পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : শহীদ বুদ্ধিজীবীদের শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেছে জাতি। দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবী হত্যাকারিদের বিচারের রায় কার্যকর হচ্ছে এই স্বস্তি নিয়ে জাতি নানা কর্মসূচির মধ্যদিয়ে তাদের শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেছে।
দিবসটি উপলক্ষে গতকাল বুধবার ভোর থেকেই মিরপুর বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধের বাইরে মাজার রোড ও আশপাশের এলাকা এবং রায়েরবাজার বধ্যভূমি এলাকায় জনতার ঢল নামে। দিবসটি উপলক্ষে সকালে কালো পতাকা উত্তোলন ও জাতীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণ, শহীদদের স্মরণে নির্মিত স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ, আলোচনা সভা, শহীদদের স্মরণে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন, শোক র্যালি, শ্রদ্ধা নিবেদন, চিত্রাঙ্কন, সাধারণ জ্ঞান ও হাতের লেখা প্রতিযোগিতা, মিলাদ ও দোয়া মাহফিলসহ বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
প্রেসিডেন্ট মো. আব্দুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল বুধবার সকালে মিরপুরে বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এরপর একে একে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগসহ ১৪ দলীয় জোট, জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার, জাতীয় সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা, শহীদ পরিবারের সদস্যরা, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধারা, ঢাকার দুই মেয়র, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী, ঢাকার বিভাগীয় কমিশনার এবং আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সহযোগী সংগঠন বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধের বেদীতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানায়। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে একাত্তরের শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান বিএনপি চেয়ারপারসন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। এ সময় দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর পরিকল্পিতভাবে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক, চিকিৎসক, শিল্পী, লেখক, সাংবাদিকসহ বহু খ্যাতিমান বাঙালিকে বাসা থেকে তুলে নিয়ে হত্যা করে।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে নিজেদের পরাজয় নিশ্চিত জেনেই পাকিস্তানি বাহিনী ওই নিধনযজ্ঞ চালায়; তাদের উদ্দেশ্য ছিল স্বাধীনতার পর যেন বাংলাদেশ যাতে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে না পারে- তা নিশ্চিত করা।
শরীরে নিষ্ঠুর নির্যাতনের চিহ্নসহ জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের লাশ পাওয়া যায় মিরপুর ও রায়েরবাজার এলাকায়। পরে তা বধ্যভূমি হিসেবে পরিচিত হয়ে ওঠে।
গতকাল বুধবার সকাল পৌনে ৭টায় প্রধানমন্ত্রী মিরপুরের বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ চত্বরে পৌঁছালে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, ঢাকার দুই মেয়র আনিসুল হক ও সাঈদ খোকন এবং তিন বাহিনীর প্রধানরা তাকে সেখানে স্বাগত জানান।
প্রধানমন্ত্রী এরপর স্মৃতিসৌধে উপস্থিত শহীদ বুদ্ধিজীবী পরিবারের সদস্য, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযোদ্ধা, মন্ত্রিসভার সদস্য, সংসদ সদস্য, আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন।
সকাল ৭টার কিছুক্ষণ আগে প্রেসিডেন্ট শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পৌঁছালে প্রধানমন্ত্রী তাকে সেখানে স্বাগত জানান।
এরপর প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রী স্মৃতিসৌধের বেদীতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। ফুল দিয়ে আবদুল হামিদ ও শেখ হাসিনা সেখানে কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন। প্রেসিডেন্ট গার্ড রেজিমেন্টের একটি সুসজ্জিত দল এ সময় সশস্ত্র সালাম জানায়; বিউগলে বাজানো হয় করুণ সুর।
শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে প্রেসিডেন্ট অপেক্ষমাণ যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ পরিবারের সদস্য, মন্ত্রীপরিষদ সচিব, মুখ্য সচিব, পুলিশ মহাপরিদর্শকসহ ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন।
