Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

নোয়াখালীতে দেড় হাজার বাড়িঘর বিধ্বস্ত, মেঘনায় বিলীন আশ্রয়ণকেন্দ্র, শিশুর মৃত্যু

অনলাইন ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৫ অক্টোবর, ২০২২, ৫:৩০ পিএম

পূর্ব মধ্যবঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন পশ্চিম মধ্যবঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘সিত্রাং’ এর আঘাতে নোয়াখালীর ৩টি উপকূলীয় উপজেলাসহ মোট ৫টি উপজেলায় অন্তত দেড় হাজার বাড়ি-ঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে অতিরিক্ত জোয়ারে মেঘনা নদীতে হেলে পড়েছে একটি আশ্রয়ণ কেন্দ্র। গাছ পড়ে মারা গেছে সানজিদা আফ্রিদী নামের এক বছরের এক শিশু। গত দুই দিনে উপকূলের নি¤œাঞ্চল প্লাবিত সহ ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে দূর্ভোগে পড়েছেন প্রায় ৩লাখ ৯৬হাজার মানুষ। তবে মঙ্গলবার বিকেল থেকে প্লাবিত এলাকাগুলো থেকে পানি নামতে শুরু করেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

জানা গেছে, ঘূর্ণিঝড় ‘সিত্রাং’ এর কারনে গত রোববার গভীর রাত থেকে জেলার বিভিন্ন স্থানে থেমে থেমে বৃষ্টি শুরু হয়। সোমবার ভোর থেকে বৃষ্টি বাড়তে থাকে, বিকাল থেকে বৃষ্টির সাথে শুরু হয় ঝড়ো বাতাস। প্রবল বাতাসে জেলার হাতিয়া, সুবর্ণচর, কোম্পানীগঞ্জ, কবিরহাট ও সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় কাঁচা গাছ-পালা ও বসত ঘর বিধ্বস্ত হয়। ভেঙে পড়ে বিদ্যুতের খুঁটি, এতে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ, এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত (বিকাল ৪টা) জেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হয়নি। এতে মোবাইলসহ বিভিন্ন ডিভাইস বন্ধ হয়ে যায়। বিপর্যয় দেখা দিয়েছে মোবাইল নেটওয়ার্কে।

সংশ্লিষ্ট প্রশাসন ও সরেজমিনে ঘুরে জানা গেছে, ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং এর প্রভাবে মঙ্গলবার সকাল থেকে মেঘনা নদীতে স্বাভাবিকের তুলনায় জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পায়। এতে হাতিয়ার নিঝুমদ্বীপের ৯টি ওয়ার্ড, নলচিরা, হরনী, চানন্দী, চরকিং, চরঈশ^র, বুড়িরচর, তমরদ্দি ও সোনাদিয়া ইউনিয়নের সহ বেশ কয়েকটি নিন্মাঞ্চল জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়। এতে পানি বন্ধি হয়ে পড়ে ওই এলাকাগুলোর প্রায় লাখ লাখ মানুষ। বেশি বিপাকে পড়েছেন বেঁড়ি বাধের বাইরে থাকা পরিবারগুলোর লোকজন।

এদিকে সোমবার রাতের প্রচন্ড জোয়ারে ভেঙে হেলে পড়েছে হরনী ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের মুক্তি সমাজ আশ্রয়ণ কেন্দ্রটি। স্থানীয়রা বলেন, গত ১৪ বছর আগে সরকারিভাবে হরনী ৬নং ওয়ার্ডে ৩২টি পরিবারের জন্য মুক্তি সমাজে ৩২টি ঘর তৈরি করে দেওয়া হয়। এ পরিবারসহ আশপাশের শিশুদের শিক্ষা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে ২০০৮ সালে নির্মাণ করা হয় দ্বিতলা বিশিষ্ট একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় কাম আশ্রয়ণ প্রকল্প। বিভিন্ন সময় নদী ভাঙনে বিলিন হয়ে বসতি ছেড়ে ছিলো ১০টি পরিবার। সবশেষ সোমবার রাতে প্রচন্ড বাসাত ও জোয়ারের আঘাতে হেলে পড়ে আশ্রয়ণ কেন্দ্রটি, যার বেশির ভাগ অংশ ইতোমধ্যে মেঘনা নদীতে বিলিন হয়ে গেছে। এতে করে আগামিতে কোন প্রাকৃতিক দূর্যোগে নিরাপদ স্থানের অভাব সহ শিক্ষা বঞ্চিত হবে প্রায় তিন শতাধিক শিশু শিক্ষার্থী।

অপরদিকে, রাতে সুবর্ণচর উপজেলার চরবাটা ইউনিয়নের পূর্ব চরবাটা গ্রামের হাবিবিয়া এলাকায় বসত ঘরের ওপর গাছ উপড়ে পড়ে এক বছর বয়সী শিশু সানজিদা আফ্রিদী নিহত, তার মা সহ আরও দুইজন আহত হয়। নিহত সানজিদা আফ্রিদী ওই এলাকার এডভোকেট আবদুল্যার ছেলে।

জেলা ত্রাণ ও পুর্ণবাসন কর্মকর্তা মো. জাহিদ হাসান খান জানান, প্রাথমিকভাবে ২৭০টি কাঁচা ঘর বিধ্বস্ত ও ১ হাজার ৩৩টি ঘর আংশিক বিধ্বস্ত হওয়ার প্রাথমিক খবর তাঁরা পেয়েছেন। সামগ্রিক ক্ষতির পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রস্তুত করতে আরও ২/৩দিন সময় লাগবে বলেও জানান তিনি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