প্রাক্তন প্রেমিকের নির্যাতনের শিকার অভিনেত্রী
মালায়ালাম সিনেমার অভিনেত্রী আনিকা বিক্রমন। প্রাক্তন প্রেমিক অনুপ পিল্লাই তাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করেছেন বলে অভিযোগ
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ও ভিডিও শেয়ারিংয়ের জনপ্রিয় সাইট ইউটিউব। অনেকের দিনের বেশির ভাগ সময় ব্যয় হয় এসব প্ল্যাটফর্মে। ইউটিউবে কন্টেন্ট বানিয়ে আয়ের সুযোগ থাকায় অনেক ইউটিউবার সময় ব্যয় করেন। তবে এখন শুধুমাত্র ইউটিউবের পাশাপাশি তারা ঝুঁকছে ফেসবুকের দিকে। এর কারণ হচ্ছে, ইউটিউবে ভিউ দিয়ে যেভাবে আয় করা যায়, একইভাবে ফেসবুকেও সেই সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। বাংলাদেশে ফেসবুক সবচেয়ে জনপ্রিয় মাধ্যম হওয়ায় ভাল ভাল কন্টেন্ট ক্রিয়েটাররা খ্যাতিও পাচ্ছেন রাতারাতি। অধিকাংশ মানুষ অবসরে আর যোগাযোগের ক্ষেত্রে ফেসবুক বেশি ব্যবহার করে থাকে। রাতারাতি তারকাখ্যাতি এবং নগদ অর্থসহ সব ধরনের বাণিজ্যিক প্রচার-প্রসারে সক্ষম এ মাধ্যম। তবে এর বিপরীত ঘটনাও ঘটছে। বিনোদনের নামে প্ররোচণামূলক আপত্তিকর অশ্লীল ভিডিও ও অপরাধে উদ্বুদ্ধ করে এমন কন্টেন্টও অনেকে আপলোড করেন। বিশ্লেষকদের মতে, একটা গোষ্ঠীর অনৈতিক অর্থ আয়ের সহজলভ্য শিকার হচ্ছে দেশের শিশু কিশোরসহ তরুণ সমাজ। অসংক্য ফেসবুক পেজে অশ্লীল কন্টেন্ট বিস্তার লাভ করেছে। ইউটিউবে থেকে ফেসবুকে ভিউ বেশি হওয়ায় কন্টেন্ট ক্রিয়েটরদের পছন্দের তালিকায় এখন ফেসবুক এগিয়ে। মোটিভেশনাল ভিডিওর নামে বানানো হচ্ছে যৌন উত্তেজক ভিডিও। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে ও আগ্রহের ধরণ বুঝে সাইটগুলো একই ধরনের পোস্ট ব্যবহারকারীদের সামনে আনছে। ফলে ভিডিওগুলোর ভিউ বেশি হচ্ছে এবং আয়ও হচ্ছে। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে অসাধু চক্র অশ্লীল কনটেন্ট ছড়িয়ে দিচ্ছে। পেজ, আইডি ও চ্যানেলে লাইক বা সাবস্ক্রাইব করা না থাকলেও এসব কনটেন্ট সামনে চলে আসে। কনটেন্ট জুড়ে অশ্লীলতা থাকে। কন্টেন্টের শেষদিকে কৌশল হিসেবে সচেতনতামূলক বার্তা দেওয়া হয়। অনেক সময় নিজেরা মোবাইল ফোনে অশ্লীল কথাবার্তা রেকর্ড করে ‘কল রেকর্ড ফাঁস’ বলে চালিয়ে দিচ্ছে। অবৈধ স¤পর্কের গল্প বানিয়ে তা রেকর্ড করেও পোস্ট করা হয়। ভিডিওর ওপর যৌন উত্তেজক বিভিন্ন ছবি রাখা হয়, যাতে ব্যবহারকারী ভিডিওটি দেখতে আকর্ষণ বোধ করে। অর্থ উপার্জনের আশায় একশ্রেণির অসাধু ব্যক্তি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও ভিডিও শেয়ারিং সাইটে এসব অশ্লীল ও অশোভন কনটেন্ট ছড়িয়ে দিচ্ছে। শর্ট ফিল্ম, নাটক, কৌতুক, কল রেকর্ড এবং বিভিন্ন কথোপকথনের