এসময় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়। প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রী ত্যাগ করার পর সর্বসাধারণের জন্য খুলে দেয়া হয় স্মৃতিসৌধ এলাকা। জাতীয় পাতাকা আর শ্রদ্ধার ফুল হাতে নানা বয়সের হাজারো মানুষ জড়ো হন শহীদ বেদীতে।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুস্পস্তবক অর্পণ করেন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে। দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ সিনিয়র নেতারা তার সঙ্গে ছিলেন।
১৪ দলের পক্ষে জাসদের হাসানুল হক ইনু, ওয়ার্কার্স পার্টির রাশেদ খান মেনন ও আওয়ামী লীগসহ শরিক দলগুলোর নেতারা বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে ফুল দেন। সিপিবি-বাসদের পক্ষে রুহীন হোসেন প্রিন্স, গণফোরামের পক্ষে ড. কামাল হোসেন, এলডিপির পক্ষে অলি আহমেদসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগ ছাড়াও আওয়ামী লীগের সহযোগী ও ভাতৃপ্রতীম সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীরা আলাদাভাবে ফুল দেন শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মৃতির উদ্দেশ্যে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে ভিসি আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে ভিসি ফারজানা ইসলাম, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে ভিসি মীজানুর রহমান, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে ভিসি হারুন-অর-রশিদ শ্রদ্ধা জানান। ফুল দেয়া হয় বাংলা একাডেমিসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এবং সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকেও।
এছাড়া, অনেকেই পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে রায়েরবাজারে শ্রদ্ধা জানাতে আসেন। স্মৃতিসৌধ মুখরিত হয়ে উঠে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের পদচারণায়।
১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানী বাহিনীর আত্মসমর্পণের দু’দিন আগে বুদ্ধিজীবী হত্যায় প্রত্যক্ষ সহযোগিতা করে রাজাকার, আলবদর ও আল শামস বাহিনীর সদস্যরা। বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করে রায়েরবাজারে যেভাবে ফেলে রেখে যাওয়া হয়েছিল- অভিনয়ের মাধ্যমে মূলবেদীর পাশে সেই দৃশ্যের রচনা করে কেন্দ্রীয় খেলাঘর আসরের সদস্যরা।
বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে ফুল দিতে এসে শহীদ পরিবারের সন্তানরা বলেন, এবার আর আক্ষেপ নয়, পেছনে তাকানো নয়, এখন সময় সামনে এগিয়ে যাওয়ার।
শহীদ বুদ্ধিজীবীদের শ্রদ্ধা জানাতে সকালে মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে সর্বস্তরের মানুষের ঢল নামে। ভোরের সূর্য ওঠার আগেই হাজারো মানুষ ভিড় করেন মিরপুরের শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধের সামনে। সবার হাতে ছিল ফুলের তোড়া ও শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে লেখা কালো ব্যানার।
শ্রদ্ধা নিবেদনের সময়ে সবার দাবী ছিল বুদ্ধিজীবী হত্যাকারী দন্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামিদের দেশে ফিরিয়ে এনে শাস্তি কার্যকর করা এবং যুদ্ধাপরাধীদের বিচার দ্রুত শেষ করতে হবে, জাতি আর এ কলঙ্ক বহন করতে চায় না। যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষ নেয়ায় পাকিস্তানের সঙ্গে সকল সম্পর্ক ছিন্ন করাসহ সে দেশের সকল পণ্য বর্জন করতে হবে।
আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার নেতৃত্বে স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদনের সময় আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য তোফায়েল আহমেদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী ও ড. আব্দুর রাজ্জাক, সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, নৌ-পরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, জাহাঙ্গীর কবির নানক ও আব্দুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, আ ফ ম বাহা উদ্দিন নাছিম, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ও এনামুল হক শামীম, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আনিসুল হক ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন, দপ্তর সম্পাদক ড. আব্দুস সোবহান গোলাপ, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আফজাল হোসেন, শ্রম বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান সিরাজসহ দলীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়াও ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ উত্তর ও দক্ষিণ, আওয়ামী যুবলীগ, আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ, কৃষক লীগ, ছাত্রলীগ, তাঁতীলীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, শ্রমিক লীগ, যুব মহিলা লীগ, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কেন্দ্রীয় কমান্ড, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়, আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট, বাংলাদেশ শিশু একাডেমি, বঙ্গবন্ধু গবেষণা পরিষদ, বঙ্গবন্ধু পরিষদ, জাতীয় জাদুঘর, শিল্পকলা একাডেমি, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ), জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি, ছাত্র ইউনিয়ন, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনও শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিস্তম্ভে শ্রদ্ধা জানান।
বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে গতকাল বিকালে রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটশন মিলনায়তনে এক সভার আয়োজন করে আওয়ামী লীগ। দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সভায় সভাপতিত্বে করেন।
এদিকে, দিবসটি উপলক্ষে গতকাল সকাল সাড়ে ১০টায় বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের দক্ষিণ সাহানে কোরআনখানি, মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে ইসলামিক ফাউন্ডেশন। জাতীয় মসজিদের পেশ ইমাম মহিউদ্দিন কাশেম দোয়া-মোনাজাত পরিচালনা করেন। এ সময় সকল শহীদ বুদ্ধিজীবী এবং ৭৫’র ১৫ আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের শাহাদত বরণকারী সদস্যদের পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুস্বাস্থ্য এবং দেশ ও জাতির শান্তি, সমৃদ্ধি, কল্যাণ কামনা করে জন্য দোয়া-মোনাজাত করা হয়।
বিভিন্ন সংগঠনের শ্রদ্ধা
বিন¤্র শ্রদ্ধা এবং গভীর কৃতজ্ঞতায় জাতি স্মরণ করছে দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান শহীদ বুদ্ধিজীবীদের। শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলসহ নানা পেশাজীবী, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন নানা কর্মসূচি পালন করেছে। এসব কর্মসূচির মধ্যে ছিল সকালে মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পসস্তবক অর্পণ ও রায়েরবাজার বধ্যভূমিতে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন। দিনব্যাপী বিভিন্ন সংগঠন শহীদদের স্মরণে আলোচনা সভা, মৌন মিছিল ইত্যাদি।
সকালে মিরপুরে বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট্র আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরে জনসাধারণের শ্রদ্ধার জন্য খুলে দেয়া হয় বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ। সেখানে শ্রদ্ধা জানাতে সাধারণ মানুষের ঢল নামে। রায়েরবাজার বধ্যভূমিতেও ভিড় জমায় সাধারণ মানুষ। দিনভর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করছেন সকল পেশাজীবী শ্রেণীর মানুষ।
দিবসটি উপলক্ষে সকল ধরনের সংগঠন বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ পালন করে। এ সব সংগঠনের মধ্যে আওয়ামী লীগ, বাংলাদেশে জাতীয়তাবাদী দল ,জাতীয় পার্টি, জাসদ, বাংলাদশে কমিউনিস্ট পার্টি, গণফোরাম, ন্যাশনাল ডেমত্রেুটিক পার্টি (এনডিপি), বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ), বঙ্গবন্ধু জয় বাংলা লীগ। এছাড়া বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমী, বাংলা একাডেমী, জাতীয় জাদুঘর, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি, বঙ্গবন্ধু গবেষণা পরিষদ, বঙ্গবন্ধু পরিষদ, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, সেক্টর কমান্ডারস্ ফোরাম, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, প্রবিকা মানসিক উন্নয়ন কেন্দ্র, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট, উদীচী ঢাকা বিশ্ববিদ্যলয় বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন সংগঠন পৃথক কর্মসূচি পালন করেছে।
এই সব সংগঠন ছাড়াও রাজধানীসহ বিভাগীয়, জেলা, থানায় পর্যায়ে পালন করা হয়েছে শহীদ বুদ্ধিজীবী
সিলেটে বুদ্ধিজীবীদের স্মরণ
সিলেট অফিস জানায়, সিলেটে বিনম্র শ্রদ্ধায় শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণ করা হয়েছে। শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে গতকাল বুধবার সকাল থেকেই নগরীর চৌহাট্টাস্থ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ।
পর্যায়ক্রমে শ্রদ্ধা নিবেদন করে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ জেলা ও মহানগর ইউনিট, সিলেট সিটি করপোরেশন, সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ, সিলেট সিটি করপোরেশন, সেক্টরস কমান্ডার ফোরাম সিলেট, সিলেট প্রেসক্লাব, সিলেট জেলা প্রেসক্লাব, বাসদ, ছাত্র ইউনিয়ন, উদীচী, খেলাঘর, সিলেট জেলা ও মহানগর ছাত্রলীগ, জেলা ও মহানগর ছাত্রদল, সিলেট কল্যাণ সংস্থা, বাংলাদেশ মানবাধিকার সাংবাদিক কমিশন, সিলেট জেলা তাতী লীগ, সিলেট জেলা ও মহানগর যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগসহ বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠন। এছাড়া বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষরাও শ্রদ্ধা নিবেদন করছেন।
