ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) এর গুরুত্ব ও তাৎপর্য
মুসলিম ঈদোৎসবগুলির মধ্যে ঈদুল ফেতর ও ঈদুল আজহা- এই দুই ঈদকে প্রধান উৎসব বলে খোদ
অধ্যাপক হাসান আবদুল কাইয়ূম
আল্লাহ্ জাল্লা শানহু কালাম মজীদে ইরশাদ করেন :
“কুনতুম্ খায়রা উম্মাতিন্ উখরিজাত লিননাসি তা’মুরূনা বিল মা’রূফি ওয়া তান্হাওনা ‘আনিল মুনকার’।”
তোমরাই সর্বোত্তম উম্মত, তোমাদের উদ্ভব ঘটেছে মানুষের জন্য, তোমরা সৎকাজের আদেশ করো ও অসৎ কাজ করতে বারণ করো। (সূরা আলে ইমরান : আয়াত ১১০)।
উপরিউক্ত আয়াতে কারীমায় উম্মাতে মুহম্মদী বা মুসলিম উম্মাহ্র শ্রেষ্ঠত্ব ও মাহাত্ম্য ঘোষণা করার পর এই উম্মতের আবির্ভাব যে ঘটানো হয়েছে বিশ্ব মানবের কল্যাণের জন্য এবং উম্মাতের বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, তারা মানুষকে সৎকাজ করতে আদেশ করে, সত্য-সুন্দর পথে চলতে, কল্যাণের পথে চলতে মানুষকে উদ্বুদ্ধ করে এবং যা অন্যায়, যা অসৎ, যা অকল্যাণের তা করতে মানুষকে নিষেধ করে; অসৎ, অসুন্দর, কাজ করা থেকে মানুষ যাতে বিরত থাকে সে জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে।
এ কথা সর্বজনবিদিত যে, সারওয়ারে কায়েনাত, নূরে মুজাস্সাম সাইয়্যেদুল মুরসালীন, রহমাতুল্লিল আলামীন প্রিয়নবী হযরত মুহম্মদ মুস্তাফা আহমাদ মুজতবা সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম সর্বশেষ নবী হিসেবে পৃথিবীতে আবির্ভূত হন। তার মাধ্যমেই ইসলাম পরিপূর্ণতা লাভ করে। তার পূর্বে যতো সব নবী-রাসূল পৃথিবীতে এসেছেন তাদের কেউ এসেছেন পথহারা নিজ কওমকে সৎপথের দিশা দিতে, কেউবা এসেছেন একটা বিশেষ গোষ্ঠী বা এলাকার অন্ধকারাচ্ছন্ন মানুষকে হিদায়াত দান করতে। কিন্তু প্রিয়নবী হযরত মুহম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এলেন সমগ্র বিশ্বজগতের জন্য, তিনি এলেন সমগ্র মানবজাতির জন্য। আল্লাহ জাল্লা শানহু প্রিয়নবী (সা.)-কে সম্বোধন করে ইরশাদ করেন : (হে রাসূল) আপনি বলুন : হে মানুষ! আমি তোমাদের সবার জন্য সেই আল্লাহর রাসূল যিনি আকাশম-লী ও পৃথিবীর সার্বভৌমত্বের অধিকারী, তিনি ব্যতীত কোনো ইলাহ্ নেই, তিনি জীবিত করেন ও মৃত্যু ঘটান। (সূরা আ’রাফ : আয়াত ১৫৮)। আল্লাহ্ জাল্লা শানহু আরো ইরশাদ করেন : (হে রাসূল), আমি তো আপনাকে সমগ্র মানবজাতির জন্য সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারী রূপে প্রেরণ করেছি। (সূরা সাবা : আয়াত ২৮)।
