Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ভার্চুয়াল জগতে বিনোদনের নামে চলছে অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা

রিয়েল তন্ময় | প্রকাশের সময় : ২ নভেম্বর, ২০২২, ১২:০০ এএম

এক সময় বিনোদনের একমাত্র মাধ্যম ছিল বাংলাদেশ টেলিভিশন। সপ্তাহে একটা ধারাবাহিক একটা সাপ্তাহিক নাটক প্রচার হতো, যা পরিবারের সবাই মিলে একসাথে বসে দেখা হতো। এছাড়া কার্টুন মাসে একবার জনপ্রিয় ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ইত্যাদি, প্রতি মাসে একটা বাংলা সিনেমা, এইছিল বিটিভির অনুষ্ঠান। ম্যাকগাইভার নামের সিরিয়ালটি ছিল ব্যাপক জনপ্রিয়, দ্য ফল গাই, এ টিম নামের বিদেশি সিরিজগুলোও দারুণ জনপ্রিয় ছিল। ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ইত্যাদি ও বাংলা সিনেমা দেখার জন্য দর্শক অধীর অপেক্ষঅয় থাকত। সবমিলিয়ে সারা সপ্তাহ ৪ থেকে ৫ ঘন্টা টিভি দেখার মাধ্যমে বিনোদনের চাহিদা পূরণ হতো। এখনকার মত সারাদিন টিভি কিংবা ইউটিউব ভিডিও দেখার সুযোগ ছিল না। বর্তমান ইন্টারনেটের যুগে বিনোদনের অনেক সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। তবে এর কুফলও ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। ব্যবহারকারিরা ভালোর চর্চার চেয়ে খারাপের পথেই বেশি হাঁটছে। বিনোদনের নামে এখন ভাঁড়ামিতেই মানুষ বেশি অভ্যস্ত। নারীরাও হয়ে উঠেছে বিনোদন মাধ্যমগুলোর অন্যতম হাতিয়ার। টাকা কামানোর সস্তা পথ হিসেবে অনেকেই এই মাধ্যমগুলো ব্যবহার করছে অবলীলায়। বলা বাহুল্য, বিনোদনের নামে নারীর যৌন-হয়রানি ইন্টারনেটকে কেন্দ্র করেই বিস্ততি পেয়েছে। স্মার্ট ফোন এখন প্রায় সবার হাতেই। স্ক্রল করলেই নানা ধরনের ভিডিও দেখা যায়। ভালো-মন্দ বিচার না করে একশ্রেণির নারী-পুরুষের উগ্র আচরণ এবং অপরশ্রেণির কটাক্ষ-বিদ্রুপ ও যৌন-হয়রানির মতো ঘটনা ঘটে চলেছে। ইন্টারনেটে এ ধরনের অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা এড়িয়ে চলতে কারও কোনো উদ্যোগ নেই। হাস্যরসে ভরিয়ে তুলতে বা বিকৃত মানসিকতার চর্চা করতে গিয়ে কিছু মানুষ নারীদের শিকারে পরিণত করছে। আবার কিছু নারী নিজে থেকেই শিকারের সামগ্রী হয়ে উঠেছে। ফলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে যৌন-নিপীড়নের মতো ঘটনা অহরহ ঘটছে। কিছু বিকৃত রুচির মানুষ নারীদের পেজে বা নারীদের ওয়ালে গিয়ে বাজে মন্তব্য ছুড়ে দিচ্ছে। আবার কেউ কেউ সেই মন্তব্যকে উসকে দিচ্ছে। এমনও দেখা যায়, নারীদের অনলাইন ব্যবসা, নারীদের নানামাত্রিক রূপচর্চা, মেকআপ, টিউটরিয়াল, জামা-কাপড়ের লাইভ, মোটিভেশনাল ভিডিও, টিকটকের নাচ-গান প্রভৃতিতে একশ্রেণির বিকৃত রুচিস¤পন্ন বাজে মন্তব্য করে। এসব ঘটনা নতুন নয়। বিনোদনের নামে যৌন-হয়রানি কমাতে প্রথমেই সরাকারের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন। নেট ব্যবহারের ক্ষেত্রে সচেতনতা বৃদ্ধি ও নজরদারি বাড়াতে হবে। তা নাহলে, সমাজে অপসংস্কৃতির চর্চা কমবে না। টিকটক অ্যাপসের বৌদলতে এখন প্রায় সবাই সেলিব্রিটি হওয়ার বাসনা পোষণ করছে। ফলে সস্তা কনটেন্ট, নাচ-গান দিয়ে মানুষের বিনোদনের চেষ্টা চলছে। টিভি, সিরিয়াল, নাটকগুলো এমনভাবে নির্মিত হচ্ছে যেখানে নারী ট্রলের শিকার হচ্ছে। বাজে মন্তব্যের ভিড়ে নিজেদের ভিউ বাড়াতেই ব্যস্ত তারা। এই অপসংস্কৃতি রোধে এখনই রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা জোরদার করতে হবে। যথেচ্ছ ও স্বেচ্চাচারী মনোভাবকে দমন করতে হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