Inqilab Logo

শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বরিশালে ৫ নভেম্বর বিএনপি’র বিভাগীয় সমাবেশ ঘিরে নানামুখি তৎপড়তা স্থান চুড়ান্ত হয়নি এখনো

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৩০ অক্টোবর, ২০২২, ৫:০৪ পিএম

বরিশাল বিভাগীয় মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে অনেকদিন পরে বরিশাল বিএনপি অফিস নেতা-কর্মীতে মুখর হলেও সবার মধ্যেই এখনো অনেক অনিশ্চয়তা কাজ করছে। দক্ষিণাঞ্চলের অন্য জেলা ও উপজেলা পর্যায়েও এ মহাসমাবেশকে সফল করতে নানামুখি প্রস্তুতি চলছে। ইউনিয়ন থেকে গ্রাম পর্যায়েও কর্মীদের সাথে যোগাযোগ স্থাপন হয়েছে জেলা ও উপজেলা নেতৃবৃন্দের। এ মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করেই রাজধানীতে বসে এলাকায় দল পরিচালনাকারী নেতৃবৃন্দের বেশীরভাগই ইতোমধ্যে ফিরে এসে মহাসমাবেশে যোগদানের সব কর্ম পরিকল্পনা প্রনয়ন করছেন।

আগামী শণিবারের এ মহাসমাবশের দিন ও আগের দিন বরিশালে সড়ক পরিবহন ধর্মঘট আহবান করা হয়েছে ইতোমধ্যে । যা আজকালের মধ্যে সমগ্র দক্ষিণাঞ্চলেও ছড়িয়ে দেয়ার সম্ভবনা রয়েছে। নৌ ধর্মঘট আহবানেরও গুঞ্জন রয়েছে। এমনকি ভোলা ও বরিশালের মধ্যবর্তি তেতুলিয়া নদীতে সরকারী ফেরি সার্ভিস সহ নৌকায় যাত্রী পারাপার বন্ধের অঘোষিত পদক্ষেপ নেয়া কথাও শোনা যাচ্ছে। ফলে নদ-নদী নির্ভর দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা থেকে বরিশাল মহানগরীর সমাবেশ স্থলে পৌছান দুরুহ হলেও নেতা-কর্মীদের কতটা আটকানো যাবে তা সময়ই বলতে পারবে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল। তবে যে কোন রাজনৈতিক কর্মসূচীতে এধরনের বাধা বিপত্তি বিরোধী দলের প্রতি জন সমর্থন বৃদ্ধিতেই সহায়ক হয় বলে মনে করছেন মহলটি।
এদিকে আগামী শণিবার বরিশালে মহাসমাবেশের স্থান চুড়ান্ত হয়নি এখনো। বিএনপি’র পক্ষ থেকে নগরীর বঙ্গবন্ধু উদ্যান বা বেল পার্কে সমাবেশের অনুমোদন চাওয়া হলেও প্রশাসন থেকে ফজলুল হক এভেনিউ বা আউটার স্টেডিয়ামকে বেছে নেয়ার অনুরোধ জানান হয়েছে। কিন্তু বিএনপি নেতৃবৃন্দ এখনো বেল পার্ককেই প্রথম পছন্দ হিসেবে বিবেচনায় রেখেই প্রশাসনের ওপর চাপ বৃদ্ধি করছেন বলে জানা গেছে। তবে মঙ্গলবারের মধ্যেই স্থান নির্বাচন চুড়ান্ত করে প্রচারনায় নামতে চাচ্ছে বিএনপি
এদিকে শণিবারের এ মহাসমাবেশকে ঘিরে পুলিশ নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে কোন হয়রানী মূলক আচরন করে কিনা সে দিকেও লক্ষ্য রাখছে দলটি। সে বিবেচনায় যেসব নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে কোন ধরনের হুলিয়া বা রাজনৈতিক মামলায় জামিনের বাইরে আছেন, তাদের কর্মকান্ডে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করা হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন নাম প্রখাশে অনিচ্ছুক একাধিক নেতৃবৃন্দ। তবে পুলিশের দায়িত্বশীল সূত্র থেকে আইন অনুযায়ী কাজ করার কথা বলা হয়েছে। অপরদিকে আইনÑশৃংখলা বাহিনীর পাশাপাশি শাষক দলের পক্ষ থেকে এ মহাসমাবেশ প্রতিহত করতে পরিবহন ধর্মঘট ছাড়াও শাষক দলের পক্ষ থেকে রাজনৈতিক পদক্ষেপের বাইরে শক্তি প্রয়োগের মত পরিস্থিতি তৈরী করা হয় কিনা সে বিষয়েও লক্ষ রাখছে বিএনপি। তবে অঅওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, ‘বিরোধী দলের কোন কর্মসূচীকে আমরা দলীয়ভাবে প্রতিহত বা বাধাগ্রস্থ করছি না’। বিএনপি যদি কোন অরাজক পরিস্থিতি তৈরী করে, তবে তা আইনÑশৃংখলা বাহিনী নিশ্চই প্রতিহত করবে বলে জানিয়েছে আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্র।
এদিকে রাজধানী ঢাকা সহ দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা উপজেলা থেকে মহাসমাবেশকে ঘিরে অবরোধÑধর্মঘটের আগেই বরিশালে অবস্থানের লক্ষ্যে বৃহস্পতিবার থেকেই মহানগরীর সব হোটেল বুকিং শেষ হয়ে গেছে। নগরীর শতাধিক আবাসিক হোটেলে ৩ নভেম্বর থেকে কোন কক্ষ খালি নেই। এছাড়া অত্মীয়Ñবন্ধুদের বাড়ীতেও বহু নেতা-কর্মী অবস্থান নিয়ে মহাসমাবেশে যোগ দেবন বলেও জানা গেছে।
শনিবারের মহাসমাবেশকে ঘিরে ইতোমধ্যে ঢাকায় অবস্থানকারী বিএনপি’র অনেক মৌসুমী নেতৃবৃন্দও বরিশালে পৌছতে শুরু করেছেন। তাদের অনেকেই যে যার মত করে গনমাধ্যমের সাথেও কথা বলছেন।
তবে এসব কিছু ছাপিয়ে দেশের ৫ম বিভাগীয় সদরে কেমন হবে প্রধান বিরোধী দলের মহাসমাবেশ, তা পারিস্কার হতে শুরু করবে ১ নভেম্বর থেকেই। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহলের মতে, যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ করে বরিশাল মহানগরীকে সারা দেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করা ছাড়া এ মহাসমাবেশকে ব্যাহত করতে খুলনার মত ন্যক্কারজনক পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হবে কিনা তা নির্ভর করবে শাষক দলের স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের সিদ্ধান্তের ওপরই।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