Inqilab Logo

বুধবার ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ২১ কার্তিক ১৪৩১, ০৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

চৌগাছার মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে আত্মসাতের অভিযোগ

যশোর ব্যুরো : | প্রকাশের সময় : ৭ নভেম্বর, ২০২২, ১২:০০ এএম


 যশোরের চৌগাছা উপজেলার মাকাপুর-বল্লভপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুরুল ইসলামের বিরুদ্ধে এবার কর্মচারী নিয়োগে স্বজনপ্রীতি, অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। চাকরি দেয়ার নাম করে সাত লাখ টাকা হজম করার অভিযোগ তুলেছে ভুক্তভোগী এক চাকরিপ্রার্থী। গতকাল রোববার চৌগাছা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন বল্লভপুর গ্রামের রওনক আলীর ছেলে ভুক্তভোগী হারুন অর রশিদ। লিখিত অভিযোগে ভুক্তভোগী হারুন অর রশিদ বলেছেন, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুরুল ইসলাম মারফত জানতে পারেন ২০২২ সালে ৩ জন চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগ দিবেন। তিনি আমাকে কর্মচারী পদে নিয়োগ দেয়ার আশ^াসে সাত লাখ টাকা উৎকোচ দাবি করেন। আমি তার প্রস্তাবে রাজি হয়ে নগদ সাত লাখ টাকা দিই। কিন্তু তিনি আমাকে চাকরি না দিয়ে তার বিয়াই ও বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি বেনজিয়ার রহমানের ছোট ভাই মো. তুহিন মিয়াকে কর্মচারী পদে নিয়োগ দিয়েছেন। কিন্তু আজও আমার সাত লাখ টাকা ফেরত দেয়নি। বিদ্যালয়ের ৩ কর্মচারী নিয়োগে অন্তত ২০ লাখ টাকার ঘুষ বাণিজ্য হয়েছে। এই নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ গোপনে করা হয়েছে। নতুন কর্মচারীরা বিদ্যালয়ে যোগদানের পর বিষয়টি জানাজানি হয়।
তিনি আরো বলেন, আমি প্রধান শিক্ষকের কাছে বারবার ধর্ণা দিয়েও আমার টাকা ফেরত পাচ্ছি না। চাকরি বাবদ জমি বন্ধক রেখেছি, চাকরির টাকা ফেরত না পাওয়ায় বন্ধকী জমিও ফিরত নিতে পারছি না। চাষাবাদ করতে না পেরে আমরা অসহায় জীবনযাপন করছি।
প্রধান শিক্ষক নুরুল ইসলামের অব্যাহত দুর্নীতির ফিরিস্তি তুলে ধরে লিখিত অভিযোগে হারুন অর রশিদ আরো বলেছেন, কর্মচারী নিয়োগে অনিয়ম দুর্নীতিতে সীমাবদ্ধ নেই প্রধান শিক্ষক নুরুল ইসলাম। ইতোপূর্বে তিনি স্কুলের অন্তত ৫জন শিক্ষক নিয়োগে অনিয়ম, দুর্নীতি ও বিপুল অর্থবাণিজ্য করেছেন। যা সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত করলে বেরিয়ে আসবে।
এরপর ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে তাদেরকে এমপিওভুক্ত করা হয়েছে। চারজন শিক্ষক নিয়োগে ৫০-৬০ লাখ টাকার বাণিজ্য করেছেন প্রধান শিক্ষক। এদিকে, ওই চার শিক্ষক নিয়োগে অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ তোলা মুসলিমা খাতুনকে ম্যানেজ করে অভিযোগ প্রত্যাহার করানো হয়। বিনিময়ে মুসলিমাকে সহকারী শিক্ষক পদে পুনর্বহাল ও এমপিওভুক্ত করানো হয়েছে। সেটিও কতিপয় দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তার সহযোগিতায় বাস্তবায়ন করা হয় বলে অভিযোগ আছে। এই ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটিও অজ্ঞাত কারণে সঠিক রিপোর্ট দেয়নি। ফলে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক ওই ঘটনায় পার পেয়ে যান। শিক্ষক নিয়োগের দুর্নীতি থেকে মাফ পাওয়ার পর আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেন প্রধান শিক্ষক নুরুল ইসলাম। এরপর তিনি অনিয়ম দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে জন কর্মচারী নিয়োগ দিয়েছেন। বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতি নির্বাচনেও তিনি দুর্নীতি করেছেন। অত্যন্ত গোপনে ছেলের শ^শুর (বিয়াই) বেনজিয়ার রহমানকে সভাপতি করেছেন। সভাপতি নিয়োগের বিষয়টি শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরাও জানেন না। দুই বিয়াই মিলে বিদ্যালয়ের দুর্নীতির স্বর্গরাজ্যে পরিণত করেছেন। বিদ্যালয়ের বিভিন্ন খাতের অর্থ তছরুপের অভিযোগ রয়েছে প্রধান শিক্ষক নুরুল ইসলামের বিরুদ্ধে। কিন্তু তার ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পাননা। সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্রধান শিক্ষক নুরুল ইসলামের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও অবৈধ নিয়োগ বাতিল করে পুনরায় স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় নিয়োগ প্রদানে দাবি জানাচ্ছি। একই সাথে আমার টাকা ফেরত পাওয়ার জন্য আপনার সহযোগিতা কামনা করছি।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