প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এমন এক সময় পৃথিবীতে আবির্ভূত হলেন যখন সমগ্র পৃথিবী অন্ধকার আর অজ্ঞতার সমুদ্রে রীতিমতো হাবুডুবু খাচ্ছে। সমগ্র পৃথিবীর মানুষ তখন অর্ধম ও ধর্মহীনতার তিমিরে আচ্ছন্ন হয়ে র্শিক, কুফর, অন্ধবিশ্বাস, কুসংস্কার প্রভৃতির বেড়াজালে আবদ্ধ হয়ে, বিতাড়িত শয়তানের খপ্পরে পড়ে তাগুতী কর্মকা-ে নিমগ্ন হয়েছে। মানবিক মূল্যবোধ বলতে কোথাও কিছু নেই, সামাজিক মূল্যবোধের কোনো ধারণা কোথাও নেই, সর্বত্র হানাহানি, কাটাকাটি, সর্বত্র জোর যার মুল্লুক তার অবস্থা বিরাজমান। নারীরা ছিল পণ্যসামগ্রীর মতো, ক্রীতদাস প্রথা চরম আকার ধারণ করেছিল। কুশিদজীবিদের প্রবল দাপটে সাধারণ মানুষ নিঃস্ব অবস্থায় নিপতিত হচ্ছিল, শিক্ষা ব্যবস্থার কোনো সুসংহত কাঠামো ছিল না, কন্যা সন্তান জন্মগ্রহণ করলে খোদ আরব দেশে অনেক পিতা লজ্জা-শরমে সেই কন্যা শিশুকে জীবন্ত কবর দিত, মানবতা বলতে কোথাও কোনো কিছু ছিল না, বৈবাহিক ব্যবস্থায় কোনো নীতিমালা ছিল না, বহুবিবাহ প্রথা এবং রক্ষিতা রাখার প্রথা স্বাভাবিক নিয়মে পরিণত হয়েছিল, আশ্রাফ-আতরাফ তথা অভিজাত শ্রেণী ও অস্পৃশ্য শ্রেণীর বিভাজনে মানবতা ধুঁকে ধুঁকে মরছিল। পৃথিবীকে সেই নাজুক অবস্থা থেকে উদ্ধারের জন্য, সেই অন্ধকারাচ্ছন্ন পৃথিবীটাকে আলোর পথে আনার জন্য, সেই নাজুক অবস্থা থেকে মানবতাকে মুক্ত করার জন্য, আল্লাহর জমিনে আল্লাহর রবুবিয়াত প্রতিষ্ঠিত করার জন্য আল্লাহর মনোনীত একমাত্র দীন আল-ইসলাম কায়েম করার জন্য, তাওহীদ ও রিসালাতের বিজয় পতাকা সমুন্নত রাখার জন্য, একটি সুখী সুন্দর পৃথিবী গড়ার জন্য, একটি সুষম সমাজব্যবস্থা সংস্থাপনের জন্য তিনি পৃথিবীতে তশরীফ আনলেন। যার নূও মোবরক সৃষ্টির মধ্য দিয়ে আল্লাহ জাল্লা শানহু বিশ্বজগৎ সৃষ্টির সূচনা করলেন, যে নূর মোবারক থেকে আল্লাহ জাল্লা শানহু একে একে সৃষ্টির নতুন নতুন জিনিস সৃষ্টি করলেন, মানুষকে খলীফা হিসেবে পৃথিবীতে প্রেরণের বহু পূর্বে, এমনকি প্রথম মানব হযরত আদম (আ.)-এর সৃষ্টিরও বহু পূর্বে যাঁকে নবুওয়াত ও রিসালাত দান করলেন, সেই তিনি মানব সুরতে নূরের অপূর্ব জ্যোতির্ময়তা ধারণ করে সব নবী-রাসূলের শেষে খাতামাতুন্নাবীয়ীন বা নবীগণের সমাপ্তি ঘটিয়ে ভূমিষ্ঠ হলেন। তার পৃথিবীতে আগমনের মধ্য দিয়ে পৃথিবীতে নবী-রাসূল আগমনের পরিসমাপ্তি ঘটলো।
তিনি পৃথিবীকে এমন এক সমাজ ব্যবস্থা দান করলেন যা অনন্য সুন্দর জীবন ব্যবস্থা। যে সমাজ ব্যবস্থার মাধ্যমে শোষণ ও নির্যাতনের সকল পথ রুদ্ধ করে দেয়া হলো, কেউ খাবে আর কেউ খাবে না এই অসমতা ও অন্যায়সমূহ শেকড়শুদ্ধ একেবারে উৎপাটিত করার নীতিমালা স্থিরীকৃত করে দেয়া হলো। বিত্তবানদের একচেটিয়া পুঁজি কুক্ষিগত করার সকল পথ রুদ্ধ করার দিশা দেয়া হলো। আল্লাহ্ জাল্লা শানহু ইরশাদ করেন : আর ওদের (বিত্তবানদের) ধন-সম্পদে ন্যায্য অধিকার রয়েছে প্রার্থী ও বঞ্চিতের। (সূরা যারিয়াত : আয়াত ১৯)।
“ইন্ফাক ফী সাবীলিল্লাহ’ অর্থাৎ আল্লাহর রাস্তায় ব্যয়, সাদাকা, কর্যে হাসানা প্রভৃতির মাধ্যমে, দারিদ্র্য বিমোচনের মাধ্যমে একটি সচ্ছল ও সমতার সমাজব্যবস্থা কায়েম করা হলো। যার ফলে এমন এক পর্যায়ে মুসলিম উম্মাহ্ এসে পৌঁছতে পেরেছিল যখন সমাজে যাকাত নেবার মতো লোক খুঁজে পাওয়া যেত না বরং সমাজে সবাই সাহিবে নিসাব অর্থাৎ যাকাত দেনেওয়ালার সামর্থ্য অর্জন করতে সমর্থ হয়েছিল।
