Inqilab Logo

রোববার, ১২ মে ২০২৪, ২৯ বৈশাখ ১৪৩১, ০৩ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

বরিশাল-ভোলা-লক্ষ্মীপুর জাতীয় মহাসড়ক উন্নয়নে সংশোধিত প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হতে যাচ্ছে

প্রকল্পব্যয় বেড়ে ৩১২ কোটি থেকে সোয়া ৫শ কোটি টাকা

নাছিম উল আলম | প্রকাশের সময় : ১ নভেম্বর, ২০২২, ১:১৭ পিএম

নানামুখি জটিলতা ও চরম অনিশ্চয়তা কাটিয়ে অবশেষে চট্টগ্রাম-বরিশাল-খুলনা/মোংলা মহাসড়কের বরিশালÑভোলাÑলক্ষ্মীপুর অংশের ৪০ কিলোমিটার মহাসড়ক প্রসস্ত করন সহ যথাযথ মান উন্নয়ন প্রকল্পটির বাস্তবায়ন শুরু হতে যাচ্ছে। তবে ৩১২ কোটি ৩৮ লাখ টাকার তহবিলের এ প্রকল্পটির ব্যায় আরো বৃদ্ধি পেয়ে ৫ শতাধিক কোটিতে উন্নীত হচ্ছে। সম্প্রতি প্রকল্পটি একনেক-এর চুড়ান্ত অনুমোদন লাভ করেছে বলে সড়ক জনপথ অধিদপ্তরের দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে। বরিশাল,ভোলা ও লক্ষ্মীপুরের জেলা প্রশাসন সম্ভব দ্রুততম সময়ে ভ’মি হুকুম দখল সম্পন্ন করলে আগামী দুবছরের মধ্যেই ৪০ কিলোমিটার দীর্ঘ এ মহাসড়কটি বর্তমানের ১৮ ফুট থেকে ৩৬ফুট উন্নীত করা সম্ভব হবে বলে মনে করছে সড়ক অধিদপ্তরের দায়িত্বশীল মহল। এরমধ্যে ১২ ফুট হার্ড সোল্ডারও থাববে। বিদ্যমান ক্যারেজওয়ের মান উন্নয়ন সহ মহাসড়কটির জন্য ইতোপূর্বে অনুমোদিত প্রকল্পটি গত অর্থ বছরে বাস্তবায়ন সম্পন্ন করার কথা ছিল।
কিন্তু ভ’মি অধিগ্রন না করেই বিদ্যমান মহাসড়কটি প্রশস্ত করণের প্রকল্প গ্রহন ও অনুমোদন সহ বাস্তবায়ন শুরু করতে গিয়ে বছর দুয়েক আগে নানামুখি জটিলতা সৃষ্টি হয়। ফলে পুরো প্রকল্পটির বাস্তবায়ন অনিশ্চিত হয়ে পরে। সম্পূর্ণ দেশীয় তহবিলের এ প্রকল্পটির আওতায় বরিশালের ১৩.৩৬ কিলোমিটার, ভোলাতে ১৬.৪৭ কিলোমিটার এবং লক্ষ্মীপুরে ১০ কিলোমিটার মহাসড়ক প্রসস্ত করন সহ মান উন্নয়নের কথা রয়েছে। সংশোধিত অনুমোদিত সম্পূর্ণ দেশীয় তহবিলের এ প্রকল্পটির ব্যায় বৃদ্ধি পাচ্ছে প্রায় ৫শ ২০কোটি টাকায়।
মহাসড়কটির মানোন্নয়নে ‘উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা-ডিপিপি’ তৈরীর সময় যথাযথ সমিক্ষা সহ বেশ কিছু বিষয়ে বিষদ তথ্য সংগ্রহ না করায় জটিলতা সৃষ্টি হয়। ফলে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করতে গিয়েবরিশাল ও ভোলার ভূমি মালিকদের বাঁধার মুখে এর বাস্তবায়ন আটকে যায়। এ প্রেক্ষিতে ডিপিপি সংশোধন করে সড়ক অধিদপ্তর ও মন্ত্রনালয় হয়ে পরিকল্পনা কমিশনে পাঠাতে হয়েছে। ভ’মি অধিগ্রহন সহ কয়েকটি কালভার্ট প্রসস্ত করতে গিয়ে প্রকল্প ব্যায় ৩১২ কোটি থেকে প্রায় ৫শ ২০ কোটিতে উন্নীত হয়েছে ।
