পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
আওয়ামী লীগ বারবার দেশের ধ্বংস ও ক্ষতি সাধন করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, বলা হচ্ছে দেশে নাকি বিদ্যুৎ উৎপাদনে স্বয়ংসম্পন্ন। কিন্তু মানুষ বিদ্যুৎ পাচ্ছে না। সরকার বলছে তাদের নাকি এখন পয়সা নেই। তাহলে ৪২ বিলিয়ন ডলার রিজার্ভ গেলো কোথায়? আসলে তারা দেশের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক কাঠামো ধ্বংস করেছে। এভাবে গোটা দেশকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে গেছে। গতকাল সোমবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের (জেডআরএফ) ২৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। সংগঠনের প্রেসিডেন্ট তারেক রহমান ভার্চুয়ালি বক্তব্য রাখেন।
ব্যবসায়ীদের অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি উপদেষ্টার বক্তব্য তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা, উনি আবার আমার শ্রদ্ধেয় শিক্ষক তৌফিক-ই- ইলাহী চৌধুরী, বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আমাদের শিক্ষক ছিলেন। পত্রিকায় দেখলাম, তিনি খুব কষ্ট করে বলেছেন, পয়সাই নেই, বিদ্যুৎ দেব কোত্থেকে? কিছুদিন আগে উনারা বললেন, পয়সার কোনো অভাব নেই। রিজার্ভে ৪২ বিলিয়ন ডলার আছে। গেল কোথায়? উনি এখন দুঃখ করে বলেছেন, আমি বিদ্যুৎ আর দিনে দিতে পারব না, রাতে বিদ্যুৎ দেব। পত্রিকায় হেডিং করেছে অসহায় উপদেষ্টা, কার্টুনও দিয়েছে।
বিদ্যুৎ খাত নিয়ে তিনি বলেন, এতদিন ওরা (সরকার) কত লম্বা লম্বা কথা বলেছে যে, একশভাগ বিদ্যুৎ দিয়ে দিয়েছি, ২৫ হাজার মেগাওয়াট উৎপাদন করছি। প্রয়োজন ১৫ হাজার মেগাওয়াট, আরও ১০ হাজার মেগাওয়াট থাকে। অথচ এই কিছুক্ষণ আগে দেখলেন না, লোড শেডিং, বিদ্যুৎ চলে গেল। এই হচ্ছে তাদের উন্নয়ন!
আওয়ামী লীগের শাসনে দেশে গণতন্ত্র হারিয়ে গেছে দাবি করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আজকে আমরা একটা যুদ্ধে, যুদ্ধে এজন্যই যেটা আমাদের সব কিছুকে ফিরে পাওয়ার লড়াই। আমাদের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে ফিরে পাওয়ার লড়াই, আমাদের গণতন্ত্রকে ফিরে পাওয়ার লড়াই, আমাদের অস্তিত্বকে ফিরে পাওয়ার লড়াই আমরা আবার শুরু করেছি। সেজন্য আমাদের নেতা তারেক রহমান সাহেব বলেছেন, টেক ব্যাক বাংলাদেশ। টেক ব্যাক বাংলাদেশের অর্থ কী? অর্থ হচ্ছে যে, আমার সেই বাংলাদেশ ফিরে পেতে চাই যে, বাংলাদেশের স্বপ্ন আমরা ১৯৭১ সালে দেখেছিলাম। একটা গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ, অধিকার রক্ষার বাংলাদেশ-সেই বাংলাদেশকে আমরা ফিরে পেতে চাই।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় গেছে, তখনই দুর্নীতিতে দেশ ছেয়ে গেছে। ১৯৭২ সাল থেকে তারা শুরু করেছে। এটা বললে পরে তাদের গায়ে জ্বালা করে, উত্তর দেয় না কোনো। তখনও একই ঘটনা ঘটেছিলো- তখনও দুর্নীতি, চুরি-ডাকাতি, এমনকি বাচ্চাদের জন্য দুধ এসেছিল বিদেশ থেকে, সেই দুধ পর্যন্ত চুরি করেছে, কম্বল চুরি করেছে। আজকেও একই অবস্থা তৈরি করেছে। যেদিকে তাকান, চুরি ছাড়া এখানে কিচ্ছু হয় না। যত মেগা প্রজেক্ট দেখেন, সবের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে চুরি। এভাবে গোটা দেশকে তারা ধবংস করে দিয়েছে।
জনগণের ভোট পাবে না আঁচ করে আওয়ামী লীগ তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি বাতিল করেছে দাবি করেন মির্জা ফখরুল বলেন, এরা২০০৯ সাল থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত আসতেই দেখেছে যে এত খারাপ কাজ করতে শুরু করেছে, এখন তো আর জনগণ ভোট দেবে না। তখন তারা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধানটাই বাতিল করে দিল। সেই কাজে সাহায্য করলো বিচারপতি খায়রুল হক। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে ১৯৯৫ সালে আওয়ামী লীগের আন্দোলনের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ওই সময়ে আওয়ামী লীগ ১৭৩ দিন হরতাল করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের জন্য আন্দোলন করেছে। তাদের সঙ্গে সেদিন কিন্তু জাতীয় পার্টিও ছিল, জামায়াতে ইসলামীও ছিল।
এই অবস্থার পরিবর্তনে বিএনপি আন্দোলনে রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে চাই, আমাদের নেতা তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনতে চাই, আমরা আমাদের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে লক্ষ লক্ষ মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার চাই, আমরা সত্যিকার অর্থেই একটা সুখী-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে চাই।
আলোচনা সভার আগে ফাউন্ডেশনের কার্যক্রমের উপর একটি তথ্যচিত্র উপস্থাপন করা হয়। ১৯৯৯ সালের ১৮ অক্টোবর তারেক রহমান শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের স্মৃতি রক্ষায় জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করেন। ‘একটু উদ্যোগ, একটু চেষ্টা এনে দেবে স্বচ্ছলতা, দেশে আসবে স্বনির্ভরতা’ এই স্লোগানে গরিব-অসহায় মানুষদের সহায়তা করছে এই ফাউন্ডেশন। জিয়াউর রহমানের জীবন, তার দর্শন তুলে ধরে গবেষণা কর্ম পরিচালনা, পুরস্কার প্রবর্তন এবং মেধাবী শিক্ষার্থীদের মধ্যে বৃত্তি চালুর প্রস্তাব করেন বিএনপি মহাসচিব।
ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ফরহাদ হালিম ডোনারের সভাপতিত্বে সদস্য আবুল হাসনাত মো. শামীমের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমান উল্লাহ আমান, সিরাজউদ্দিন আহমেদ, ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের রিয়াজুল ইসলাম রিজু, সিনিয়র সাংবাদিক মোস্তফা কামাল মজুমদার, কৃষিবিদ প্রফেসর এজেএম ফজলুল হক ভুঁইয়া, যুবদলের সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, মোনায়েম মুন্না, জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের পারভেজ রেজা কাকন বক্তব্য রাখেন।###
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।