হযরত রাসূলুল্লাহ (সা.) প্রতিষ্ঠিত সমাজ ব্যবস্থায় সহজ-সরল জীবনযাপনের উপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে এবং অপচয় ও বিলাসিতাকে পরিহার করার তাগিদ দেয়া হয়েছে। অপচয়কারীকে শয়তানের ভাই বলা হয়েছে। এই সমাজে ব্যবস্থা মানুষে মানুষে বৈষম্য দূর করে দিয়ে সৌভ্রাতৃত্ব ও সহমর্মিতার সমাজ কায়েমের দিকনিদের্শনা দেয়। এই সমাজ ব্যবস্থায় মানুষ যে একই উৎস থেকে আবির্ভূত হয়েছে সে সত্যটিকে স্মরণ করিয়ে দিয়ে বিশ্বভ্রাতৃত্ব গড়ে তোলার উপর গুরুত্ব আরোপ করে। আল্লাহু জাল্লা শানহু ইরশাদ করেন : হে মানুষ! আমি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছি এক পুরুষ ও এক নারী হতে, পরে তোমাদেরকে বিভক্ত করেছি বিভিন্ন জাতি ও গোত্রে, যাতে তোমরা একে অপরের সঙ্গে পরিচিত হতে পারো। তোমাদের মধ্যে আল্লাহর নিকট সেই ব্যক্তিই অধিক মর্যাদাসম্পন্ন যে তোমাদের মধ্যে অধিক মুত্তাকী। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ সব কিছু জানেন এবং সব খবর রাখেন। (সূরা হুজুরাত : আয়াত ১৩)।
প্রিয়নবী হযরত মুহম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বিদায় হজের ভাষণে বলেন : কোনো অনারবের উপর কোনো আরবের শ্রেষ্ঠত্ব নেই, কোনো আরবের উপর কোনো অনারবের শ্রেষ্ঠত্ব নেই, কোনো কালোর উপর কোনো সাদার শ্রেষ্ঠত্ব নেই, কোনো সাদার উপর কোনো কালোর শ্রেষ্ঠত্ব নেই, সবাই আদম থেকে এবং আদম মাটি থেকে, শ্রেষ্ঠত্বের মাপকাঠি হচ্ছে তাকওয়া।
এই তাকওয়া বা সংযমী জীবনের মধ্যে, এই সাবধানী জীবনের মধ্যেই এই সমাজ ব্যবস্থার মর্মকথা নিহিত রয়েছে। এই সমাজ ব্যবস্থায় ক্রীতদাস প্রথাকে উৎখাত করার সুনির্দিষ্ট নীতিমালা বলবৎ করা হয় এবং ক্রীতদাসকে আযাদ করে দেয়াকে অশেষ সওয়াবের কাজ হিসেবে ঘোষিত হয়।
এক সময় যে হযরত বিলাল (রা:) ক্রীতদাস ছিলেন। তাকে কয়েকগুণ মূল্য দিয়ে হযরত আবু বকর সিদ্দীক (রা:) কিনে নিয়ে আযাদ করে দেন এবং এই হযরত বিলাল (রা.) ইসলামের প্রথম মুয়াযযিন। হযরত আবু বকর (রা.)সহ সমস্ত সাহাবায়ে কিরাম তাকে সাইয়্যেদুনা-আমাদের সরদার সম্ভাষণে অভিহিত করতেন।
নারীরা তাদের যথাযোগ্য মর্যাদা ও অধিকার লাভ করলো। এই সমাজে ব্যবস্থার আওতায়। নারী পিতার সম্পত্তি ওয়ারিশ বলে গণ্য হলো, তেমনি স্বামীর সম্পত্তির উত্তরাধিকারিত্বও লাভ করলো। শুধু তাই নয় প্রিয়নবী (সা:) ঘোষণা করলেন : “মায়ের পায়ের তলে সন্তানের জান্নাত।’ এই সমাজ ব্যবস্থায় মাতা-পিতার হক, সন্তানের হক, স্ত্রীর হক, পরিবারের প্রতিটি সদস্যের হক, সমাজের প্রত্যেক মানুষের হক, শ্রমিকের হক, প্রতিবেশীর হক, ছোটদের হক, বড়দের হক, মানুষের প্রতি মানুষের হক নিশ্চিত করা হলো। প্রিয়নবী (সা.) বললেন : “শ্রমিকের ঘাম শুকানোর আগেই তাঁর ন্যায্য পারিশ্রমিক দিয়ে দাও।” তিনি বললেন, “কেউ পেট পুরে খেলে আর তার প্রতিবেশী অভুক্ত থাকলে সে আমার দলভুক্ত নয়।”
