Inqilab Logo

শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ০৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৯ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

সুন্দরবনে শুরু হয়েছে শতবর্ষের ঐতিহ্যবাহি রাশ উৎসব, এবারও হচ্ছে না মেলা

খুলনা ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ৬ নভেম্বর, ২০২২, ৪:৫১ পিএম

সুন্দরবনের দুবলার চরে শতবর্ষের ঐতিহ্যবাহি রাস উৎসব আজ রোববার শুরু হয়েছে। রাস পূর্ণিমা উপলক্ষে ৬ থেকে ৮ নভেম্বর পর্যন্ত তিন দিনব্যাপী সুন্দরবনের দুবলারচরে ঐতিহ্যবাহী রাস পূর্ণিমায় পূজা ও পুণ্যস্নান অনুষ্ঠিত হবে। বন, বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় দুবলার চরে রাস উৎসব উপলক্ষে রাশ মেলা বন্ধ করেছে মন্ত্রণালয়। গতবছর থেকে এ নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়।

কার্তিক-অগ্রহায়ণের পূর্ণিমা তিথিতে প্রতিবছর সুন্দরবনের ‘দুবলার চরে’ বসা এ উৎসবে হাজার হাজার পুণ্যার্থী আর পর্যটক ভিড় করেন। এটি মণিপুরীদের প্রধান উৎসব হলেও বাঙ্গালি হিন্দু সম্প্রদায় বিভিন্ন স্থানে এ উৎসব পালন করে থাকেন। ধারণা করা হয়, ১৯২৩ সালে ঠাকুর হরিচাঁদের অনুসারী হরিভজন নামে এক হিন্দু সাধু এই উৎসব শুরু করেছিল। এই সাধু ২৪ বছরও বেশি সময় ধরে সুন্দরবনের গাছের ফল-মূল খেয়ে জবিন-যাপন করতেন। তিনি হরিচাঁদ ঠাকুরের স্বপ্নাদৃষ্টি হয়ে পূজা-পর্বনাদি ও অনুষ্ঠান শুরু করেন দুবলার চরে।
সুন্দরবন বিভাগের খুলনা অঞ্চলের বন সংরক্ষক (সিএফ) মিহির কুমার দো জানান, এ বছর দুবলার চরে দর্শনার্থী ও পুণ্যস্নানে নিরাপদে যাতায়াতে তীর্থযাত্রীদের জন্য সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগ পাঁচটি পথ নির্ধারণ করেছে। এসব পথে বন বিভাগ, পুলিশ ও কোস্টগার্ডের টহল দল তীর্থযাত্রী ও দর্শনার্থীদের জানমালের নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত থাকবে। তিনি আরও জানান, বন বিভাগের চেকিং পয়েন্ট ছাড়া অন্য কোথাও নৌকা, লঞ্চ বা ট্রলার থামানো যাবে না। প্রতিটি ট্রলারের গায়ে রঙ দিয়ে বিএলসি অথবা সিরিয়াল নম্বর লিখতে হবে। সুন্দরবনের অভ্যন্তরে অবস্থানকালীন টোকেন ও টিকিট কাছে রাখতে হবে। রাসপূর্ণিমা পুণ্যস্নানের সময় কোনও বিস্ফোরকদ্রব্য, আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার ও বহন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। কারও কাছে আগ্নেয়াস্ত্র, বিস্ফোরকদ্রব্য, হরিণ মারার ফাঁদ, দড়ি, গাছ কাটার কুড়াল, করাত ইত্যাদি অবৈধ কিছু পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে বন আইনে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ট্রলারে কোনও প্লাস্টিকের খাবারের প্লেট বহন করা যাবে না। লঞ্চ, ট্রলার, নৌকায় এবং পুণ্যস্নান স্থানে মাইক বাজানো, পটকা, বাজি ফোটানোসহ কোনও প্রকার শব্দ দূষণ করা যাবে না। রাস পূর্ণিমায় আসা পুণ্যার্থীদের সুন্দরবনে প্রবেশের সময় জাতীয় পরিচয়পত্র অথবা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের কাছ থেকে প্রাপ্ত নাগরিকত্বের সনদপত্রের মূলকপি সঙ্গে রাখতে হবে।
সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ডঃ আবু নাসের মোহসীন হোসেন বলেন, ৬, ৭ ও ৮ নভেম্বর সনাতন ধর্মাবলম্বীদের রাস পূর্ণিমা। আগে রাস পূর্ণিমা উপলক্ষে দুবলার চরে মেলা বসতো। ওই এলাকা সংরক্ষিত বনাঞ্চল। সেখানে অনেক লোকের সমাগমে জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি হয়। এ কারণে বন, বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় দুবলার চরে রাস উৎসব গত বছর থেকে বন্ধ করেছে মন্ত্রণালয়। রাস পূর্ণিমা উপলক্ষে সেখানে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পূজা ও পুণ্যস্নানে কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