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বাড়লে বাড়াতে হবে, কমলে কমাতে হবে। তাদের সুপারিশ আমরা মেনে নিয়েছি। তবে এই মুহ‚র্তে দাম বাড়ানোর কোনো প্রয়োজন নেই।
আর্থিক খাতের সংস্কার প্রসঙ্গে আইএমএফ’র বক্তব্য কি? জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই মুহ‚র্তে আমাদের খেলাপি ঋণ ১০ শতাংশের নিচে রয়েছে। আইএমএফ’র শর্তও খেলাপি ঋণ ১০ শতাংশের নিচে রাখতে হবে। ফলে এখানে নতুন করে কোনো শর্ত আসেনি। তবে বিভিন্ন ব্যাংকের যে মূলধন ঘাটতি রয়েছে, অর্থাৎ ভেসেল-৩ যে লেভেলে রয়েছে, সব ব্যাংককে সেই স্থানে নিয়ে যেতে হবে।
তিনি বলেন, আমাদের যে ৬১টি ব্যাংক রয়েছে তার মধ্যে অলমোস্ট সবারই ভেসেল-৩ বাস্তবায়ন করা আছে। তবে ৮/১০টি ব্যাংকের ঘাটতি রয়েছে। সেটা আমাদের পূরণ করতে বলেছে। এটা মোট ব্যাংকের সাড়ে ১২ শতাংশ।
উল্লেখ্য, আইএমএফ’র হিসাব অনুযায়ী, বাংলাদেশ ব্যাংকের বর্তমানে রিজার্ভের পরিমাণ ২৬ বিলিয়ন ডলার। রফতানি উন্নয়ন তহবিলের (ইডিএফ) সরবরাহ করা ৭ বিলিয়ন ও শ্রীলঙ্কাকে দেওয়া ২০ কোটি ডলার, গ্রিন ট্রান্সফরমেশন ফান্ড (জিটিএফ) ২০ কোটি, লংটার্ম ফিন্যান্সিং ফ্যাসিলিটি (এলটিএফএফ) তহবিলে ৩ কোটি ৮৫ লাখ, সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে বাংলাদেশ বিমানকে দেওয়া ৪ কোটি ৮০ লাখ এবং ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক ট্রেড ফাইন্যান্স করপোরেশনের (আইটিএফসি) আমানত রিজার্ভে দেখাচ্ছে বাংলাদেশ। এসব অর্থ বাদ দিলে রিজার্ভ দাঁড়ায় ২৬ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার। এই রিজার্ভ দিয়ে সাড়ে তিন মাসের আমদানি ব্যয় মেটাতে পারবে বাংলাদেশ।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