সুদ প্রথা মানুষের উপর একটা মারাত্মক নির্যাতনমূলক প্রথা চালু ছিল। প্রিয়নবী (সা.) সমস্ত প্রকারের সুদকে হারাম ঘোষণা করলেন। কোরআন মজীদে ইরশাদ হয়েছে : “যারা সুদ খায় তারা সেই ব্যক্তিরই ন্যায় দাঁড়াবে যাকে শয়তান স্পর্শ দ্বারা বদ্ধপাগল বানিয়ে তোলে। এটা এজন্য যে, তারা বলে কেনাবেচাতো সুদের মতোই। অথচ আল্লাহ্্ কেনাবেচাকে হালাল করেছেন ও সুদকে করেছেন হারাম।” (সূরা বাকারা : আয়াত ২৭৫)।
নারী-পুরুষ নিয়েই সমাজ। সমাজে শালীনতা বজায় রাখার জন্য এবং শয়তানের প্ররোচনা হতে সমাজকে রক্ষা করার জন্য পর্দা করাকে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। কোরআন মজীদে ইরশাদ হয়েছে : “হে নবী! আপনি আপনার বিবিগণকে, কন্যাগণকে ও মু’মিনদের নারীগণকে বলুন, তারা যেন তাদের চাদরের কিয়দংশ নিজেদের উপর টেনে দেয়। এতে তাদেরকে চেনা সহজতরো হবে, ফলে তাদেরকে উত্ত্যক্ত করা হবে না। আল্লাহ্্ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।” (সূরা আহ্্যাব : আয়াত ৫৯)। নারীদের পর্দা করার ব্যাপারে আরো ইরশাদ হয়েছে : “তোমরা স্বগৃহে অবস্থান করবে এবং প্রাচীন যুগের মতো নিজেদেরকে প্রদর্শন করে বেড়াবে না।” (সূরা আহযাব: আয়াত ৩৩) নর-নারী উভয়ের জন্যই সংযত দৃষ্টি এবং পর্দার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। কোরআন মজীদের ইরশাদ হয়েছে: “(হে রাসূল), মু’মিনদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে সংযত করে এবং তাদের লজ্জাস্থানের হিফাযত করে, এটাই তাদের জন্য উত্তম। ওরা যা করে নিশ্চয়ই আল্লাহ সে বিষয়ে সম্যক অবহিত। মু’মিন নারীদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে সংযত করে ও তাদের লজ্জাস্থানের হিফাযত করে; তারা যেন সাধারণত প্রকাশ থাকে তাছাড়া সৌন্দর্য শোভা প্রদর্শন না করে, তাদের গ্রীবা ও বক্ষদেশ যেন মাথার কাপড় দ্বারা ঢেকে দেয়, তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, পুত্র, স্বামীর পুত্র (সতীন পুত্র), ভাই, ভাতিজা, ভাগ্নে, আপন নারীগণ, তাদের অধীনস্থ দাসী, পুরুষদের মধ্যে যৌন কামনা রহিত পুরুষ এবং নারীদের গোপন অঙ্গ সম্বন্ধে অজ্ঞ বালক ছাড়া কারো নিকট তাদের সৌন্দর্য শোভা প্রকাশ না করে, তারা যেন তাদের গোপন আভরণ প্রকাশের উদ্দেশ্যে সজোরে পদক্ষেপ না করে।” (সূরা নূর : আয়াত ৩০-৩১)।
