পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে উদ্দেশ করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ব্যক্তিগত পর্যায়ে আক্রমণ করবেন না। সাবধান! ব্যক্তিগত আক্রমণ করলে সামাল দিতে পারবেন না। কে কিভাবে বিদেশে টাকা পাচার করেছেন, বাড়ি করেছেন দেশের সব মানুষ জানে। গতকাল রোববার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। এর আগে গত শনিবার ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে বিএনপির মহাসচিবকে উদ্দেশে করে ওবায়দুল কাদের বলেছিলেন, ‘বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর টাকার বস্তার ওপর শুয়ে আছেন। ফখরুল এখন চাঙা হয়ে গেছেন। টাকা পাচ্ছেন তো। টাকারে টাকা! আরব আমিরাতের টাকা, দুবাইয়ের টাকা। এই তো এল টাকা। ফখরুল মহাখুশি।’
ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্যের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, কার কোথায় কত বাড়িঘর আছে। কত টাকা সরিয়েছেন। কীভাবে সরিয়েছেন। কীভাবে নিয়ে গেছেন। সব এই দেশের মানুষ জানে এবং তা প্রকাশিত হবে।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নিজের রাজনীতি সম্পর্কে বলেন, আমরা নিজের উপার্জনের টাকা পৈতৃক সম্পত্তি বিক্রি করে রাজনীতি করি। দ্য ইজ ভেরি আনফরচুনেট। আমরা এমনটা আশা করি না যে এত বড় রাজনৈতিক দলের (আওয়ামী লীগ) একজন সাধারণ সম্পাদক তার মুখ থেকে এ ধরনের অশালীন বক্তব্য আসবে। ওবায়দুল কাদের মন্তব্য রাজনৈতিক শিষ্টাচার বহিভূত অবিহিত করে ক্ষোভ প্রকাশ করে মির্জা ফখরুল বলেন, আমাকে তিনি ব্যক্তিগতভাবে আক্রমণ করেছেন। সে আক্রমণে তিনি বলেছেন আমরা নাকি দুবাই থেকে টাকা পাই। আর আমি নাকি টাকার ওপর শুয়ে আছি। আমি ওবায়দুল কাদেরকে এটুকু বলতে চাই অযথা বেশি ঘাটাবেন না। ঘাটাতে গেলে কেঁচো বের হয়ে আসবে। আপনারা কী করেন, না করেন, গোটা বাংলাদেশের মানুষ জানে। কীভাবে অর্থ উপার্জন করেন সবাই জানে। তিনি আরো বলেন, আমরা আমাদের পৈতৃক সম্পত্তি বিক্রি করে রাজনীতি করি। আমরা কারও পয়সায় রাজনীতি করি না। আমাদের দলের নেতা-কর্মীরা চাঁদা দিয়ে প্রতিটি সমাবেশ করছেন। এটাই হচ্ছে আমাদের (বিএনপি) বৈশিষ্ট্য। আমরা কারও কাছ থেকে টাকাপয়সা নিয়ে রাজনীতি করি না। আপনারা কী করেন, এটা বাংলাদেশ সৃষ্টি হওয়ার পর থেকে সবাই জানে এবং দেখছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আপনারা (ওবায়দুল কাদের ও আওয়ামী লীগের নেতারা) কে কোথায় হাজার হাজার কোটি টাকার বাড়ি করছেন। কে কোথায় ব্যাংকের লোন নিয়ে বিদেশে টাকা পাচার করে দিচ্ছেন। আপনারা কানাডাতে বেগমপাড়া, সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়ায় সেকেন্ড হোম করলেন সব খবর রাখি। কে কয়টা ব্যাংকের মালিক হলেন, কারা আমেরিকাতে কতগুলো বাড়ি করেছেন, আর দেশের মানুষের ৪৩ কোটি টাকা দিয়ে সচিবদের জন্য বাড়ি করছেন। এগুলো মানুষের টাকা। এগুলো দেশের মানুষের করের টাকা। আপনাদের চেহারার দিকে তাকানো যায় না।
২৯ অক্টোবর অনুষ্ঠিত ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে কত লোক হয়েছে, তা দেখতে মির্জা ফখরুলকে আহ্বান জানিয়েছিলেন ওবায়দুল কাদের। এ প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, আপনারা সরকারি গাড়ি-ঘোড়ার সঙ্গে টাকা ব্যবহার করে যে লোকজন নিয়ে এলেন বিশাল নিরাপত্তা বলয়ের মধ্যে, সরকারি জায়গার মধ্যে, সেখানে চেয়ার পর্যন্ত পূরণ করতে পারেননি। ২২ হাজার চেয়ার যদি পূর্ণ না হয়, তাহলে কত লোক হয়েছে, আপনারা রিপোর্ট করুন।
আওয়ামী লীগ সরকার ১৫ বছরের শাসনামলে দেশে অর্থনীতিকে ভাগাড়ে পরিণত করেছে দাবি করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, দেশে দুর্ভিক্ষ চলছে। এটা আমার কথা নয়, খোদ প্রধানমন্ত্রীর কথা।
বিএনপির ওপর সরকারের জুলুম নির্যাতনের চিত্র তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, গায়েবি মামলায় আওয়ামী লীগের নোবেল পুরস্কার পাওয়া উচিত। রাজনীতির অধিকারের কোনো স্পেস নেই। অবৈধ এ সরকারের আমলে সব নষ্ট করে ফেলা হয়েছে। নির্বাচনব্যবস্থা ধ্বংস করেছে আওয়ামী লীগ। জাতি সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, নির্বাচনকালীন ৯০ দিনের তত্ত্বাবধায়ক সরকার থাকবে। এটাকে বাতিল করেছে আওয়ামী লীগ। এখন তারা বলে বেড়ান, এটা তারা বাতিল করেননি, আদালত করেছেন। তিনি আরো বলেন, টিকে থাকার জন্য আওয়ামী লীগ জনগণকে বোকা বানাতে চায়। উন্নয়নের গল্প শোনায়। এত উন্নয়ন করেছেন, তাহলে ভয় পান কেন? কারণ আপনারা ভালো করেই জানেন যে দুর্নীতি করেছেন, তাতে ভোটের মাধ্যমে কোনোদিন ক্ষমতায় আসতে পারবেন না।
নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের এই সংবাদ সম্মেলনের আগে ৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে বিএনপির যৌথ সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভার সিদ্ধান্ত জানিয়ে বিএনপির মহাসচিব বলেন, মহান জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে ৭ নভেম্বর বেলা ২টায় বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে উন্মুক্ত আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। একই দিন সকাল ৬ টায় নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ সারা দেশের দলীয় কার্যালয়গুলোতে দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে। ওই দিন বেলা ১১টায় বিএনপির সিনিয়র নেতারা দলের প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও ফাতিহা পাঠ করবেন। এ ছাড়া জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে ইতিমধ্যে সারা দেশে জেলা ও মহানগরের পোস্টার পাঠানো হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে ক্রোড়পত্র প্রকাশ করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমান, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, বিএনপি নেতা সরাফত আলী সপু, এ বি এম মোশাররফ হোসেন, সুলতানা রহমান, আমিনুল হক, রফিকুল আলম মজনু, যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাহ উদ্দিন টুকু, সাধারণ সম্পাদক মুনায়েম মুন্না প্রমুখ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।