পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
মালেক মল্লিক : মাসদার হোসেন মামলার শুনানিকালে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ বলেছেন, অধস্তন আদালতের বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলা ও আচরণে সঙ্গে বিচার বিভাগের স্বাধীনতার বিষয়টি জড়িত। কথায় আছে যার হাতে খড়গ থাকে তার কথায় চলতে হবে। বিচার বিভাগের স্বাধীনতার প্রশ্নে কোন আপোষ করা হবে না। আমরা তো সরকারের প্রতিদ্বন্দ্বী নই। আমরা চাই রাষ্ট্রের একটি অঙ্গের সঙ্গে আরেকটি অঙ্গের ভারসাম্য বজায় থাকুক। এই বিভাগটিও ভারসাম্য বজায় রেখে চলুক। প্রেসিডেন্টকে (রাষ্ট্রপতি) ভুল বোঝানো হয়েছে। এরকম করলে সরকার চলবে?। গতকাল সোমবার প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের আট বিচারপতির বেঞ্চ থেকে এ মন্তব্য আসে। একই সঙ্গে বিচারকদের বিধিমালা প্রণয়ন করতে সরকারকে এক মাস সময় বেঁধে দেন আপিল বিভাগ। ২০১৭ সালের ১৫ জানুয়ারির মধ্যে প্রকাশের অধস্তন আদালতের বিচারকদের শৃঙ্খলা সংক্রান্ত বিধিমালার গেজেট প্রকাশ করতে হবে। এর আগে গত রোববার অধস্তন আদালতের বিচারকগণের জন্য সুপ্রিম কোর্ট প্রস্তাবিত আচরণ ও শৃঙ্খলা বিধির খসড়া গেজেটে প্রকাশ করার প্রয়োজনীয়তা নাই সংক্রান্ত পত্র জারি করেছে আইন মন্ত্রণালয়। মাসদার হোসেন মামলার রায়ের সাত নম্বর নির্দেশনায় বিচারকদের শৃঙ্খলা বিধিমালার কথা বলা হয়েছে।
গত ১ ডিসেম্বর গেজেট প্রকাশে এক সপ্তাহ সময় দেয়া হয়েছিলো। কিন্তু তা পালন না করে গত বৃহস্পতিবার আবারও সময় চান অ্যাটর্নি জেনারেল। এরপর আপিল বিভাগ আইন মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের সচিব আবু সালেহ শেখ মো. জহিরুল হক এবং লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের সচিব মোহাম্মদ শহিদুল হককে ১২ ডিসেম্বর আদালতে হাজির করতে নির্দেশ দেন।
গতকাল আদালতের নির্দেশ মোতাবেক কার্যদিবস শুরুর আগেই তারা আদালতে হাজির হন। কার্যক্রম শুরুর পর অ্যাটর্নি জেনারেল আইন মন্ত্রণালয়ের চিঠি পাওয়ার কথা আদালতকে জানান এবং তা পরে শোনান। অ্যাটর্নি জেনারেলের উদ্দেশে আপিল বিভাগ বলেন, সর্বোচ্চ আদালতের আদেশ বাস্তবায়নের বিষয়টি আপনি অবহিত করবেন। গেজেট নিয়ে আসার জন্য আমরা দুই সচিবকে ডেকেছি। কেন তারা গেজেট নিয়ে আসতে পারেননি সেই ব্যাখ্যা তাদেরকে দিতে হবে। এ পর্যায়ে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, আইন মন্ত্রণালয় একটি চিঠি দিয়েছে। রেজিস্ট্রার জেনারেলকেও এর অনুলিপি দেয়া হয়েছে। প্রধান বিচারপতি বলেন, এ ব্যাপারে আমরা কিছুই জানি না। আপিল বিভাগ আরো বলেন, আমরা তো খসড়া বিধিমালার কোন প্রস্তাব দেইনি। নিম্ন আদালতের বিচারকদের চাকরি বিধিমালা ১৪ বছরেও বাস্তবায়ন করেননি। সরকার শৃঙ্খলা বিধিমালার খসড়া সুপ্রিম কোর্টে পাঠিয়েছে। ওই খসড়ার সঙ্গে সরকারি কর্মচারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার যে বিধিমালা রয়েছে তার সঙ্গে কোন পার্থক্য নেই। সরকার যে খসড়া পাঠিয়েছিলো মাসদার হোসেন মামলার রায়ের আলোকে ওই খসড়া সংশোধন করে দিয়েছি মাত্র। আমরা তো কোন প্রস্তাব পাঠায়নি। রাষ্ট্রপতিকে ভুল বোঝানো হয়েছে। এরকম করলে সরকার চলবে?
আপিল আদালত বলেন, আমরা কাদব না হাসব বুঝতে পারছি না? মন্ত্রণালয়ে কি কোন মন্ত্রী নেই? সরকারের ৮০/৯০ ভাগ মামলা এই আদালতে। আমরা তো সরকারের প্রতিদ্বন্দ্বী নই। আমরা চাই রাষ্ট্রের একটি অঙ্গের সঙ্গে আরেকটি অঙ্গের ভারসাম্য বজায় থাকুক। এই বিভাগটিও ভারসাম্য বজায় রেখে চলুক। মন্ত্রণালয়ের যারা কর্মকর্তা রয়েছেন তাদের সামান্যতম জ্ঞান থাকলে এ ধরনের চিঠি করতেন না। এরপর আদালত দুই সচিবকে ডাকেন। দুজনই ডায়াসের সামনে গিয়ে দাড়ান। শুরুতে আইন মন্ত্রণালয়ের ড্রাফটিং উইংয়ের সচিব মো. শহীদুল হক বলেন, আইনের খসড়া প্রণয়ন এই বিভাগ থেকে করা হয়। আইন ও বিচার বিভাগের সচিব আবু সালেহ শেখ মো. জহিরুল হক বলেন, আপনাদের সংশোধিত খসড়া রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানো হয়েছে। এরপর যে সিদ্ধান্ত এসেছে তার ভিত্তিতে এই প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
আপিল আদালত বলেন, মাসদার হোসেন মামলার রায়ের সাত নম্বর নির্দেশনায় এই শৃঙ্খলা বিধিমালার কথা বলা হয়েছে। সংসদীয় সরকার পদ্ধতিতে প্রেসিডেন্ট হচ্ছে নামমাত্র। আপনারা যেটি পাঠাবানে তিনি সেটিই করবেন। প্রধানমন্ত্রী ও প্রধান বিচারপতির নিয়োগ ছাড়া প্রেসিডেন্ট আর কিছু করার আছে কি? আইন সচিব বলেন, সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে যেভাবে নির্দেশনা আছে সেটিই পালন করা হয়। প্রধান বিচারপতি বলেন, আপনি তো বিচার বিভাগের লোক। আপনাকে ওই পদে রাখা হয়েছে সমন্বয় করার জন্য। কিন্ত আপনি ভুল করছেন, আপনাকে সরিয়ে দেয়া উচিত। এরপর অ্যাটর্নি জেনারেলের উদ্দেশে প্রধান বিচারপতি বলেন, মাসদার হোসেন মামলার রায় আপনারা মেনে নিয়েছেন। রায়ের ৮০ ভাগ বাস্তবায়ন করা হয়েছে। এখন শৃঙ্খলা বিধিমালার গেজেট জারি করে নিয়ে আসুন। এজন্য ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত সময় দেয়া হল।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।