পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সভা-সমাবেশ বা মিছিল নিষিদ্ধে পুলিশ কমিশনারের ক্ষমতা প্রয়োগের বিধান কেন অবৈধ ও সংবিধান পরিপন্থি ঘোষণা করা হবে না Ñএই মর্মে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
রিটের প্রাথমিক শুনানি শেষে গতকাল রোববার বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া এবং বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের সচিব, আইনমন্ত্রণালয়ের সচিব, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারসহ ৪ জনকে চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট আব্দুল মোমেন চৌধুরী। সরকারপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অরবিন্দ কুমার রায়।
গত ২০ অক্টোবর পুলিশ কমিশনারের সমাবেশ বা মিছিল নিষিদ্ধ করার ক্ষমতা সংক্রান্ত বিধান চ্যালেঞ্জ করে জনস্বার্থে এ রিট ফাইল করা হয়। সুপ্রিম কোর্টের ৫ আইনজীবীর পক্ষে রিট ফাইল করেন অ্যাডভোকেট আব্দুল মোমেন চৌধুরী। মামলার বাদীদের মধ্যে রয়েছেন, অ্যাডভোকেট কেএম জাবির, অ্যাডভোকেট সেলিম আকবর, শাহ নূরুজ্জামান ও মোহাম্মদ ইয়াসিন। গত ২৭ অক্টোবর রিটটির শুনানির তারিখ ধার্য করা হয়। সে অনুযায়ী গতকাল রিটের ওপর শুনানি হয়। রিটে মিছিল-সমাবেশ নিষিদ্ধ করার ক্ষমতা সংক্রান্ত পুলিশ আইনের ২৯ ধারার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করা হয়। বলা হয়, পুলিশ আইনের ২৯ ধারা সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এ কারণে এই ধারা সংবিধান পরিপন্থি।
রিটে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ অর্ডিন্যান্স ১৯৭৬ এর সেকশন ২৯ ও ১০৫ এর পাশাপাশি ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (সভা, সমাবেশ, মিছিল এবং আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ন্ত্রণ) রুলস, ২০০৬ এর বৈধতাও চ্যালেঞ্জ করা হয়।
শুনানিতে অ্যাডভোকেট আব্দুল মোমেন চৌধুরী বলেন, পুলিশ কমিশনারের সমাবেশ বা মিছিল করার ক্ষমতা সংক্রান্ত পুলিশ আইন ১৯৭৬ এর ধারা ২৯-এ বলা হয়েছে, ‘জনসাধারণের শান্তি বা নিরাপত্তা রক্ষার জন্য পুলিশ কমিশনার যখনই প্রয়োজন মনে করবেন এবং যতদিনের প্রয়োজন বিবেচনা করবেন লিখিত আদেশ দ্বারা কোনো জনসমাবেশ বা মিছিল নিষিদ্ধ করতে পারবেন। তবে শর্ত থাকে যে, অনুরূপ কোনো নিষেধাজ্ঞা সরকারের অনুমতি ছাড়া ৩০ দিনের বেশি বলবৎ থাকবে না।’ সমাবেশের স্বাধীনতা সংক্রান্ত সংবিধানের ৩৭ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, জনশৃঙ্খলা বা জনস্বাস্থ্যের স্বার্থে আইনের দ্বারা আরোপিত যুক্তিসঙ্গত বাধা নিষেধ-সাপেক্ষে শান্তিপূর্ণভাবে ও নিরস্ত্র অবস্থায় সমবেত হওয়ার এবং জনসভা ও শোভাযাত্রায় যোগদান করার অধিকার প্রত্যেক নাগরিকের থাকবে।
অ্যাডভোকেট আবদুল মোমেন চৌধুরী বলেন, অধ্যাদেশের সেকশন ২৯ সংবিধানের ৩৭ অনুচ্ছেদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এটি নাগরিক মৌলিক অধিকারের পরিপন্থি। সংবিধান বলছে, আইনের দ্বারা আরোপিত যুক্তিসঙ্গত বাধা নিষেধ-সাপেক্ষে সমাবেশ করার কথা। আর অধ্যাদেশে পুলিশ কমিশনারকে দেয়া হয়েছে নিষিদ্ধ করার ক্ষমতা। দু’টি ভিন্ন জিনিস। তাই এটি সাংঘর্ষিক।
শুনানিতে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ৩৭ অনুচ্ছেদ অনুসারে এটা (সভা-সমাবেশ) নিয়ন্ত্রিত অধিকার। আইনের দ্বারা আরোপিত বিধি-নিষেধ সাপেক্ষে। এটি কোনো চূড়ান্ত ক্ষমতা নয়। সংবিধানের ২১ অনুচ্ছেদ অনুসারে, সংবিধান ও আইন মান্য করা, শৃঙ্খলা রক্ষা করা, নাগরিক দায়িত্ব পালন করা এবং জাতীয় সম্পত্তি রক্ষা করা প্রত্যেক নাগরিকের কর্তব্য। তিনি বলেন, শৃঙ্খলা রক্ষা করবে পুলিশ। অধ্যাদেশের ২৯ সেকশন হচ্ছে শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে।
আদালত তখন বলেন, আবেদনকারী বলতে চাইছেন, ২৯ সেকশনে পুলিশকে বেশি ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। জবাবে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, না। বেশি ক্ষমতা দেয়া হয়নি। জনশৃঙ্খলা বা জনস্বাস্থ্যের স্বার্থে ঢাকায় নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়। যেমন মহানগরের বাইরে ১৪৪ ধারা দেয়া হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।