বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
ধুলার যন্ত্রণায় কাহিল নোয়াখালী-কুমিল্লা মহাসড়কের চলাচলরত যাত্রীসহ আশপাশের মানুষ। ধুলাবালিতে দূষিত হচ্ছে প্রাকৃতিক বাতাস। বিষাক্ত হয়ে উঠছে ধুলায় ধূসর ওই অঞ্চলের বাতাস। বাড়ছে অসহনীয় যন্ত্রণা, ভোগান্তি। সঙ্গে বাড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁকিও। শীত আসার আগে বাড়ছে রোগ-বালাই। সড়কে নেমে দুর্ভোগ আর বিড়ম্বনার মুখোমুখি হতে হচ্ছে বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষ। মুখে মাস্ক ব্যবহার করেও ধুলাবালি থেকে রক্ষা পাওয়া যাচ্ছে না।
পাঁচ বছর ধরে চলছে কুমিল্লা-নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়ক চার লেনে উন্নীতকরণের কাজ। সামান্য বৃষ্টিতে সড়কের গর্তে আটকে যায় যানবাহন। গ্রীষ্মে ধুলায় ধূসর চারপাশ। এতে ভোগান্তিতে পড়ছেন কুমিল্লা, নোয়াখালী, ল²ীপুর ও চাঁদপুরসহ অন্যান্য জেলার যাত্রীরা। কাজ প্রায় শেষ হয়ে এলেও বাকি রয়েছে কুমিল্লার লাকসাম দৌলতগঞ্জ বাজার বাইপাস এলাকা ও লালমাই উপজেলার বাগমারা বাজার এলাকার চার লেনের কাজ। এখানে প্রতিনিয়ত যানজটে আটকা পড়ছে মানুষ। এই এলাকায় কবে বাইপাস হবে তারও ঠিক নেই। জায়গা অধিগ্রহণ ও উচ্ছেদ নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতেই দুই বছর পার হয়ে গেছে।
কুমিল্লার টমসমব্রিজ থেকে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ পর্যন্ত ৫৯ কিলোমিটার সড়কের প্রায় ৯৫ শতাংশ কাজ শেষ হলেও ঝুলে আছে বাগমারা এবং লাকসাম অংশের কাজ। দীর্ঘ সময়েও এ সড়কের কাজ শেষ না হওয়ায় সড়কে চলাচলকারী যাত্রী এবং চালকদের দুর্ভোগ যেন পিছু ছাড়ছে না।
কুমিল্লা-নোয়াখালী চার লেন সড়কের কাজ শুরু হয়েছিল ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে। ২০২০ সালের জুনে কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও ৫ বছরেও শেষ করতে পারেনি সড়ক ও জনপথ বিভাগ। কিছু এলাকার ভ‚মি অধিগ্রহণসহ নানা জটিলতায় তিনবার বাড়ানো হয়েছে প্রকল্পের মেয়াদ। তবুও কাজ শেষ করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ।
তবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ভ‚মি অধিগ্রহণ জটিলতায় ঝুলে আছে সড়কের ৫ শতাংশ কাজ। তবে এই সঙ্কট লালমাই উপজেলার বাগমারা বাজারের ১ দশমিক ৮ কিলোমিটার, শানিচৌ অ্যাডভোকেট বাসেত মজুমদারের বাড়ির পাশে ১ দশমিক ৬ কিলোমিটার এলাকায় ভ‚মি অধিগ্রহণ জটিলতা রয়েছে।