হযরত রাসূলুল্লাহ (সা.) যে সমাজ ব্যবস্থা প্রবর্তন করলেন তাতে চারের বেশী স্ত্রী গ্রহণ নিষিদ্ধ করা হলো। কোরআন মজীদে ইরশাদ হয়েছে : “তোমাদের পছন্দ মতো দুই, তিন অথবা চার জন্য পর্যন্ত নারীদের বিয়ে করবে আর যদি আশঙ্কা করো যে, সুবিচার করতে পারবে না তবে একজনকে (বিয়ে করবে)” (সূরা নিসা: আয়াত ৩)। নারীদের সম্পত্তিতে উত্তরাধিকার নির্ধারণ করে কোরআন মজীদে ইরশাদ হয়েছে: পিতা-মাতা এবং আত্মীয়স্বজনের পরিত্যক্ত সম্পত্তিতে পুরুষের অংশ আছে এবং পিতা-মাতা ও আত্মীয়স্বজনের পরিত্যক্ত সম্পত্তিতে নারীরও অংশ আছে। (সূরা নিসা: আয়াত ৭)।
স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বনিবনা না হলে সেক্ষেত্রে তালাকের বিধান থাকলেও তালাক কার্যকর না করার জন্য চেষ্টা করার কথাও বলা হয়েছে। কোরআন মজীদে ইরশাদ হয়েছে : ‘তাদের (স্বামী-স্ত্রীর) উভয়ের মধ্যে বিরোধ আশঙ্কা করলে তোমরা তার (স্বামীর) পরিবার হতে একজন এবং ওর (স্ত্রীর) পরিবার হতে একজন সালিশ নিযুক্ত করবে, তারা উভয়েই নিষ্পত্তি চাইলে আল্লাহ্্ তাদের মধ্যে মীমাংসার অনুকূল অবস্থা সৃষ্টি করবেন। (সূরা নিসা : আয়াত ৩৫)। প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন : “একটি জিনিস বিধিসম্মত কিন্তু আল্লাহ্্ পছন্দ করেন না তা হচ্ছে তালাক।”
ইসলাম বিদ্যা অর্জনকে প্রত্যেক মুসলিম নর-নারীর জন্য বাধ্যতামূলক করেছে। প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম যে সমাজ ব্যবস্থা প্রবর্তন করলেন তা আল্লাহর দেয়া সমাজব্যবস্থা। এই সমাজের প্রত্যেকটি মানুষকে আল্লাহর নিকট আত্মসমর্পণকারী হতে হবে। এই সমাজ মুসলিম উম্মাহ্্। বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠায় এই সমাজের মানুষেরা সত্যিকার অবদান রেখেছে এবং রেখে আসছে। ঐক্য ও সংহতির মধ্যদিয়ে, আল্লাহর উপর পূর্ণ তাওয়াক্কুল রাখার মধ্যদিয়ে, কোরআন ও সুন্নাহ্্ অনুযায়ী আমল করার মধ্যদিয়ে, কোরআন ও সুন্নাহ্্ মোতাবেক আখলাক গড়ে তোলার মধ্যদিয়ে মুসলিম উম্মাহ্্ মানব সভ্যতার ইতিহাসে যে অনন্য অবদান রেখেছেন তা সবাই স্বীকার করেন। এটাও স্বীকার করেন যে, ইসলাম ছাড়া বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব নয়, মুক্তির একমাত্র পথ হচ্ছে ইসলাম। কোরআন মজীদে স্পষ্ট ভাষায় মুসলিম উম্মার ঐক্য ও সংহতির নির্দেশ দিয়ে ইরশাদ হয়েছে : আর আল্লাহর রজ্জু (কোরআন ও ইসলাম) সবাই মিলে মজবুত করে আঁকড়ে ধরো এবং পরস্পর বিচ্ছিন্ন হয়ো না। (সূরা আলে ইমরান : আয়াত ১০৩), মু’মিনগণ পরস্পর ভাই ভাই; সুতরাং তোমরা ভ্রাতৃগণের মধ্যে শান্তি স্থাপন করো ও আল্লাহ্্কে ভয় করো যাতে তোমরা অনুগ্রহ পেতে পারো।” (সূরা হুজুরাত : আয়াত ১০)।
