বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে ফরিদপুরে পাকতে শুরু করা ক্ষেতের আমনের ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ঝড়ো বাতাসে জেলা সদরসহ বিভিন্ন উপজেলায় প্রায় কয়েকশ’ গাছপালা উপড়ে গেছে। এতে প্রায় অসংখ্য বাড়িঘরের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া ঢাকা-ফরিদপুর-বরিশাল এবং ঢাকা-ফরিদপুর-খুলনা- মহাসড়কে গাছ ভেঙে পড়ায় দীর্ঘ ৯ ঘণ্টা যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
এদিকে, ঝড়ের কারণে দীর্ঘ সময় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকায় বিভিন্ন স্থানে জনগণ চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। জেলার ভাঙ্গা ও আলফাডাঙ্গায় রোববার (২৩ অক্টোবর) ভোর থেকে বিদ্যুৎ নেই বলে দাবি করেছেন সেখানকার বাসিন্দারা। জেলার অন্যান্য স্থানেও সোমবার (২৪ অক্টোবর) বিকেল ও রাত থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। তবে মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর) দুপুরের পর শহরের কিছু স্থানে বিদ্যুৎ সরবরাহ পুনরায় স্বাভাবিক হয়েছে।
জানা গেছে, ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে জেলায় পাকতে শুরু হওয়া ক্ষেতের আমন ধানের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে। এ মৌসুমে জেলার নয়টি উপজেলায় প্রায় ৬৫ হাজার হেক্টর জমিতে রোপা আমনের চাষাবাদ হয়েছে। এছাড়া পেঁয়াজ দানা, মুড়িকাটা পেঁয়াজ ও শীতকালীন সবজির ক্ষতি হয়েছে।
সালথার কৃষক আজিজুল শেখ (৩৫) গণমাধ্যম কে বলেন, আমি ক্ষেতে দানা ও মুড়িকাটা পেঁয়াজ বপন করেছিলাম। ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে টানা বৃষ্টির কারণে সেই ফসল ডুবে সব শেষ হয়ে গেছে। এছাড়া আমন ধানের ক্ষেতের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
ফরিদপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. জিয়াউল হক গণমাধ্যম কে বলেন, ক্ষয়ক্ষতির প্রকৃত পরিমাণ এখনও জানা যায়নি। তবে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক ও ফসলের ক্ষতির পরিমাণ নির্ণয়ের জন্য কাজ চলছে।
এদিকে, ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের সময় গাছপালা ভেঙে পড়ে ঢাকা-খুলনা ও ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের ফরিদপুর অংশের অন্তত ২৪-২৫টি স্থানে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ৯ ঘণ্টা পর মঙ্গলবার সকাল ৭টা থেকে পুনরায় যান চলাচল শুরু হয়। এছাড়া মহাসড়কের পাশে বিলবোর্ড ভেঙে পড়ায় বাস যাত্রীরা আহত হন।
ভাঙ্গার বাসিন্দা হাজী আঃ মান্নান বলেন, সিত্রাং শুরুর আগে গতকাল সোমবার সকাল থেকে ভাঙ্গায় বিদ্যুৎ সরবরাহে চরম বিঘ্ন ঘটছে। বিকেল থেকে একনাগাড়ে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে উপজেলাবাসীর।
জেলার আলফাডাঙ্গা উপজেলায় কলেজপাড়ায় গাছ উপড়ে সাত-আটটি বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তবে হতাহতের কোনো ঘটনা ঘটেনি। ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে চরভদ্রাসনেও কাঁচা বাড়িঘর বিনষ্টের খবর পাওয়া গেছে। এছাড়া আলফাডাঙ্গায় বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে পড়ার খবর পাওয়া গেছে।
ওয়েস্টজোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (ওজোপাডিকো) ফরিদপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী মোজাম্মেল হক গণমাধ্যম কে বলেন, ঝড়ে বিভিন্নস্থানে বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। অনেক স্থানে গ্রাহকের বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে গেছে। অনেক স্থানে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে ট্রান্সমিটারে সমস্যা হয়েছে। এসব কারণে কিছু স্থানে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ ছিল। তবে দুপুরের পর থেকে পরিস্থিতির উন্নতি ঘটতে থাকে।
ফরিদপুরের পল্লী বিদ্যুতের জেনারেল ম্যানেজার আবুল হাসান বলেন, গতকাল সোমবার বিকেলের পর ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের কারণে জেলার বিভিন্নস্থানে বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইনের প্রায় শতাধিক খুঁটি ভেঙে গেছে। এছাড়া ১৪৪টি স্পটে বিদ্যুৎ সরবরাহের তার ছিঁড়ে গেছে। এ কারণে বিভিন্ন স্থানে বিদ্যুৎ সরবরাহ বিঘ্ন ঘটে। তবে আমাদের কর্মীরা পরিস্থিতির উন্নতি ঘটিয়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক করতে কাজ করছেন। তবে গত ২৩ অক্টোবর ভোর থেকে একটানা বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকার বিষয়টি সঠিক নয়।
এদিকে, ঘূর্ণিঝড়ে ফরিদপুরে পদ্মা তীর রক্ষা বাঁধে কোনো ক্ষয়ক্ষতি নেই বলে জানিয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ফরিদপুর কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী পার্থ প্রতিম সাহা
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।