সড়ক ও জনপথ বিভাগ কুমিল্লার সূত্র জানায়, কুমিল্লার বাগমারা বাজার এলাকার ভ‚মি অধিগ্রহণ সংক্রান্ত বিষয়ে ২০০৬ সালে হাইকোর্টে একটি রিট করা আছে, যা জানা ছিল না সড়ক বিভাগের। রিট নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত সড়কের কাজ শেষ করা সম্ভব হবে না বলে দাবি সংশ্লিষ্টদের। এছাড়া লাকসামে ডিপিপির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ৪ দশমিক ৫ কিলোমিটার সড়কে তৈরি হবে ওভারপাস। সেই ওভারপাস তৈরি হলে তার ওপর চার লেন সড়ক নির্মাণ করা হবে বলে জানিয়েছে সওজ কর্তৃপক্ষ।
সূত্র আরো জানায়, প্রকল্পের কাজ শুরুর এক বছর পর ২০১৯ সালের নভেম্বর মাসে লালমাই থেকে লাকসাম পর্যন্ত প্রায় ১৭ কিলোমিটার এলাকার টেন্ডার হয়। এছাড়া সড়কের লাকসাম উপজেলার দৌলতগঞ্জ বাজার বাইপাস ও লালমাই উপজেলার বাগমারা বাজার বাইপাস এলাকার জমি এখনো অধিগ্রহণ সম্পন্ন হয়নি। লাকসাম বাইপাস এলাকায় দুই লেনের মাধ্যমে চালু করা হবে এ সড়ক। পরে অপর দুই লেনের জন্য আলাদা প্রকল্প হাতে নেওয়া হবে। ইতোমধ্যে লালমাই এলাকায় ১০ কিলোমিটার ও লাকসাম এলাকায় ১৫ কিলোমিটারসহ মোট ২৫ কিলোমিটার মহাসড়কের কাজ শেষ হয়েছে। এদিকে নানা জটিলতার কারণে কুমিল্লা অংশে নির্দিষ্ট সময়ে কাজ শেষ হবে না। এজন্য আরও সময় লাগতে পারে।
পরিবহন চালকরা জানান, প্রায় পাঁচ বছর ধরে কুমিল্লা-নোয়াখালী মহাসড়কের চার লেনের কাজ চলছে। ভাঙা সড়কে গাড়ি চালাতে গিয়ে সময় নষ্ট, যানজট আর গাড়ি বিকল হওয়ায় ক্ষুব্ধ পরিবহন মালিক এবং শ্রমিকরা। ভোগান্তিতে বিরক্ত যাত্রীরা। বেশি খারাপ অবস্থা হরিশ্চর থেকে শানিচৌ হয়ে আলীশ্বর অংশে। থেমে আছে লাকসামের চন্দনা বাজার এলাকার কাজ। এ ছাড়া জাঙ্গালিয়া ও টমছম ব্রিজ অংশে যাত্রীরা দুর্ভোগে পড়ছেন।
উপক‚ল বাস সার্ভিসের পরিচালক অধ্যাপক কবির আহমেদ জানান, যানজটের কারণে যাত্রীরা বিরক্ত। এতে যাত্রী কমে গেছে। খুব প্রয়োজন না হলে কেউ এই সড়কে যাতায়াত করতে চান না। দ্রæত সড়কটির কাজ শেষ না হলে আরো দুর্ভোগ বাড়বে।
কুমিল্লা মোটর অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি জামিল আহমেদ খন্দকার বলেন, বাগমারা এলাকায় অর্থমন্ত্রী ও লাকসামে স্থানীয় সরকার মন্ত্রীর বাড়ি। তাদের সুদৃষ্টি পড়লে দ্রæত কাজ শেষ হবে। বাগমারা এলাকার যাত্রী রশিদ বলেন, আমরা পাঁচ বছর ধরে এ সড়কে ভোগান্তি পোহাচ্ছি। ধুলোবালি আর যানজটে জনজীবন খুবই বিপর্যস্ত। সরোয়ার হোসেন নামের অপর যাত্রী বলেন, কুমিল্লা থেকে ঢাকা যেতে যত সময় লাগে, বাগমারা পার হতে ঠিক তত সময় লাগে।
সড়ক ও জনপথ অধিদফতরের সড়ক বিভাগ কুমিল্লার নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীত চাকমা বলেন, শুধুমাত্র ভ‚মি অধিগ্রহণ জটিলতায় সামান্য কিছু অংশের কাজ আটকে আছে। এছাড়া ২০০৬ সালের একটি রিট ছিল হাইকোর্টে যা আমাদের জানা ছিল না। তাছাড়া লাকসামে ৪ দশমিক ৫ কিলোমিটার রেলওয়ে ওভারপাস হবে। যার কাজ শুরু হয়েছে। ওভারপাস নির্মাণ শেষ হলে সেখানে চার লেন সড়ক তৈরি করা হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।