প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হিজরত করে মদীনা মুনাওয়ারায় তাশরীফ এনে এখানে মসজিদুন্্ নববীকে কেন্দ্র করে একটি আদর্শ কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত করেন। যে নগররাষ্ট্র ৮/৯ বছরের মধ্যে ইয়ামিন থেকে দামেস্ক পর্যন্ত প্রসারিত হয়। এই রাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি ছিলেন আল্লাহর রাসূল নিজেই। মদীনা মুনাওয়ারায় তশরীফ এনেই তিনি মসজিদুন্্ নববী স্থাপন শেষে একটি ভ্রাতৃসমাজ তথা উখ্্ওয়াত গড়ে তোলেন। রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য সংবিধান রচনা করেন যা চার্টার অব মদীনা বা মদীনার সনদ নামে পরিচিত। এটাই পৃথিবীর ইতিহাসে রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য প্রথম লিখিত শাসনতন্ত্র। এতে মুহাজির, আনসার, ইয়াহুদী ও অন্যান্য ধর্মীয় গোত্রের প্রধানরা সম্মতিসূচক স্বাক্ষর প্রদান করে এবং প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে তাদের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধান হিসেবে গ্রহণ করে। কিন্তু ইয়াহুদীরা এই সংবিধানের শর্ত ভঙ্গ করে এবং মদীনা মুনাওয়ারায় আবদুল্লাহ্্ ইবনে উবায় নামক এক ধূর্ত মুনাফিক সরদারের সাথে আঁতাত করে মক্কার কাফির-মুশরিকদের সাথে জোট বাঁধে। যার ফলে বারবার মদীনা মুনাওয়ারা শত্রু দ্বারা আক্রান্ত হলে প্রিয়নবী (সা.) আল্লাহ্্র নির্দেশে প্রতিরক্ষামূলক সশস্ত্র লড়াইয়ে অবতীর্ণ হন। তাঁর নেতৃত্বে বা নির্দেশে প্রায় ৯৩টি ছোট-বড় যুদ্ধ ও অভিযান পরিচালিত হয়। তিনি যেগুলোতে সিপাহসালার ছিলেন তাকে ‘গাযওয়া’ বলা হয়। এর সংখ্যা প্রায় ২৯টি আর তাঁর নির্দেশে কোনো সাহাবীর নেতৃত্বে যে যুদ্ধাভিযান পরিচালিত হয় সেগুলোকে ‘সারিয়া’ বলা হয়-এর সংখ্যা প্রায় ৬৪টি, সকল যুদ্ধেই ইসলামের বিজয় পতাকা সমুন্নত হয়েছে।
৬৩০ খ্রিস্টাব্দের ২১ রমাদান মক্কা মুকাররমা বিজয় হয়। এই দিন প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বারবার উচ্চারণ করছিলেন : সত্য সমাগত, মিথ্যা দূরীভূত, মিথ্যা দূর হবারই। (সূরা বনী ইসরাঈল : আয়াত ৮১)। ৬৩২ খ্রিস্টাব্দের ৯ যিলহজ রফিকুল আলার কাছে বলে যাবার মাত্র ৯০ দিন পূর্বে হায়াতুন্্ নবী হযরত রাসূলুল্লাহ্্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রায় এক লক্ষ চল্লিশ হাজার সাহাবায়ে কেরামের সমাবেশে বিদায় হজের দীর্ঘ ভাষণের এক পর্যায় বললেন : হে লোক সকল! তোমরা শোনো, আইয়ামে জাহিলিয়াতের সমস্ত কুসংস্কার, অন্ধবিশ্বাস, অনাচার, শিরক, কুফর আজ আমার পায়ের তলায় দলিত হলো। তিনি বললেন : কোনো কর্তিতনাসা কাফ্রী গোলামকেও যদি তোমাদের শাসনকর্তা (আমীর) নিযুক্ত করা হয় এবং সে আল্লাহ্্র কিতাব অনুযায়ী তোমাদের পরিচালনার দায়িত্ব পালন করে তোমরা অবশ্য তাঁর অনুগত থাকবে, তাঁর আদেশ মেনে চলবে। তিনি বললেন : আমার পরে আর কোনো নবী আসবে না, তোমাদের পরে আর কোনো উম্মত হবে না। সাবধান দীনের (ধর্মের) ব্যাপারে বাড়াবাড়ি করো না, ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি