পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
এম এ মতিন, শ্রীপুর (গাজীপুর) থেকে : ইনকিলাব সম্পাদক ও বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের সভাপতি এ এম এম বাহাউদ্দীন বলেছেন, মাদরাসার শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা অনেক প্রসার লাভ করেছে। এত প্রতিকূলতার মাঝেও আলিয়া মাদরাসার ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা প্রায় ৮০ লক্ষাধিক। শিক্ষক আছে প্রায় ৩ লক্ষাধিক এবং ৮০ লক্ষাধিক ছাত্র ছাত্রীর মধ্যে ভবিষ্যত মাওলানা প্রায় ৩৫ লক্ষ ছাত্র-ছাত্রী। ইসলামী শিক্ষা ও মাদরাসা শিক্ষার ওপর অনেক দিক দিয়ে ষড়যন্ত্র চলছে, মিথ্যাচার চলছে। আলহাজ্ব জালাল উদ্দিন আকন্দের সভাপতিত্বে গতকাল সোমবার সকাল ১০টায় শ্রীপুর ভাংনাহাটি কামিল মাদরাসায় ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি আরও বলেন, মনে করা হচ্ছে সারা মুসলিম দুনিয়া একটা অধঃপতনের দিকে চলছে। কিন্তু মুসলিমদের শক্তি সর্বত্রই অনেক বেড়ে যাচ্ছে। আজকে যদি তুরস্কের প্রতি দেখেন তুরস্ক এবং রাশিয়া মিলে নব্য অটোমান সাম্রাজ্য গড়ার চিন্তা করছে। তারা এটা প্রতিষ্ঠার জন্য প্র্যাক্টিক্যাল ওয়ার্ক শুরু করেছে। সিরিয়ার বিদ্রোহ হচ্ছে সেখানে তুরস্ক জমি ভাগাভাগি করে নিচ্ছে। ইউরোপের যা জমি আছে তার চেয়ে রাশিয়ার জমি অনেক বেশি আছে। তারা এই জমিগুলো দখল করে নিয়েছে। রাশিয়াতে ১৩টি রাষ্ট্র উজবেকিস্তান, কাজাখস্তানসহ সবগুলো মিলে আজারবাইজান সবই অটোমানের অধীনে ছিল। আগামী দিনে মুসলমান সা¤্রাজ্য বেড়েই যাবে। যারা মনে করছেন মধ্যপ্রাচ্য ভেঙ্গে খানখান হয়ে গেছে তা আসলে সত্য নয় বরং মুসলমানদের শক্তি দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং আরও এদিক সেদিক হয়ে আরও সীমানা বাড়তেছে। মুসলিম দুনিয়া শক্তিশালী থাকলে আমরাও শক্তিশালী থাকব। কারও দাদাগিরি এখানে কাজ হবে না। দাদাদের চিন্তা চেতনা এখানে কোন কাজে আসবে না।
ড. মুহাম্মদ আহসান উল্লাহ, ভিসি, ইসলামী আরবী বিশ্ববিদ্যালয় তিনি ঈদে মিলাদুন্নবী উদযাপন উপলক্ষে উক্ত অনুষ্ঠানে বলেন, ইসলামী আরবী বিশ্ববিদ্যালয় ১০০ বছরের আন্দোলনের ফসল। ইসলামী মনা শিক্ষকরা একটি ইসলামী আরবী বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য যুগ যুগ ধরে আন্দোলন করেছিলেন। মাননীয় প্রধান মন্ত্রীর সদিচ্ছায় ও মাননীয় শিক্ষামন্ত্রীর সহায়তায় ইসলামী আরবী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে। হযরত মুহাম্মদ সা. এর নবুওয়ত লাভের আগের সময়কে আইয়ামে জাহিলিয়্যাতের যুগ বলা হত। যারা লেখাপড়া জানে না তাদেরকেই জাহেল বলা হত। এটা ৫০০ বছর বা ৫৪০ বছর আগের কথা। আমরা গবেষণা করে দেখেছি, তারা কি কারণে এত অজ্ঞ ও অন্ধকার যুগের সৃষ্টি করেছে। তাদের স্বাভাবিক জীবন যাপন করার জন্য সব কিছুই ছিল। শুধুমাত্র কোরআনের জ্ঞান না থাকায় তারা এ অজ্ঞ যুগে ছিল। সেই সময়ের লেখকের লেখা এত ভাল ছিল, যা আধুনিক যুগের লেখকও তা লেখতে পারেনি। আরব দেশের দেশীয় সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য বুঝার জন্য আইয়ামে জাহিলিয়াতের যুগের কবিতা উপলব্ধি করতে হবে।
মাওলানা শাব্বির আহম্মেদ মমতাজী, মহাসচিব, জমিয়াতুল মোদার্রেছীন তার নিজ প্রতিষ্ঠানে ঈদে মিলাদুন্নবী মাহফিলে তিনি বলেন, আমাদের নবী মুহাম্মদ (সা.) জন্মগ্রহণ না করিলে এই পৃথিবী এখনও অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে থাকত। এমনকি কোন মানুষ বা প্রাণীই জন্ম নিত না। ১০০ বছর আন্দোলনের ফসল আজকের ইসলামী আরবী বিশ্ববিদ্যালয় যা জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের প্রতিষ্ঠাতা হযরত মাওলানা মরহুম এম এ মান্নান (রহ.) এর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় যেমন ভাবে জমিয়াত গঠন হয়েছে তেমনি ভাবে ইসলামী আরবী বিশ্ববিদ্যালয়েরও আন্দোলনের রূপরেখা তিনিই তৈয়ার করে দিয়েছিলেন। তিনি বর্তমান প্রধানমন্ত্রী মাননীয় শেখ হাসিনা ও শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের প্রতি কৃতজ্ঞতা স্বীকার করেন। তিনি আরও বলেন, ইসলামী আরবী বিশ্ববিদ্যালয় হলেই এ দেশে ইসলামী শিক্ষার বিস্তার ঘটবে না, এ দেশের প্রত্যেকটি এবতেদায়ী মাদরাসাকে প্রাথমিক স্কুলের মত সরকারী করণ ও প্রত্যেক ছাত্র-ছাত্রীকে শতভাগ উপবৃত্তি প্রদানের জন্য প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রীর নিকট আহ্বান জানান। তা না হলে মাদরাসা শিক্ষাকে সামনের দিকে এগিয়ে নেয়া সম্ভব হবে না। তাছাড়া সকল শিক্ষককে জাতীয় করণ করার জন্যও তিনি দাবী জানান। অনুষ্ঠানে ওয়াজ ফরমাইছেন মাওলানা তোফাজ্জল হোসেন ভৈরবী।
দোয়া পরিচালনা করেন মমতাজীয়া দরবার শরীফের পীরজাদা আলহাজ্ব এস এম রুহুল আমীন, অতিথি হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন, মাদরাসা বিভাগের ডিজি মো: বিল্লাল হোসেন, ইসলামী আরবী বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিদর্শক অধ্যাপক ড. মো: ইলিয়াছ সিদ্দিকী, রেজিষ্ট্রার মো: ফাহাদ আহমেদ মোমতাজীসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ, সুপার ও সাধারণ শিক্ষকগণ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।