এ মহাসড়কটির মাধ্যমেই চট্টগ্রাম,বরিশাল ও খুলনা বিভাগ সহ দেশের ৩টি সমুদ্র বন্দর এবং দেশের বৃহত্বম বেনাপোল ও ভোমড়া স্থল বন্দরের সরাসরি সড়ক যোগাযোগ প্রতিষ্ঠিত হবার কথা। উপক’লীয় এ জাতীয় মহাসড়টির কারণে উল্লেখিত ৩টি বিভাগের মধ্যে দুরত্ব প্রায় ৩০Ñ৪০ভাগ পর্যন্ত হ্রাস পাওয়া ছাড়াও চট্টগ্রামÑঢাকা মহাসড়কটির ওপর যানবাহনের চাপও হ্রাস পাবে বলে সড়ক অধিদপ্তরের দায়িত্বশীল সূত্রে বলা হয়েছে।
তবে এ মহাসড়কটি প্রসস্ত করা সহ মান উন্নয়নের মূল প্রকল্প-প্রস্তাবনা তৈরীর সময় সড়ক অধিদপ্তরের জমির হিসেব খতিয়ে দেখে প্রনয়ন করা হয়নি। ফলে নির্মান প্রতিষ্ঠনকে কার্যাদেশ দেয়া হলেও জমি বুঝিয়ে দিতে না পাড়ায় মহাসড়কটির বরিশাল সড়ক বিভাগের ১৩ কিলোমিটারের বেশীরভাগ অংশে ব্যাক্তি মালিকানার জমিতে নির্মান প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরুই করতে পারেনি।
এখন মহাসড়কটির বরিশাল অংশে প্রায় ২৫.৪২ হেক্টর জমি হুকুম দখল করতে প্রায় ১৮৩ কোটি ৫৫ লাখ টাকার প্রয়োজন হবে বলে জানা গেছে। ফলে প্রকল্প ব্যয়ও প্রায় ৫শ কোটি অতিক্রম করবে।
অপরদিকে, ভোলা সড়ক বিভাগের আওতাধীন ১৬.৪৭ কিলোমিটার মহাসড়কটি নির্মান পরবর্তি সময়ে বিভিন্ন এনজিও দু পাশে যেসব গাছ লাগিয়েছিল, প্রসস্তকরন প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে গিয়ে তার একটি বড় অংশই কাটা পড়ছে। সরকারী নীতিমালার অলোকে এসব গাছ অপসারন করে মহাসড়কটি প্রসস্ত করার উদোগে নেয়া হলেও একটি বেসরকারী সংস্থার আবেদনে বিষয়টি নিয়ে উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞায় প্রকল্প বাস্তবায়নে জটিলতার সৃষ্টি হয়। তবে তা ইতোমধ্যে দুরিভুত হয়েছে। লক্ষ্মীপুর প্রান্তের ১০ কিলোমিটার মহাসড়ক প্রসস্ত করনে তেমন কোন সমস্যা না থাকায় সেখানে উন্নয়ন কাজ শুরু হয়েছে। মহাসড়কটির বরিশাল অংশে যেখানে সড়ক বিভাগের নিজস্ব জমি রয়েছে, সেখানে নির্মান প্রতিষ্ঠান কাজ শুরু করেছে ।
তবে সংশোধিত ডিপিপি অনুমোদনের পরেও সব আইনগত বিধি বিধান অনুসরন করে ভ’মি অধিগ্রহন করে তা বুঝে পেতে অন্তত এক বছর সময় প্রয়োজন হতে পারে বলে মনে করছে ওয়াকিবাহাল মহল।
এব্যাপারে প্রকল্প পরিচলক ও বরিশাল সড়ক জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলীর সাথে আলাপ করা হলে তিনি জানান, ‘আমরা চেষ্টা করছি সব জটিলতা কাটিয়ে যত সম্ভব স্বল্পতম সময়ে বরিশালÑভোলাÑলক্ষ্মীপুর মহাসড়কটির মান উন্নয়ন সহ সার্বিক প্রকল্পটি দ্রুত বাস্তবায়ন করতে’ ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