করার কারণে তোমাদের পূর্ববর্তী বহু কওম ধ্বংস হয়ে গেছে। তিনি তাঁর সেই দীর্ঘ ভাষণে সেই বিশাল জনতাকে উদ্দেশ্য করে বলেন : আমি তোমাদের জন্য রেখে যাচ্ছি আল্লাহ্্র কিতাব ও তাঁর রাসূলের সুন্নাহ্। তোমরা যদি তা দৃঢ়তার সঙ্গে অবলম্বন করো তাহলে তোমরা কখনো পথভ্রষ্ট হবে না। তিনি বললেন : সাবধান! অনেক কিছুকেই তোমরা ক্ষুদ্র মনে করো অথচ শয়তান সেগুলোর মাধ্যমে তোমাদের সর্বনাশ সাধন করে, এ ব্যাপারে তোমরা সতর্ক থেকো। (বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ, ইব্নে মাজা শরীফ, তিরমিযী শরীফ)।
বিদায় হজের সেই দীর্ঘ ভাষণ শেষে তিনি সমবেত সকলকে আঁসু ভরা চোখে আল-বিদা জানান। তখন যে ওহীখানি নাযিল হয় তা প্রণিধানযোগ্য। আল্লাহ্্ জাল্লা শানহু ইরশাদ করেন : আজ তোমাদের জন্য তোমাদের দীনকে পূর্ণাঙ্গা করলাম, আমার নিয়ামত তোমাদের প্রতি পরিপূর্ণ করে দিলাম এবং সানন্দ অনুমোদন দান করলাম তোমাদের দীন ইসলামকে। (সূরা মায়িদা : আয়াত ৩)। তিনি রফীকুল আলা আল্লাহ্্ জাল্লা শানহুর একান্ত সান্নিধ্যে চলে যাবার পর থেকে ইসলামের বিজয় অব্যাহত থেকেছে। টমাস কার্লাইলের ভাষায় বলা যায় :
“These Arabs, The Man Mohamet and that a century is it not as if a spark had fallen only one spark on a world of what seemed black unnoticeable sand. But Lo! The sand proves explosive powder blazes heaven high from Delhi to Granada”
-একটি জাতি যার নাম আরব জাতি, একজন মানুষ যাঁর নাম হয়রত মুহম্মদ (সা.) আর সেই একটি শতাব্দী, এটা কি তাই নয়, যেন একটি অগ্নি স্ফুলিংগ, শুধুমাত্র একটি অগ্নি স্ফুলিংগ পতিত হলো এমন একটি ভূখ-ে যা দেখতে ছিল কালো অজ্ঞাত বালুকা বিন্দু। কিন্তু দেখো! দেখো! সেই বালুকা বারুদের মতো বিস্ফোরিত হলো আকাশ সমান আলো ছড়িয়ে আর সেই আলোয় আলোকিত হয়ে গেল দিল্লী থেকে গ্রানাডা পর্যন্ত।” মুসলিম উম্মাহর সুদীর্ঘ সোনালী ইতিহাস রয়েছে। আজকের মুসলিম উম্মাহ্্ পৃথিবীর সমগ্র জনসংখ্যার এক-চতুর্থাংশ। আজকের বিজ্ঞানের এই যে বিপুল উন্নতি এটারও প্রেক্ষাপটে মুসলিম মনীষীদের অবদান রয়েছে তা সর্বজনবিদিত। চেম্বার্স এনসাইক্লোপেডিয়াতে তো বলাই হয়েছে :
“ÒIt was the Prophet who laid the foundation of that vast edifice of enlightment and civilization which has adorned the world since his time. The Muslims were commanded by the Quran to say, O God, increase my knowledge and heard by Muhammad tell them, Knowedge is the birth-right of the faithful, take it wherever you find it. Such were the seeds which grew into trees whose branches spread to Bagdad, cicily, Egypt and spain and whose fruits are enjoyed to this day by modern Europe.”
