Inqilab Logo

রোববার, ১২ মে ২০২৪, ২৯ বৈশাখ ১৪৩১, ০৩ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

অবকাঠামোগত উন্নয়ন হয়নি ১২ বছরেও

আশুগঞ্জ আন্তর্জাতিক নৌবন্দর

সাদেকুল ইসলাম সাচ্চু, আশুগঞ্জ (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) থেকে | প্রকাশের সময় : ৬ নভেম্বর, ২০২২, ১২:০০ এএম

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ নদীবন্দর দেশে বাণিজ্য সহজীকরণে বিপুল সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও ১২ বছর আগে পূর্ণাঙ্গ বন্দর হওয়ার পর থেকে তেমন কোনো উন্নয়নমূলক কাজ হয়নি। ভারতের পালাটানা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মালামাল পরীক্ষামূলক পরিবহণের মাধ্যমে আশুগঞ্জ বন্দরটি আন্তর্জাতিক নৌবন্দর হিসেবে রুপ নেয়। তবে লাখ লাখ টন মালামাল নেওয়ার আশ্বাস দিয়ে, পালাটানা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মালামাল নেয়ার পর গেল ১২ বছরে মাত্র ১৭ বার বিভিন্ন মালামাল নিয়েছে ভারত। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) বর্তমান অর্থবছরে বন্দরের ইজারা মূল্য দ্বিগুণ করলেও এর সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য তেমন কোনো পরিকল্পনা গ্রহণ করেনি বলে অভিযোগ ব্যবসায়ীদের।
বর্তমানে আশুগঞ্জ বন্দরে পণ্য পরিবহনের জন্য মাত্র দু’টি জেটি রয়েছে। যা এখানে আসা জাহাজের সংখ্যার তুলনায় অনেক কম। অপর দিকে ভারতীয় জাহাজ নোঙর করলে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জাহাজ নিয়ে বিপাকে পড়তে হবে।
বন্দরের ব্যবসায়ী সাজু বলেন, প্রতিটি জাহাজ থেকে মালামাল খালাস করতে ৫-৬ দিন সময় লাগে, এতে বন্দরে জাহাজের দীর্ঘ জটের সৃষ্টি হয় এবং বন্দরে নোঙর করার পর সাত দিনের মধ্যে জাহাজ খালাস করা না গেলে অতিরিক্ত টাকা মাশুল গুণতে হয়। বন্দরটি বর্তমানে নৌপথে দেশের বিভিন্ন এলাকায় পণ্য পরিবহনে ব্যবহৃত হচ্ছে। এতে সময় ও অর্থ উভয়ই সাশ্রয় হচ্ছে। বন্দরটির ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে পণ্য পরিবহনে ব্যপক চাহিদা থাকলেও বিগত ১২ বছরে অজ্ঞাত কারণে এই বন্দরের মাধ্যমে মাত্র ১৭টি চালান ত্রিপুরায় নিয়েছে।
বন্দরের একাধীক ব্যবসায়ী জানান, ২০১১ সালে ভারতের ত্রিপুরার পালাটানা পাওয়ার স্টেশন থেকে পণ্য পরিবহনের মাধ্যমে বন্দরটি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয়েছিল। এর আগে আশুগঞ্জের মেঘনা নদীর ফেরিঘাট এলাকায় ছোট-বড় পণ্যবাহী জাহাজ ও বাল্কহেড নোঙর করত। বর্তমানে এ বন্দরে প্রায় দুই হাজারের বেশি শ্রমিক পণ্য লোড-আনলোড করে জীবিকা নির্বাহ করছেন। ব্যবসায়ীরা জানান, প্রতি মাসে রড, সিমেন্ট, পাথর, সার, ধান ও গমসহ বিভিন্ন পণ্য বোঝাই ছোট-বড় শত শত জাহাজ আশুগঞ্জ নদী বন্দরে আসে। জেটির সংখ্যা ও অন্যান্য সুবিধা বাড়ানো হলে জাহাজের সংখ্যা দ্বিগুণ হবে। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ- বন্দরে তাদের পণ্য রাখার জন্য বিদ্যমান গুদাম ব্যবহার করতে পারে না কারণ এটি ভারতীয় পণ্য রাখার নামে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের ব্যবহার করতে দিচ্ছে না কর্তপক্ষ। তাই জাহাজ থেকে পণ্য খালাসের পর ডেলিভারিতে দেরি হলে তাদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়।
এছাড়া ট্রাক ইয়ার্ড না থাকায় পণ্য পরিবহনে ব্যবহৃত ট্রাকগুলো বন্দরের সামনের সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখতে হয় বলে জানান তারা। এ ধরনের সমস্যা সমাধান ও বন্দরের বাণিজ্যিক কার্যক্রম সম্প্রসারণে আরও পাঁচটি জেটি ও একটি ট্রাক ইয়ার্ড নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ব্যবসায়ী নাসির মিয়া বলেন, প্রতিষ্ঠার ১২ বছরের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও আশুগঞ্জ নদীবন্দরের অত্যাবশ্যকীয় অবকাঠামোগত উন্নয়ন হয়নি। আমরা জাহাজ থেকে নির্ধারিত সময়ে পণ্য খালাস করতে পারছি না। জেটির ঘাটতি রয়েছে। আমাদের একটি ট্রাক ইয়ার্ডও দরকার।
বিআইডব্লিউটিএর উপ-পরিচালক ও বন্দরের দায়িত্বে থাকা মো. শহিদুল উল্লাহ বলেন, ‘একসময় বন্দরটি খুব একটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল না। তখন বন্দরের ইজারা মূল্যও কম ছিল। কিন্তু এখন বন্দরের গুরুত্ব বাড়ছে। পণ্য পরিবহন বৃদ্ধি পেয়েছে। বন্দরের আরও অবকাঠামোগত উন্নয়ন প্রয়োজন। জেটির সংখ্যাও বাড়াতে হবে। আমরা এটা বুঝি। ব্যবসায়ীরা তাদের দাবি লিখিত আকারে পাঠালে আমরা তা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে পৌঁছে দেব।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