Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪, ৩১ বৈশাখ ১৪৩১, ০৫ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

নাকুগাঁও স্থলবন্দর নব দিগন্তের সূচনা

এস. কে সাত্তার, ঝিনাইগাতী (শেরপুর) থেকে | প্রকাশের সময় : ২৫ অক্টোবর, ২০২২, ১২:০০ এএম

শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে নাকুগাঁও স্থলবন্দর নব দিগন্তের সুচনা করেছে। আমদানি-রফতানিকারকদের ব্যবসায় নতুন পথ দেখাচ্ছে। বন্দর চালুতে স্থানীয়রাতো বটেই দেশের অন্যান্য স্থানের ব্যবসায়ীরাও লাভবান হচ্ছেন বলে জানান ব্যবসায়ীরা। শ্রমিক নেতারা বলছেন, বন্দরের কর্মকান্ডকে ঘিরে হাজারো শ্রমিকের সৃষ্টি হয়েছে কর্মসংস্থানের পথ। স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, প্রশাসন এবং স্থানীয় সূত্র জানায়, ৩৩ বছর বন্ধের পর ১৯৯৮ সালে নাকুগাঁও স্থবন্দরটি ইমিগ্রেশন চেকপোস্টসহ স্থল শুল্কবন্দর হিসেবে চালু হয়। পর থেকেই বন্দর দিয়ে কয়লা, পাথর আমদানি এবং সিমেন্ট, শাড়ি, জুস, মশারির কাপড়, জুটসহ নানা বৈধপণ্য আমদানি-রফতানি বাণিজ্যের প্রসার ঘটে। এছাড়া বন্দর দিয়ে বাংলা-ভুটান ট্রানজিট রুটসহ ত্রিপক্ষীয় বাণিজ্যের উজ্জ্বল সম্ভাবনা দেখা দেয়। কিন্তু অপ্রশস্থ রাস্তা, অবকাঠামোগত উন্নয়নের অভাবে বন্দরের সম্ভাবনা কমে যায়। সাবেক কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী এমপি বন্দরের গুরুত্ব বিবেচনায় পূর্ণাঙ্গ স্থলবন্দর হিসেবে গড়ে তোলার কার্যক্রম শুরু করেন। ২০০৯ সালের ১২ ডিসেম্বর তৎকালীন নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান বন্দরটি পরিদর্শন করে পূর্ণাঙ্গ স্থলবন্দর হিসেবে ঘোষণা দেন। প্রায় ১৪শ’ শতাংশ জমির ওপর ১৬ কোটি ১৯ লাখ টাকা ব্যয়ে স্থল বন্দরের অবকাঠামো নির্মাণ করা হয়। সড়ক ও জনপথ বিভাগের অধীনে ২৩৯ কোটি টাকা ব্যয়ে নাকুগাঁও থেকে নকলা উপজেলা পর্যন্ত সাড়ে ২৯ কিলোমিটার সড়ক উন্নয়নের কাজ করা হয়। ২০১৫ সালের ১৮ জুন নাকুগাঁও স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ নিজস্ব পরিচালনায় কার্যক্রম শুরু করেন। নাকুগাঁও স্থলবন্দর দিয়ে আমদানির অনুমতি থাকা পণ্যগুলো হচ্ছে, গবাদিপশু, মাছের পোনা, তাজা ফলমূল, বিভিন্ন প্রজাতির গাছ, বীজ, গম, পাথর, কয়লা, রাসায়নিক সার, চায়না ক্লে, কাঠ, টিম্বার, চুনাপাথর, পেঁয়াজ, মরিচ, রসুন, আদা, বলক্লে ও কোয়ার্টজ। শ্রমিক রুহুল আমীন বলেন, ব্যবসায়ী ও শ্রমিকদের শুভাগ্য নাকুগাঁও স্থলবন্দর। বন্দর দিয়ে পাথর আমদানি হচ্ছে বেশি। কাজ পেয়ে শত শত শ্রমিক বেজায় খুশি। স্থলবন্দর শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. আলম বলেন, ইউনিয়নভুক্ত শ্রমিক রয়েছেন ৮শ’ জন। পাথর ভাঙা দৈনিক মজুরিতে রয়েছে ৩ হাজার শ্রমিক। নিয়মিতই কাজ করছেন। মেশিনপত্র পরিচালনার জন্য প্রায় ৩শ’ শ্রমিক রয়েছেন। শ্রমিক নেতা বলেন, ইউনিয়নভুক্ত লোড-আনলোড শ্রমিকরা প্রতিদিন ৭০০-১০০০ টাকা মজুরি পান। অন্যরা ৪০০-৫০০ টাকা মজুরি পান। তিনি বলেন, বাড়ির পাশে স্থলবন্দর। শ্রমিকরা কর্মক্ষেত্র খুঁজে পেয়েছেন। নচেৎ ঢাকাসহ বিভিন্নস্থানে গিয়ে তাদের কাজ করতে হতো। নাকুগাঁও স্থলবন্দর আমদানি-রফতানিকারক সমিতির সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান মুকুল বলেন, বন্দর চালু হওয়ায় স্থানীয়রাসহ দেশের বিভিন্ন্ স্থানের ব্যবসায়ীরা ব্যবসায় লাভবান হচ্ছেন। বন্দর চালু না হলে কর্মহীন থাকতে হতো। তিনি জানান, ভারতের আসাম রাজ্য থেকে শুঁটকি মাছ, খৈল, সুপারি এবং পশুখাদ্যও আমদানি করতে চান। ছাড়পত্র পেতে লিখিত আবেদন চলতি মাসে জাতীয় রাজস্ব বিভাগে পাঠানো হয়েছে। বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুন্সির কাছেও ইতিবাচক সাড়া পাওয়া গেলেও এখনও লিখিতভাবে জানানো হয়নি। বন্দররের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, বন্দর অনুমোদিত ১৯টি পণ্য আমদানি ও নিষিদ্ধ ব্যতীত পণ্য রফতানি করা যাবে। গত তিন মাসে বন্দর থেকে সরকারের ৮৯ লাখ ৪৮ হাজার টাকা রাজস্ব আয় হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