-“মহানবী (সা)-ই জ্ঞানালোকের ও সভ্যতার বিশাল অট্টালিকার বুনিয়াদ স্থাপন করেন যা তাঁর আমল থেকেই পৃথিবীকে সুশোভিত করে আসছে। আল-কোরআনে মুসলিমদেরকে যে কথাটি বলতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে তা হচ্ছে : “হে রব! আমার জ্ঞান বৃদ্ধি করো। হযরত মুহম্মদ (সা.) কে তাঁরা বলতে শুনেছেন : জ্ঞান হচ্ছে মু’মিনের জন্মগত অধিকার, যেখানেই তোমরা তা দেখবে গ্রহণ করবে।” এমনটাই ছিল বীজগুলো যার থেকে উৎপন্ন হলো বহু বৃক্ষ আর যার শাখা-প্রশাখা ছড়িয়ে পড়লো বাগদাদে, সিসিলিতে, মিসরে, স্পেনে আর যার ফলগুলো ভোগ করছে আজকের দিনে আধুনিক ইউরোপ।” মুসলিম উম্মাহ্্ আজ ইয়াহুদী-নাসারা আর মুশ্রিক জোট দ্বারা আক্রান্ত। এই আক্রমণ বিভিন্ন সময় হয়েছে। ১০৯৯ খ্রিস্টাব্দ থেকে ১২৯১ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত ক্রসেড চালিয়েও মুসলিম শক্তিকে ধ্বংস করতে পারেনি সম্মিলিত নাসারা-ইয়াহুদী। বারবার মুসলিম শক্তিকে দমন করবার চেষ্টা চলে আসছে। মুসলিম উম্মাহ্্র মধ্যে ভাঙ্গন সৃষ্টি করার চেষ্টাও অব্যাহতভাবে চলে আসছে। মুনাফিক আগেও ছিল, এখনো যে নেই তা বলা যাবে না। কিছু কাপুরুষ কিংবা নাসারা পরাশক্তির দাপট দেখে ভীত সন্ত্রস্ত কিছু বাদশাহ্্ বা সুলতান যে আজও নেই তাও বলা যাবে না। কিন্তু ওরা থাকবেই তবুও বৃহৎ মুসলিম উম্মাহ্্র ঐক্য ও সংহতির সামনে কোনো তাগুতী শক্তি টিকে থাকেনি বা থাকতে পারে না। কোরআন মজীদে ইরশাদ হয়েছে : “তোমাদের মধ্যে এমন এক দল হোক যারা কল্যাণের দিকে আহ্বান করবে এবং সৎকাজের নির্দেশ দেবে ও অসৎকাজে নিষেধ করবে। এরাই সফলকাম, তোমরা তাদের মতো হয়ো না যারা তাদের কাছে স্পষ্ট নির্দেশন আসার পর বিচ্ছিন্ন হয়েছে ও নিজেদের মধ্যে মতান্তর সৃষ্টি করেছে।” (সূরা আলে ইমরান : আয়াত ১০৪-১০৫)।
মুসলিম উম্মাহ্্র শত্রু-মিত্র আগেও ছিল আজো আছে। আজকে যখন তাগুতী শক্তির শ্যেনদৃষ্টি মুসলিম উম্মাহ্্র উপর বিকট রূপ ধারণ করেছে, মুসলিম দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব, শান্তি, সমৃদ্ধি, সম্পদ হরণ করার অপচেষ্টা চলছে, মুসলিম দেশে হানা দিয়ে মুসলিমের পবিত্র খুন দ্বারা মাটি সিক্ত করা হচ্ছে-তখন মুসলিম উম্মাহ্্ নিষ্ক্রিয় হয়ে ‘চাচা আপন প্রাণ বাঁচা’ প্রবাদটির মতো বসে থাকতে পারে না। কোরআন মজীদে ইরশাদ হয়েছে : যুদ্ধেও (কিতালের) অনুমতি দেয়া হলো তাদেরকে যারা আক্রান্ত হয়েছে, কারণ তাদের প্রতি অত্যাচার করা হয়েছে। আল্লাহ্্ নিশ্চয়ই তাদেরকে সাহায্য করতে সম্যক সক্ষম।” (সূরা হজ : ৩৯), যারা তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ (কিতাল) করে তোমরাও আল্লাহর রাস্তায় তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করো কিন্তু সীমালংঘন করো না। (সূরা বাকারা : ১৯০)।
প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রবর্তিত সমাজ ব্যবস্থায় সন্ত্রাসের কোনো স্থান নেই বরং সন্ত্রাস দমন করার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করার, “জিহাদ ফি সাবীলিল্লাহ্্’ অর্থাৎ আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করার নির্দেশ আছে। এ জিহাদ শয়তানকে, সন্ত্রাসকে, অপশক্তিকে, আগ্রাসী শক্তিকে সমূলে উৎপাটন করে শান্তি স্থাপনের জন্য। সুখী-সমৃদ্ধ পৃথিবী গড়ার জন্য। আল্লাহ্্ জাল্লা শানহু ইরশাদ করেন : “আর তোমরা তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে থাকবে যতক্ষণ না ফিত্না দূরীভূত হয়।” (সূরা বাকারা : আয়াত ১৯৩)।
মুসলিম উম্মাহ্কে আল্লাহ্্ জাল্লা শানহু শ্রেষ্ঠত্বের মর্যাদায় অধিষ্ঠিত করেছেন, এই মর্যাদাকে রক্ষা করার জন্য সকলের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার মধ্যেই এর সাফল্য নিহিত রয়েছে।
লেখক: মুফাস্সিরে কোরআন গবেষক, সাবেক পরিচালক, ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।