চ্যাটিংয়ের নামে যৌন উত্তেজক কনটেন্ট ছড়ানো হচ্ছে। সাইটগুলো সংশ্লিষ্টদের নতুন করে ভাবিয়ে তুলছে। মিডিয়া কন্টেন্ট বিশ্লেষকরা বলছেন, টাকা আয়ের উদ্দেশ্যে বানানো এসব ভিডিও মূলত বিভিন্ন অপরাধ, দ্বন্দ্ব, মাদক ও যৌনতা কেন্দ্রিক হয়ে থাকে। এতে দ্রুত ভিউ বাড়ে এসব অনলাইন ফ্ল্যাটর্মের। বর্তমানে ফেসবুক, ইউটিউবের পাশাপাশি এখন ইমু, টিকটক, লাইকি, চ্যাটসহ বিভিন্ন ওয়েব সাইটগুলোতে নগ্ন-অর্ধনগ্ন এমনকি কোনো কোনো সাইটে ৩ থেকে ৪ মিনিটের পর্নো ভিডিও ক্লিপও চলছে নানা মোড়কে। এছাড়াও কন্টেন্ট দেখে অনেকেই সহজলভ্য আয়ের লোভে বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ছে। ফেসবুক ও ইউটিউবের এই ভার্চুয়াল ভাইরাসের থাবায় হুমকির মুখে পড়ছে যুবসমাজ।
সংশ্লিষ্টরা জানান, বাংলাদেশে ফেসবুক, ইউটিউব, টিকটক ও ইনস্টাগ্রাম সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয়। শুরুতে নিখাদ বিনোদন মাধ্যম হিসাবে সাইটগুলোর সঙ্গে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা পরিচিত হয়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ব্যবহারকারীদের বড় একটি অংশ আয়ের মাধ্যম হিসাবে সাইটগুলো বেছে নেয়। বেশি অর্থ আয়ের নেশায় তৈরি করে অশ্লীল ভিডিও। কৌতূহলীরাও ভিডিওগুলো দেখেন। সচেতন ফেসবুক ব্যবহারকারীদের মতে, ভিডিও সুবিধা চালু হওয়ার পর থেকে এই প্ল্যাটফর্মটি সামাজিক যোগাযোগের চেয়ে ভিডিও দেখায় বেশি সময় ব্যয় করছেন তারা। কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাসহ বয়স্ক, এমনকি শিশুরা- যাদের ফেসবুক আইডি নেই, তারাও পরিবারের বড়দের মোবাইল থেকে এসব ভিডিও দেখছেন। ভিডিও অপশনে ধারাবাহিকভাবে গান, সিনেমা, বিভিন্ন ঘটনা থেকে শুরু করে খুন, হাইজ্যাক ও পর্নো সবই স্ক্রিনে আসতে থাকে। দেখা যায়, কেউ আগ্রহী না হলেও এমন কন্টেন্ট সামনে চলে আসে। জনপ্রিয়তার শীর্ষে থাকা এই মাধ্যমের এমন কন্টেন্টের কারণে সামাজিক মূল্যবোধের অবনতির আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা।
এদিকে, বেশ কয়েকে বছর ধরেই মূলধারার গণমাধ্যম ছাপিয়ে আলোচনায় অল্টারনেটিভ মাধ্যম হয়ে উঠেছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো। হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ নিয়ে যখন দেশের মূলধারার গণমাধ্যম দর্শক ও পাঠক স্বল্পতায় ভুগছে, তখন ফেসবুক কিংবা ইউটিউবের মতো মাধ্যমের এক বা দুই মিনিটের একটা কন্টেন্ট কয়েক লাখ দর্শক দেখছে। আবার দিন শেষে এসব মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া বিষয়ই মূলধারার গণমাধ্যমের শিরোনাম হচ্ছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।