যশোরে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন
যশোর ব্যুরো জানায়, বুদ্ধিজীবি দিবসে যশোরের চাঁচড়া বধ্যভূমিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছে যশোরের সর্বস্তরের মানুষ। বুধবার সকাল থেকে জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ সমাবেত হয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার রাজেক আহমেদের নেতৃত্বে বধ্যভূমিতে শ্রদ্ধা জানান যশোরের জেলা প্রশাসক ড. হুমায়ুন কবীর, পুলিশ সুপার মোঃ আনিসুর রহমান। এছাড়াও জেলা আওয়ামী লীগ, বিএনপি, ওয়ার্কার্স পার্টি, জাসদ, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটসহ সামাজিক সাংস্কৃতিক রাজনৈতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করা হয়। পরে শহীদদের আদর্শে দেশগঠনের শপথ গ্রহণ করেন সর্বস্তরের মানুষ।
রাবিতে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত
রাবি রিপোর্টার জানান, যথাযোগ্য মর্যাদায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত হয়েছে। বুধবার রাত থেকে প্রশাসনের পাশাপাশি রাজনৈতিক-সমাজিক সংগঠন নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিনটি পালন করে। এদিন ভোরে প্রধান প্রধান ভবনে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিতভাবে উত্তোলন করা হয়।
সকালে ভিসি ভবন থেকে প্রভাত ফেরিসহ ভিসি প্রফেসর মুহম্মদ মিজানউদ্দিন, প্রো-ভিসি প্রফেসর চৌধুরী সারওয়ার জাহান, কোষাধ্যক্ষ প্রফেসর সায়েন উদ্দিন আহমেদ ও রেজিস্ট্রার প্রফেসর মুহাম্মদ এন্তাজুল হকসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ বিশ্ববিদ্যালয় শহীদ মিনারে ও প্রশাসন ভবনের পশ্চিম চত্বরে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিফলকে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। সেখানে তাঁরা শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করেন। এরপর শহীদ স্মৃতি সংগ্রহশালাসহ বিভিন্ন হল প্রশাসন, পেশাজীবী সমিতি ও সংগঠন পুষ্পস্তবক অর্পণ করে। এর আগে রাত ১২টা ১মিনিটে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিফলকে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন বিশ^বিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগসহ সামজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন।
ইবিতে বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত
ইবি রিপোর্টার জানান, যথাযোগ্য মর্যাদায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত হয়েছে। অনুষ্ঠানের অংশ হিসেবে মঙ্গলবার দিবাগত রাতে কেন্দ্রীয় মসজিদে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে কুরআন খানি আয়োজন করে। বুধবার সকাল ৯টায় শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি সম্মান জানিয়ে প্রশাসন ভবন ও হলসমূহে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত ও কালো পতাকা উত্তোলন করা হয়। পরে ভিসি প্রফেসর ড. রাশিদ আসকারীর নেত্বত্বে প্রশাসন ভবন চত্বর থেকে একটি শোকর্যালি বের হয়। র্যালিটি বিশ্ববিদ্যালয় বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে শহীদ স্মৃতিসৌধে গিয়ে শেষ হয়। পরে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের সম্মানে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও বিভিন্ন সংগঠনের নেতা-কর্মীরা স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করেন।
পরে বিশ্ববিদ্যালয় বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান মিলনায়তনে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। প্রো-ভিসি প্রফেসর ড. মোঃ শাহিনুর রহমান এর সভাপতিত্বে এবং প্রফেসর ড. মোহাঃ সাইদুর রহমান ও আরমিন খাতুনের উপস্থাপনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন প্রক্টর প্রফেসর ড. মোঃ মাহবুবর রহমান। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ভিসি প্রফেসর ড. রাশিদ আসকারী। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ট্রেজারার প্রফেসর ড. মোঃ সেলিম তোহা, ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এস.এম আব্দুল লতিফ । প্রধান আলোচক হিসেবে আলোচনা করেন প্রফেসর ড. আবুল আহসান চৌধুরী ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।